দেশনিউজ

লকডাউন দেশ, অন্তঃসত্ত্বা মহিলাকে ঘর ছাড়ার নির্দেশ বাড়িমালিকের! ১০০ কিমি পথ পায়ে হাঁটতে বাধ্য মহিলা

Advertisement
Advertisement

দেবপ্রিয়া সরকার : ৮ মাস পেরিয়ে পড়েছেন ৯ মাসে। একটু একটু করে বেড়ে উঠছে গর্ভের সন্তান। প্রথম মাতৃত্বের অনুভূতি ভালোভাবেই টের পাচ্ছিলেন ওই মহিলা। কিন্তু এর সাথে দুর্বল হয়েও পড়ছিলেন তিনি যত দিন যাচ্ছিলো। সেজন্যই বিশেষ কাজ করার শক্তি তার মধ্যে ছিল না। কিন্তু কথাতেই আছে, ‘ভাগ্য মারলে কে বাঁচাবে’। তাই এই অবস্থাতেও ১০০ কিলোমিটার পায়ে হাঁটতে হলো সেই অন্তঃসত্ত্বা মহিলাকে। অসহায় স্বামীর হাত ধরে হাঁটতে হাঁটতে বারবার পথে অসুস্থ হয়ে পড়ছিলেন তিনি। আশেপাশে একটু খাবার ও জল দেওয়ার কেউ ছিলনা।

অন্তঃসত্ত্বা মহিলার নাম ইয়াসমিন ও তার স্বামী ভাকিল। গ্রামে সেখানে রোজগার না হয় অর্থ উপার্জনের আশায় শাহারানপুর চলে আসে ওই দম্পতি। সেখানে একটি কারখানায় কাজ করতেন ইয়াসমিনের স্বামী এবং থাকতেন সেই কারখানার মালিকের ঠিক করে দেওয়া একটি ঘরে। স্বল্প রোজগারের দিব্যি কাজ ছিল তাদের ছোট্ট সংসার। এভাবেই কেটে গিয়েছে প্রায় আট মাস। কিন্তু তাদের জীবনের ছন্দপতন ঘটাল মারণ ভাইরাস করোনা। লকডাউনের জেরে কারখানা বন্ধ করে দিয়েছেন ওই কারখানার মালিক। কোনো শ্রমিককে মাইনেও দেননি তিনি। কিভাবে সংসার চালাবে তা বুঝতে না পেরে হিমশিম খেয়ে উঠে ওই দম্পতি। তার মধ্যে মালিকের কড়া নির্দেশ যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ছাড়তে হবে তাদের। এই পরিস্থিতিতে যেন মাথায় আকাশ ভেঙ্গে পড়েছিল তাদের।

লকডাউন এর জেরে বাস-ট্রেন সব বন্ধ। এই অবস্থায় কিভাবে বাড়ি ফিরবেন তা ভেবে উঠতে পারছিলেন না তাঁরা। অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীকে নিয়ে বাড়ি ফিরতে পারবেনা তাই অনুরোধ করেছিল কারখানার মালিকের কাছে সেখানেই কয়েকটা দিন থাকার। কিন্তু লাভ হয়নি তাতে। তাই বাধ্য হয়ে কারখানার মালিকের বাড়ি ছেড়ে অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে হাঁটতে শুরু করেন ভাকিল। প্রায় দুদিন ধরে ১০০ কিলোমিটার হেঁটে মীরাটের সোহরাব গেট বাসস্ট্যান্ডে পৌঁছান ওই দম্পতি। সেখানে পুলিশকে তাদের পরিস্থিতির কথা খুলে বলেন ওই মহিলা। এরপর পুলিশরাই তাদের খাবারের বন্দোবস্ত করে এবং অ্যাম্বুল্যান্সে করে তাঁদের বুলন্দশহরের বাড়িতে পৌঁছে দেওয়া হয়। এই পরিস্থিতিতে তাঁরা যখন কিছুই ঠিক করে উঠতে পারছিলেন না তখন পুলিশদের সাহায্যকে সাধুবাদ জানিয়েছে ওই দম্পতি।

Web Desk

We belong to that group who are addicted to journalism. Behind us, there is no big business organization to support us. Our pens do not flow under any other’s commands.

Related Articles