আনাজের দামে মধ্যবিত্তের হাত পুড়ছে। ক্রমশ আকাশছোঁয়া পেট্রল-ডিজেলের দাম। এবার যেন আমজনতার ধৈর্য্যচ্যুতি ঘটিয়ে দাম বাড়লো রান্নার গ্যাসেরও। চলতি মাসের প্রথমেই এক দফা দাম বেড়েছিল রান্নার গ্যাসের। এবার আবার গৃহস্থের ভর্তুকিহীন ১৪.২ কেজি ও বাণিজ্যিক ১৯ কেজি, দু’ধরনের গ্যাসেরই দাম বাড়লো।
রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাগুলির রেট চার্ট অনুযায়ী আজ থেকে কোলকাতায় ১৪.২ কেজির সিলিন্ডারের দাম বাড়ছে আরও ৫০ টাকা। ফলে দু’দফায় মোট দাম বাড়লো ১০০ টাকা। এখন থেকে সাধারণের ভর্তুকিহীন সিলিন্ডারের দাম পড়বে ৭২০.৫০ টাকা। ১৯ কেজি সিলিন্ডারের দাম আজ ৩৬ টাকা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৩৮৭.৫০ টাকায়। ফলে মোট দু’দফায় দাম বাড়লো মোট ৯১.৫০ টাকা। ফলে বাণিজ্যিক কাজকর্মের খরচও বাড়বে। রান্নার গ্যাসের দাম এত কম সময়ে এতটা বাড়ায় ক্ষুব্ধ সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে ব্যবসায়ী মহল ও ছোট দোকানদারেরা। ফলে মুখ পড়েছে মোদী সরকারের। করোনার জেরে আর্থিক সঙ্কট যখন চরমে, বন্ধ বহু মানুষের রুজি-রোজগার, শিল্প যখন ঝাঁপ ফেলছে তখন আমজনতার বেঁচে থাকার লড়াই আরও তীব্র হল।
উচ্চবিত্তদের সিলিন্ডার প্রতি ভর্তুকি ছাঁটাই করলেও, নিম্নবিত্ত ও মধ্যবিত্তদের ক্ষেত্রে তা চালু রেখেছে মোদী সরকার। ইউপিএ আমলের চেয়ে ভর্তুকি যুক্ত সিলিন্ডারের দাম ধাপে ধাপে বৃদ্ধি করে কেন্দ্রীয় সরকার যে ভর্তুকি ছাঁটাইয়ের দিকেই তা স্পষ্ট।
করোনা আবহে এই বছর আগস্ট মাস থেকে ঘোষণা বন্ধ করে দেওয়া হয় ভর্তুকির সিলিন্ডারের দাম ও ভর্তুকির অঙ্ক। আগের নিয়মানুযায়ী কর বাদে ভর্তুকিহীন সিলিন্ডারের দামের চেয়ে ভর্তুকির সিলিন্ডারের দামের ফারাকটাই দিত ভর্তুকি হিসেবে গ্রাহকের খাতায় দিত সরকার। কিন্তু আগস্ট থেকে ভর্তুকির সিলিন্ডারের দাম ঘোষণা না করায় সেই হিসেবে গ্রাহকের প্রাপ্য অঙ্কের পরিমাণ জানা যাচ্ছিল না। পাওয়া যাচ্ছিল না। তেল মন্ত্রক সূত্রেও জানা যায় গত বছরের জুলাইয়ের তুলনায় এ বছরের জুলাইয়ে ভর্তুকিযুক্ত সিলিন্ডারের দাম প্রায় ১০০ টাকা বেড়েছে। অতএব, একজন গ্রাহকের ভর্তুকির টাকা গত এক বছরে প্রায় ১০০ টাকা কমেছে। এ বার কি তবে ভর্তুকি তুলে দেওয়ার পথে মোদী সরকার, চিন্তার ভাঁজ আমজনতার কপালে।
সোমবার ভর্তুকির ভবিষ্যৎ নিয়ে অসন্তোষ বাড়ছে তখন রাতের দিকে তেল সংস্থাগুলি আচমকা দাম বৃদ্ধির কথা জানায়। বিশ্ব বাজারে রান্নার গ্যাসের দাম বৃদ্ধির জন্যই দেশেও তা বাড়ছে বলে মনে করা হচ্ছে। কিন্তু করোনাজনিত আর্থিক সঙ্কটের মধ্যে এত স্বল্প সময়ের ব্যবধানে গ্রাহকদের উপর এতখানি চাপ নিয়ে উঠেছে প্রশ্ন। প্রথম দফার দাম বৃদ্ধি ঘোষণার পরে ভর্তুকির অঙ্ক জানায়নি কেন্দ্র বা তেল সংস্থাগুলি। ৫০ টাকা দাম বাড়লেও গ্রাহকের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ভর্তুকির টাকা জমা পড়ার পরে নজরে আসে গত তিন মাসের নামমাত্র অঙ্কই গ্রাহকের খাতায় জমা হয়েছে। এ বার আরও ৫০ টাকা বেশি লাগবে ভর্তুকিহীন সিলিন্ডার কিনতে।