এর আগে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘোষণা করেছিলেন, ২০২১ সালের জুন পর্যন্ত বিনামূল্যে রেশন দেবে রাজ্য সরকার। বুধবার উত্তরবঙ্গ সফরে গিয়ে কোচবিহারের রাসমেলা ময়দান থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রতিশ্রুতি দেন, আগামী বিধানসভা ভোটে জিতে তৃণমূল সরকার ক্ষমতায় এলে তাঁর সরকার জুনের পরেও বিনে পয়সাতেই রেশন দেবে। যে প্রতিশ্রুতিকে ‘ভোটের আশ্বাস’ বলেই বক্রোক্তি করেছেন বিরোধীরা।
রাজ্যে ভোটের দামামা বেজে ওঠার সঙ্গে সঙ্গেই প্রতিশ্রুতির ভান্ডার নিয়ে নেমে পড়েছে যুযুধান দুই পরস্পর বিরোধী দল তৃণমূল ও বিজেপি। এক দিকে, তৃণমূল সকলের জন্য স্বাস্থ্যসাথী কার্ডের কথা প্রচার করছে। তাতে ‘দুয়ারে সরকার’-এর নানা প্রকল্পে নাম লেখানো, বিশেষত স্বাস্থ্যসাথী কার্ড করার ধুম লেগে গিয়েছে।
তার পাল্টা ‘চাকরির প্রতিশ্রুতি ফর্ম’ নিয়ে বাড়ি বাড়ি যাওয়ার কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বিজেপি। বিজেপির গৃহসম্পর্ক প্রকল্পের থেকে বাড়ি বাড়ি যাচ্ছেন দলীয় কর্মীরা। ভোটের আবহে এ দিন মমতার আশ্বাস, ‘‘গত ছ’মাস ধরে বিনা পয়সায় রেশন দিচ্ছি। ১০ কোটি মানুষের রেশন বিনে পয়সায় দেওয়া হচ্ছে। পৃথিবীর মধ্যে এমন একটা রাজ্য আমাকে দেখাতে পারবেন? আমাদের সরকার আসবে এবং আবারও বিনে পয়সায় পাবেন।’’
কোচবিহার রাসমেলা ময়দানে এ দিন উপচে পড়া ভিড় ছিলো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সভায়। উপস্থিত অনেকেই এই ঘোষণায় স্বভাবতই খুশি। দিনহাটার পম্পা রাউত বলেন, “লকডাউনে ভীষণ বিপাকে পড়েছিলাম। বিনা পয়সায় রেশন পাওয়ায় খুব সুবিধে হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী এই সভায় আরও রেশন দেওয়ার কথা বলায় ভরসা পেয়েছি।”
মুখ্যমন্ত্রীর এই ঘোষণায় রাজ্য বিজেপির সাধারণ সম্পাদক সায়ন্তন বসু বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীর এই প্রতিশ্রুতিটাই প্রতারণা। কারণ ভোটে উনি আর ক্ষমতায় ফিরবেন না।’’ বাম পরিষদীয় দল নেতা সুজন চক্রবর্তী আবার বলেন, ‘‘বামেরাই সকলের জন্য খাদ্য নিরাপত্তার দাবি তুলেছিল। তখন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কোথায় ছিলেন? আর এখন বাংলার মানুষ তাঁকে আর এই ঘোষণা বাস্তবায়িত করার সুযোগ দেবে না।’’ বিরোধী দলনেতা কংগ্রেসের আব্দুল মান্নানেরও মন্তব্য, ‘‘বিদায় নিশ্চিত বুঝে মুখ্যমন্ত্রী এখন নানা রকম প্রতিশ্রুতি বিলি করছেন।’’