কেউ তাকে ডাকে কিং খান কেউ বা বলিউড বাদশাহ। যে নামেই তাকে অভিহিত করা হোক না কেন, তার বিস্তৃতি সীমানা ছাড়িয়ে অনেক দূর। আজ তার সাফল্য আকাশ ছুঁয়েছে। চিরতরুণ এই ভার্সেটাইল অভিনেতার প্রেমে আজও পরে তরুণীরা। অষ্টাদশীদের আজও বলে বলে গোল দিতে পারে কিং খান। শাহরুখ খান মানেই একটা আলাদা আমেজ একটা আলাদা অনুভুতি। কিন্তু এত কিছু সাফল্য পেয়েও কি সম্পূর্ণ খুশি কিং খান? হয়তো না, কারণ তার গলায় আজও শোনা যায় আক্ষেপের সুর।
পকেটে টাকা নেই, মাথার ওপরে ছাদ নেই। অভিনেতা হওয়ার আশায় দিল্লি থেকে কয়েক শো মাইল পেরিয়ে স্বপ্ননগরী মুম্বাইতে এসেছিল আজকের কিং খান। বলাই বাহুল্য আজকের কিং খান কিন্তু তখন কিং খান হয়ে ওঠেনি। বাড়ি থেকে টাকা-পয়সা যা নিয়ে এসেছিল, সব তখন শেষ। হতাশ সেই ছেলেটা একদিন মুম্বাইয়ের রাস্তায় দাঁড়িয়ে একা চিৎকারও করেছে। একদিন চিৎকার করে তিনি বলেছিলেন ‘এই শহরের রাজা হবো আমি’। এবং তিনি আজ তা হয়েছেনও। কিন্তু এখনও যেন তার গলায় কোথাও একটা আক্ষেপের সুর। আর সেই আক্ষেপ হলো আজ তার পাশে তার মা-বাবা নেই। নাম-যশ প্রতিপত্তি থাকলেও না ফেরার দেশে পাড়ি দিয়েছেন অভিনেতার মা বাবা।
এক অ্যাওয়ার্ড শোয়ের অনুষ্ঠানে দাঁড়িয়ে আক্ষেপ করে কিং খান বলেন, ‘যখন প্রথমবার মুম্বই এসেছিলাম এই কারণেই এসেছিলাম কারণ এটা ম্যাগনাম ওপাস। এখানে অনেক বড় স্টেজ রয়েছে। আর সেই স্টেজের মাধ্যমে আমি আমার মা-বাবার কাছে পৌঁছোতে চাই। কারণ তাঁরা আজ আমাকে ছেড়ে অনেক দূরে চলে গিয়েছেন’। এরপরে মা-বাবার উদ্দেশে কিং খান বলেন , ‘যদি তোমরা এখানে থাকতে এটা দেখার জন্য। যদি এটা আমি বাড়িতে বা স্টুডিওতে দাঁড়িয়ে বলতাম তবে হয়তো তাঁরা শুনতেই পেতো না। তাই আমি খোলা স্থানে দাঁড়িয়ে বলতে চাই, আমি জানি ওই দূর আকাশে একটা তারা আমার মা এবং অন্য একটা তারা আমার বাবা, উপর থেকে তাঁরা নিশ্চয় আমাকে দেখে গর্ব অনুভব করেন’।
গোটা বিশ্ব বলিউড বাদশাকে চিনলেও সফলতার শীর্ষে পৌঁছালো আজও মা-বাবার জন্য মন কাঁদে কিং খানের। আর মন কাঁদবেনাই বা কেনও মা বাবা যে মা বাবাই হয়! তার যে কোনও বিকল্প নেই। প্রয়াত তাজ মহম্মদ খান শাহরুখ খানের বাবা যখন কিং খানের ১৫ বছর বয়সে তখন ক্যানসারে আক্রান্ত হয়ে ইহলোক ছেড়ে পরলোকে গমন করেন। আর এরপর ১৯৯০ সালে শাহরুখের মা লতিফ ফতিমা খান দীর্ঘ রোগে ভুগে কিং খানকে ছেড়ে চলে যান। আজ তাদের ছেলে সফল, সকলেই এক ডাকে চেনেন তাকে। কিন্তু নিজের ছেলের সফলতা তার মা-বাবার দেখতে না পাওয়ায় আজও কষ্ট পায় কিং খান।