নিউজরাজ্য

পরপর দু’বার কন‍্যা সন্তান জন্ম দেওয়ায় অপরাধ! গৃহবধূকে মর্মান্তিক সাজা দিলো স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোক

Advertisement
Advertisement

আবারও নৃশংসতার সাক্ষী থাকল বাংলা। বীরভূমের ময়ূরেশ্বর থানা এলাকায় বেজা গ্রামে ৩০ বছর বয়সী এক গৃহবধূর গায়ে আগুন লাগিয়ে হত্যা করার অভিযোগ উঠল স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকেদের বিরুদ্ধে। পরপর দু’বার কন্যা সন্তান হওয়ার জন্য‌ই গৃহবধুকে এমন শাস্তি পেতে হল বলে জানা গেছে।

প্রসঙ্গত, ১১ বছর আগে বীরভূমের মহম্মদ বাজার থানার বাসিন্দা সমাপ্তি সাধুর সাথে বিয়ে হয় ময়ূরেশ্বর থানার অন্তর্গত বেজা গ্রামের হাইস্কুলের শিক্ষক শিব শংকর প্রামাণিকের। পরপর দুই বার কন্যা সন্তান হওয়ার কারণে গৃহবধূর উপর মানসিক ও শারীরিক অত্যাচার করা হতই। গত ২৬ ডিসেম্বর ওই গৃহবধূর শরীরে কেরোসিন তেল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়েছে, এমনই অভিযোগ উঠেছে। সমাপ্তিকে প্রথমে সিউড়ি, পরে বর্ধমানের একটি নার্সিংহোমে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। কিন্তু গত ২রা জানুয়ারি সমাপ্তির মৃত্যু ঘটে। ইতিমধ্যেই থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে গৃহবধূর পরিবারের পক্ষ থেকে।

গৃহবধূ মৃত্যুকালীন ভিডিও জবানবন্দিতে স্বামী সহ শ্বশুরবাড়ির লোকজনদের বিরুদ্ধে অত্যাচারের কথা জানিয়েছেন। যদিও স্বামীসহ শ্বশুরবাড়ির লোকজন পলাতক। পুলিশ খোঁজ শুরু করেছে। জানা গেছে, ওই গৃহবধূর প্রথম কন্যা সন্তানের বয়স ৯ বছর এবং দ্বিতীয় কন্যা সন্তানের বয়স ৩ বছর।

উল্লেখ্য, ২৬ ডিসেম্বর অগ্নিদগ্ধ হন গৃহবধূ। শ্বশুরবাড়ির লোকজন তাঁকে প্রথমে স্থানীয় চিকিৎসা কেন্দ্রে এবং পরে সিউড়ির সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করে। অবস্থার অবনতির পর তাঁকে ওখান থেকে বর্ধমানের একটি বেসরকারি হাসপাতালে রেফার করা হয়। কিন্তু সেখানেও শারীরিক অবস্থার অবনতির ফলে সেখান থেকে কলকাতায় নিয়ে আসা হয়। কিন্তু কোনও সরকারি হাসপাতালে বেড না পাওয়ায় বর্ধমানে ফের ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়ার সময় রাস্তাতেই মারা যান ওই গৃহবধূ।

এরপর সিউড়ির সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে গৃহবধূর মৃতদেহ ময়না তদন্ত করা হয়। এরপর গত ৬ জানুয়ারি স্বামী, ননদ ও শ্বশুরবাড়ির বিরুদ্ধে ময়ূরেশ্বর থানায় লিখিত অভিযোগ করেন গৃহবধূর দাদা পল্লব কুমার সাধু। ওই গৃহবধূ মারা যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই শ্বশুরবাড়ির লোকজন পলাতক হয়েছে।

Related Articles