নিউজরাজনীতিরাজ্য

“বাংলাকে গ্রেটার বাংলাদেশ বানাতে চাইছে তৃণমূল”: দিলীপ ঘোষ

Advertisement
Advertisement

২০২১ বিধানসভা নির্বাচনের আগে রাজনৈতিক ডামাডোল চলছে। বিভিন্ন রাজনৈতিক দলগুলি ভালো ফলের আশায় শক্তি মজুত করছে। এমতাবস্থায় বাংলার বিজেপি নেতা এবং সাংসদ দিলীপ ঘোষ সরাসরি তৃণমূলকে আক্রমণ করলেন। তিনি বললেন, ‘গ্রেটার বাংলাদেশ গঠনের লক্ষ্যে রয়েছে তৃণমূল।’ সোশ্যাল মিডিয়ায় তাঁর পোস্টে তিনটি ঘটনার উল্লেখ করেছেন ‌দিলীপ। ভিক্টোরিয়ায় মমতার মুখে ‘বাংলাদেশি স্লোগান’। এছাড়াও আরও অভিযোগ করেছেন তিনি — অতীতে তৃণমূলের প্রচারে বাংলাদেশী অভিনেতা ও তৃণমূলের উদ্যোগে পুজোয় বাংলাদেশী ক্রিকেটারকে অতিথি হিসেবে নিয়ে আসা। উল্লেখ্য, গত লোকসভা নির্বাচনের সময় রায়গঞ্জে বাংলাদেশের অভিনেতা ফিরদৌস তৃণমূল প্রার্থী কানহাইয়ালাল আগরওয়ালের হয়ে প্রচার করেছিলেন। সেই সময়ে নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ জানিয়েছিলেন দিলীপ। তার পাশাপাশি দিলীপ মন্তব্য করেছিলেন, ‘‘এবার তো মনে হয় ইমরান খানও প্রচারে আসতে পারেন তৃণমূলের হয়ে!” সেই জল অনেক দূর গড়ানোর পর শেষ পর্যন্ত কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক ফিরদৌসকে কালো তালিকাভুক্ত করে।

এদিন তিনি দুই বছর আগে ঘটে যাওয়া ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনের প্রসঙ্গটি টেনে আনেন। তবে শুধু দিলীপ নন, প্রায় গোটা বিষয়েই সরব বিজেপি নেতৃত্ব। আগেও বিজেপি একাধিকবার তৃণমূলের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছে ‘নাগরিকত্ব আইন’ বা ‘অনুপ্রবেশ’ ইস্যু নিয়ে। এই রাজ্যকে পশ্চিম বাংলাদেশ বানাতে চাইছে তৃণমূল, এই কথাও বলছেন তাঁরা।

অন্যদিকে বৃহস্পতিবার বিজেপির উদ্বাস্তু শাখার রাজ্য আহ্বায়ক মোহিত রায় জানান, ‘‘এটা মনে রাখা দরকার, ‘জয় বাংলা’ স্বাধীন রাষ্ট্র বাংলাদেশের ঘোষণা করা জাতীয় স্লোগান। সেটা এই রাজ্যে ব্যবহার করার মানে তোষণ রাজনীতি করা। এই স্লোগানের মধ্যে লুকিয়ে আছে পশ্চিমবঙ্গকে ভারত থেকে আলাদা করার জন্য তোষণ রাজনৈতিক চক্র।’’ দিলীপের সুরে সুর মেলালেন রাজ্য বিজেপি-র মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্যও। তিনি বলেন ‘‘মনে রাখতে হবে যে, ‘জয় বাংলা’ শেখ মুজিবুর রহমানের তৈরি করা স্লোগান। ১৯৭১ সালে ১১ এপ্রিল তৎকালীন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দিন আহমেদ প্রথম বেতার ভাষণে ‘জয় বাংলা’ স্লোগানের উল্লেখ করেছিলেন এবং বর্তমানে এটি সমান ভাবে রাজনৈতিক স্লোগান হিসাবে ব্যবহৃত হয় বাংলাদেশে। সেই স্লোগান এ রাজ্যের মাননীয়া ব্যবহার করছেন। এটা কোনোওভাবেই সমর্থনযোগ্য নয়।”

অপরদিকে, এই স্লোগান ব্যবহারে কোনও অভাবিত ঘটনা বা অন্যায় কিছু দেখছেন না কুণাল। তিনি জানান ‘‘একটা সময়ে দুই বাংলাই একইসঙ্গে ছিল। এবং শুধু তাই না, বর্তমানেও দুই বাংলার ভাষা, সংস্কৃতি, সাহিত্য সবেতেই দারুণ মিল গড়ে উঠেছে। তাই স্লোগানেও মিল থাকাটা অস্বাভাবিক নয়। এই যে বিজেপি স্লোগানের মধ্য দিয়ে গ্রেটার বাংলাদেশ বানানোর রাজনৈতিক অভিসন্ধি খুঁজছে, সেটাতে এ রাজ্যের মানুষের সমর্থন না পাওয়ায় বিজেপি নেতাদের হতাশা প্রকাশিত হচ্ছে।’’ মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বাংলাকে কতটা ভালোবাসেন তা ওঁদের ধারণা নেই। একটা সময়ে তিনি ‘বেঙ্গল প্যাকেজ’ নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের কাজে উচ্চকিত দাবি প্রদান করেছিলেন। রেলমন্ত্রী থাকাকালীনও তিনি বাংলার রেল ব্যবস্থা উন্নত করার লক্ষ্যে পৌঁছেছিলেন। কলকাতা মেট্রোর পরিসরও বৃদ্ধি করেছেন। তবে বর্তমানে যখন রাজ্যে বিধানসভা ভোটের আগে ‘বাঙালি-অবাঙালি’ ভেদাভেদের চেষ্টা করা হচ্ছে, তখন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীর মুখে ‘জয় বাংলা’ স্লোগান বাড়তি তাৎপর্যপূর্ণ হয়ে উঠেছে। কিন্তু, এর সঙ্গে দিলীপের এই মন্তব্য তাঁদের ক্ষেত্রে কোনও সমস্যাই না বলে মনে করছেন তৃণমূলের প্রথম সারির নেতারা। কেউ কেউ তো বলছেন ‘দিলীপ পাগলের প্রলাপ বকছেন।’

Related Articles