পিতৃপক্ষের অবসান হয়ে দেবীপক্ষের সূচনার দিন আজ। আজই মহালয়া। এই মহালয়া আপামর বাঙালির কাছে এক বিশেষ দিন। গতকাল ৯টা ২৬ মিনিট ১০ সেকেন্ডে শুরু হয়েছে মহালয়া তিথি, শেষ হবে আজ অর্থাৎ ২৬ আশ্বিন রাত ১০টা ৪৯ মিনিট ৪৪ সেকেন্ডে। অমাবস্যা শেষ হলে দেবীপক্ষের সূচনা হয়। এ দিন ভরে ওঠে চণ্ডীপাঠ, মহিষাসুরমর্দিনী শোনেন। তারপর গঙ্গার ঘাটে গিয়ে পূর্ব পুরুষদের উদ্দেশ্যে তর্পণ ও পিন্ড দান করা হয়। তবে কীভাবে শুরু হলো এই পিতৃ তর্পণ (Mahalaya Tarpan)? চলুন জেনে নিন।
সনাতন ধর্ম অনুযায়ী, সূর্য কন্যা রাশিতে প্রবেশের মধ্যে দিয়ে পিতৃপক্ষের সূচনা হয় এবং সূর্য বৃশ্চিক রাশিতে গমনের মধ্যে দিয়ে পিতৃপক্ষের শেষ হয়। আর পিতৃপক্ষের শেষ দিনই মহালয়া। সাধারণ ভাবে মহৎ আলয় থেকে মহালয়া শব্দটি এসেছে। এই দিন মানুষ পূর্বপুরুষের উদ্দেশ্যে পিন্ড দান করে। শাস্ত্র মতে, এদিনই পূর্ব পুরুষ পিন্ড লাভের আশায় পৃথিবীতে আসে। তবে পিন্ড দানের (Mahalaya Tarpan) এই রীতি কীভাবে ও কবে থেকে প্রচল হলো?
আসলে মহালয়ার দিন তর্পণ (Mahalaya Tarpan) করা নিয়ে নানা মত রয়েছে। যার মধ্যে একটি লুকিয়ে রয়েছে মহাভারতের মধ্যে। শাস্ত্র মতে কর্ণের মৃত্যুর পর তাঁকে খাদ্য হিসেবে বিভিন্ন রত্ন দেওয়া হয়েছিল। এর কারন হিসাবে দেবরাজ ইন্দ্র কর্ণকে বলেন, জীবিত অবস্থায় কর্ণ কোনো দিন পূর্ব পুরুষদের খাবার দেয়নি। যদিও এটা কর্ণের অজ্ঞাতের কারণেই ঘটেছে। তাই ইন্দ্র কর্ণকে ১৫ দিনের জন্য মর্ত্যে পাঠান। এই ১৫দিন কর্ণ পূর্ব পুরুষদের খাদ্য দান করেন। এই পক্ষই তাই পিতৃপক্ষ নামে পরিচিত।
অন্যদিকে মহালয়ার দিন তর্পণ নিয়ে রাময়নেও একটি ব্যাখ্যা পাওয়া যায়। আসলে শ্রী রামচন্দ্র সীতাকে লঙ্কা থেকে উদ্ধারের জন্য অসময়ে দেবী দুর্গার আরাধনা করেছিলেন। যা অকাল বোধন নামে পরিচিত। হিন্দু ধর্মে, কোনো শুভ কাজ শুরু করার আগে পূর্বপুরুষদের খাদ্য দান ও অঞ্জলি দিতে হয়। দেবীর আরাধনা শুরু আগে শ্রী রামচন্দ্রও পূর্বপুরুষদের অঞ্চলি দিয়েছিলেন। সেই থেকেই তর্পণ (Mahalaya Tarpan) অনুষ্ঠানের প্রচলন ঘটে।