দু’হাত ঢেলে দিয়েছে প্রকৃতি! ডুয়ার্স-দার্জিলিং ছেড়ে হালকা শীতে ঘুরে আসুন ভারতের ‘অ্যামাজন’ থেকে
Winter Vacation Destination: ৬৭২ কিমি বিস্তৃত ওড়িশার ভিতরকানিকা অভয়ারণ্য (Bhitarkanika National Park) হল ভারতের ২য় বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ ইকোসিস্টেম (Mangrove Ecosystem)। এটি বিপন্ন নোনা জলের কুমিরের প্রজনন স্থান যা এই অভয়ারণ্যের প্রধান আকর্ষণ। আজকের প্রতিবেদনের আপনাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করবে ভিতরকণিকা জাতীয় উদ্যান।
ভিতরকণিকাকে কবে জাতীয় উদ্যান (Winter Vacation Destination Bhitarkanika Park) হিসেবে মনোনীত করা হয়?
১৬ই সেপ্টেম্বর ১৯৯৮ সালে ভিতরকণিকাকে একটি জাতীয় উদ্যান হিসাবে মনোনীত করা হয়েছিল এবং এটি ইউনেস্কো (UNESCO) দ্বারাও স্বীকৃত।
ভিতরকণিকা অর্থ কি (Bhitarkanika Meaning)?
‘ভিতর’ কথার অর্থ অভ্যন্তরীণ এবং ‘কণিকা’ কথার অর্থ হল সুন্দর। এই শব্দটি গোটা ইকো সিস্টেমের সৌন্দর্য এবং বৈচিত্র্যকে উল্লেখ করে।
ভিতরকানিকা জাতীয় উদ্যানে কি দেখতে পাওয়া যায় (Wildlife in Bhitarkanika)?
ভিতরকানিকা জাতীয় উদ্যান যেমন তার নোনা জলের কুমিরের জন্য পরিচিত, তেমনি এটি ভারতীয় অজগর, কিং কোবরা, ভারতীয় কালো আইবিস, সাপ-পাখি/ডার্টার, বন্য শূকর/বুনো শূকর, রিসাস বানর, চিতল/এর মতো অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ বন্যপ্রাণীকেও আশ্রয় দেয়। হরিণ, বন্য টিকটিকি এবং আরও অনেক কিছু দেখতে পাওয়া যায় এখানে।
বিশেষ বৈশিষ্ট্য (Special Features)
সাদা কুমির: সারা ভারতে একমাত্র এই জায়গায় আপনি সাদা কুমির খুঁজে পেতে পারেন। রেকর্ড অনুযায়ী, ভারতে সবচেয়ে বড় কিছু সাদা কুমির পাওয়া যায় এই পার্কে।
গিনেস বুক অফ ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস: ২০০৬ সালে, ভিতরকণিকা পার্কের মধ্যে বসবাসকারী ২৩ ফুট ৪ ইঞ্চি লম্বা এবং ২০০০ কেজি পুরুষ নোনা জলের কুমির থাকার খেতাব অর্জন করেছিল।
পরিযায়ী পাখির আনাগোনা: সারা বিশ্ব থেকে ৩২০ টিরও বেশি এভিয়ান প্রজাতি প্রতি বছর ভিতরকণিকাতে আসে শুধুমাত্র কিংফিশারের ৮টি ভিন্ন জাতের সাথে। শীতকালে ভিতরকণিকাতে ১,২০,০০০-এর বেশি পরিযায়ী পাখি আসে এবং ৮০,০০০-এরও বেশি পাখি এই স্থানের স্থানীয় বাসিন্দা। Asian Openbill, Cormorants, Egret এর মত পাখি দেখা যায়।
ওড়িশার গহিরমাথা বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য: এটি অলিভ রিডলিস সামুদ্রিক কচ্ছপের বাসা বাঁধার জন্য বিশ্বের বৃহত্তম স্থান যা ভিতরকানিকা ম্যানগ্রোভ এবং বঙ্গোপসাগরকে পৃথক করে।
জমিদারির বন: ১৯৫২ সাল পর্যন্ত ভিতরকণিকা ম্যানগ্রোভগুলি সরকারের নীতির অধীনে ছিল এবং তারপরে নিয়ন্ত্রণগুলি রাজ্য বন বিভাগের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
ওয়াটার সাফারি: ধামারা থেকে যাওয়া নৌকা বা ফেরিতে করে ভিতরকণিকা ভ্রমণ সবচেয়ে ভালো অভিজ্ঞতা দিতে পারে। সুতরাং, এটি জলের উপর একটি জঙ্গল সাফারির নিদর্শন।
বিশেষ সময় (Special Time)
পর্যটকদের জন্য উন্মুক্ত: প্রতি বছর ১লা আগস্ট থেকে ৩০শে এপ্রিল পর্যন্ত
পর্যটকদের জন্য বন্ধ: প্রতি বছর ১লা মে থেকে ৩১শে জুলাই এবং শীতকালে প্রায় ১০ দিনের জন্য।
পাখি দেখার সেরা সময়:- ১লা আগস্ট থেকে ২০শে নভেম্বর
কুমির দেখার সেরা সময়:- ১লা অক্টোবর থেকে ২০শে এপ্রিল
পৌঁছানোর জন্য নিকটতম এয়ারপোর্ট, রেলওয়ে স্টেশন ও বাসস্ট্যান্ড
নিকটতম এয়ার পোর্ট: বিজু পট্টনায়েক এয়ার পোর্ট, ভুবনেশ্বর – ১৩২ কিমি, তারপর চাঁদবালি, এন্ট্রি পয়েন্ট কণিকার মধ্যে।
নিকটতম রেলওয়ে স্টেশন: ভদ্রক রেলওয়ে স্টেশন – চান্দাবালি থেকে ৫৫ কিমি, ভিটারা কণিকা থেকে এন্ট্রি পয়েন্ট।
কলকাতা, বালাসোর, ভুবনেশ্বর, কেওনঝার ইত্যাদি থেকে বাস সুবিধা পাওয়া যায়। ক্যাব, অটোও পাওয়া যায়। সড়কপথে ভদ্রক থেকে দূরত্ব- ৫২ কিমি। বালাসোর থেকে সড়কপথে দূরত্ব- ১১৬কিমি। কলকাতা থেকে সড়কপথে দূরত্ব- ৩৬৩কিমি। রাস্তা দ্বারা ভুবনেশ্বর থেকে দূরত্ব – ১৩২ কিমি। আন্দাপুর থেকে দূরত্ব, কেওনঝার রোড- ৯৯ কিমি।