২০০৪ থেকে ২০২০ দেশের জন্য অবদানের শেষ নেই ভারতের প্রাক্তন অধিনায়ক মহেন্দ্র সিং ধোনির। ২০০৪ সালে চট্টগ্রামে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে প্রথমবার ওয়ান ডে ক্রিকেটে মাঠে নামেন ধোনি। সেটি ছিল তাঁর প্রথম আন্তর্জাতিক ম্যাচ। আবার অন্যদিকে গত বছর ম্যাঞ্চেস্টারে বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে শেষবার ওয়ান ডে ক্রিকেটে মাঠে নামেন মাহি। আবার অদ্ভুতভাবে সেটিই মাহির কেরিয়ারের শেষ আন্তর্জাতিক ম্যাচ।
মোট ৩৫০টি ওয়ান ডে’র ২৯৭টি ইনিংসে ৫০.৫৭ গড়ে ১০৭৭৩ রান করেন ধোনি। সেঞ্চুরি করেছেন ১০টি। হাফ-সেঞ্চুরি ৭৩টি। সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত ইনিংস অপরাজিত ১৮৩ রানের। বল হাতে একটি উইকেটও নিয়েছেন তিনি। ক্যাচ ধরেছেন ৩২১টি। স্টাম্প করেছেন ১২৩টি। অন্যদিকে ২০০৬ সালে জোহানেসবার্গে দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে প্রথম আন্তর্জাতিক টি-২০ খেলেন ধোনি। শেষ টি-২০ খেলেন গত বছর বেঙ্গালুরুতে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে। মোট ৯৮টি আন্তর্জাতিক টি-২০ ম্যাচে ৩৭.৬০ গড়ে ১৬১৭ রান সংগ্রহ করেন মাহি। হাফ-সেঞ্চুরি করেছেন ২টি। সর্বোচ্চ ইনিংস ৫৬ রানের। ক্যাচ ধরেছেন ৫৭টি এবং স্টাম্প করেছেন ৩৪টি।
কিন্তু পরিসংখ্যান দিয়ে কি আর ধোনিকে মাপা যায়। ২০০৭ সালে প্রথম টি-২০ বিশ্বকাপের ফাইনালের শেষ ওভারে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে চাপের মুহূর্তে অখ্যাত যোগীন্দর শর্মার হাতে বল তুলে দেওয়া বা ওয়াংখেড়েতে ব্যাটিং অর্ডার বদল করে চার নম্বরে নেমে নুয়ান কুলশেখরের বলে ছক্কা মেরে দলকে জিতিয়ে ব্যাট ঘোরানো, ধোনির আসল মুন্সিয়ানা তো ভারতীয় ক্রিকেটের ইতিহাসকেই বদলে দেওয়া। সেই ইতিহাস কোনওদিন মোছা যাবে না। ২০০৮ সালে ধোনির নেতৃত্বে অস্ট্রেলিয়ায় আয়োজিত কমনওয়েলথ ব্যাঙ্ক সিরিজ জিতেছিল ভারত। সেটাই ছিল অজিদের মাটিতে ভারতের প্রথম একদিনের সিরিজ জয়। ২০১০ সালে ধোনির অধিনায়কত্বে এশিয়া কাপ জিতেছিল ভারত। ২০১৩ আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি জয়ের পর ধোনি। প্রথম ভারতীয় অধিনায়ক হিসেবে তিনটি আইসিসি ট্রফি জয়ের নজির গড়েছিলেন তিনি। ২০১৪ অল্পের জন্য ধোনির হাতে ওঠেনি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ। ফাইনালে শ্রীলঙ্কার কাছে হেরেছিল টিম ইন্ডিয়া। সে বছরের শেষেই টেস্ট দলের অধিনায়কত্ব। তবে, ২০১৪ সালে অল্পের জন্য ধোনির হাতে ওঠেনি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ।
২০১৫ সালের বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে অস্ট্রেলিয়ার কাছে হেরে ছিটকে গিয়েছিল ভারত। ২০১৬ অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে ৩-০ ব্যবধানে ঐতিহাসিক টি-টোয়েন্টি জয় ভারতের। ধোনির নেতৃত্বেই বিশ্বকাপের সেমিফাইনাল উঠেছিল ভারত। ২০১৭ সালে সাদা বলের ক্রিকেটেও ভারতের অধিনায়কত্ব ছেড়ে দিয়েছিলেন ধোনি। বিরাট কোহলির নেতৃত্বে শুরু হয় ভারতীয় ক্রিকেটের যুগ। ২০১৮ সালে একদিনের ম্যাচে ১০,০০০ রানের গণ্ডি ছাপিয়ে যান ধোনি। ২০১৯ সালে অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে প্রথম দ্বিপাক্ষিক একদিনের সিরিজ জয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন ধোনি। কিন্তু ২০২০ তে এসে সকলকে কাঁদিয়ে ক্রিকেটে থেকে অবসরের কথা ঘোষণা ধোনির।