নিউজরাজ্য

সম্প্রীতির অনন্য নজির, মুসলিম তরুণীর হাতেই আরাধনা বাগদেবীর

Advertisement
Advertisement

অনন্য নজির গড়লো বারাসাত উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়। কালীকৃষ্ণ মিত্র মহাশয় ১৮৪৭ খ্রীষ্টাব্দে মেয়েদের জন্য রাজ্যের প্রথম বিদ্যালয় স্থাপন করেন বারাসাতে। ঐতিহাসিক সেই বিদ্যালয় প্রতি বছরের ন্যায় এবছরও আয়োজন করে বাগদেবীর আরাধনার। করোনা আবহে আয়োজন সীমিত হলেও ছিল নজির গড়ার অঙ্গীকার।

এবার করোনার কারণে বেশি মানুষ এক জায়গায় জড়ো হওয়ার উপায় নেই। কিন্তু রয়েছে নিয়ম মানার দায়। বিদ্যালয়ে মেয়েদের দেওয়া হয় সব ধরনের গোঁড়ামি থেকে মুক্ত হয়ে মানুষের মত মানুষ হওয়ার শিক্ষা। এমনকি বিদ্যালয়ের পাঠক্রমে নেই ‘ধর্ম’ শিক্ষার কোন সুযোগ। প্রচলিত ধ্যান ধারণা ভেঙে মানবতার বার্তা দিতে বিদ্যালয়েরই হিন্দু, মুসলিম, আদিবাসী ছাত্রী আর খ্রীস্টান শিক্ষিকা দিয়ে শ্রীপঞ্চমীর আরাধনার ভাবনা ভাবা হয় এবার। এমনটাই জানালেন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা মৌসুমী সেনগুপ্ত।

ক্ষুদ্র পরিসরে সরস্বতী পূজার ব্যবস্থা হওয়ায় এবার নেই হোম বা যজ্ঞের কোন আয়োজন। নেই পুরোহিতের বন্দোবস্তও। জুতো সেলাই থেকে চন্ডীপাঠ, সমস্ত আয়োজনটাই মেয়েদের। সহযোগিতায় রয়েছেন শিক্ষিকারা। মৌসুমী সেনগুপ্তর কথায়, অতিমারির সময় পূজার আয়োজন; তা আবার বাঙালির ভ্যালেন্টাইনস ডে। তাই বিদ্যালয়ে এই আয়োজন শুধু পুজো নয়, উৎসবও বটে! আগামী দিনেও তাঁরা বিদ্যালয়ে সরস্বতী বন্দনা উৎসবের আয়োজন করবেন। সামিল হবেন উৎসবে। সেই আয়োজনেও থাকবে না কোন পুরোহিত। এবছরের পুরোহিতবিহীন বাণী বন্দনা দিয়ে ছক ভাঙা শুরু বললেন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা।

এবার বিদ্যালয়ের বাণী বন্দনা শুরু হয় সরস্বতী বন্দনা স্তোত্র পাঠ দিয়ে। স্তোত্র পাঠ করে নবম শ্রেনীর ছাত্রী সামিহা হক। উদাত্ত কন্ঠে সামিহার স্তোত্র পাঠে মুগ্ধ তার বান্ধবী ও শিক্ষিকারা। পুজোয় পুষ্পাঞ্জলি থেকে শুরু করে নৈবেদ্য সাজানো, সবেতে অংশগ্রহণ করে সামিহা, সারা বিশ্বাসরা। কাঁসি, শঙ্খের ধ্বনিতে মুখরিত হয় বিদ্যালয় চত্বর। বাণী বন্দনায় অংশ নিয়ে সামিহার দাবী, সমাজের বিরূপ প্রতিক্রিয়ায় অভ্যস্ত তিনি বাবা মায়ের সহযোগিতায় সহজেই সেই বিরূপতাকে জয় করতে পেরেছেন। সব ধর্মের সব উৎসবেই সমান ভাবে সক্রিয় থেকে অংশগ্রহণ করেন তিনি।

Related Articles