দীর্ঘ ৭ বছর ৩ মাস পর সাজা পেলো নির্ভয়া কান্ডে দোষী চার যুবকের। মুকেশ সিংহ, বিনয় শর্মা, পবন গুপ্ত এবং অক্ষয় কুমার সিংহ এই চার অপরাধী বহুবার ফাঁসির তারিখ বাড়ানোর জন্য আবেদন করেছে। এরপর প্রাণভিক্ষার আর্জিও জানান তারা। কিন্তু কোনো কিছুতেই লাভ হলো না। আজ তাদের ফাঁসি আজ শুক্রবার ভোর সাড়ে পাঁচটায় তাদের ফাঁসি কার্যকর হয় দিল্লির তিহার জেলে। কিভাবে সম্পন্ন হলো তাদের ফাঁসি প্রক্রিয়া, জেনেনিন একনজরে….
প্রাণভিক্ষার আর্জি খারিজ হওয়ার পর নিশ্চিত হয় শুক্রবার ফাঁসিতে ঝোলানো হবে চার দোষীকে। সেই মত শুরু হয় ফাঁসির প্রক্রিয়া। বুধবার তাদের নিয়ে যাওয়া হয় কালকোঠিতে। আলাদা আলাদা সেলে রাখা হয় চারজনকে। বৃহস্পতিবার বিকেলে চারটের পর থেকে তাদের সঙ্গে বাইরের কেউ দেখা করতে পারে না। আদালতের আইন অনুযায়ী শুধুমাত্র জেলের ১৪ জন কর্মী দেখা করতে পেরেছেন তাদের সঙ্গে। এরপর শুরু হয় দোষীদের ইচ্ছেমতো উইলের কাজ। সেখানে উপস্থিত ছিলেন ডাক্তার, ম্যাজিস্ট্রেট। রাত দশটা থেকে বারোটার মধ্যে ফাঁসির জন্য তৈরি মঞ্চে বালির বস্তা ঝুলিয়ে ভালো করে পরীক্ষা করে নেন পবন জল্লাদ।
নির্ভয়া কান্ডে এই চার অপরাধীর ফাঁসির জন্য বিহারের বক্সার জেল থেকে আনা হয়েছিল বিশেষ ভাবে তৈরি ৮ ফুট লম্বা দড়ি। সেই দড়িগুলোকেও তিন বার ভালো করে পরীক্ষা করে নেন পবন জল্লাদ। যাতে ফাঁসির সময় কোনটা ছিড়ে না যায়। বৃহস্পতিবার সন্ধে ৭টা ৩০ মিনিট নাগাদ তাদের খেতে দেওয়া হয়। সঙ্গে জানিয়ে দেওয়া হয় তাদের ফাঁসির সময়।
শুক্রবার ভোরে তাদের সবাইকে ডেকে তোলা হয়। তাদের বলা হয় স্নান করে কোনো প্রার্থনা করলে করে নিতে। এরপর নিয়মানুযায়ী আদালতের নির্দেশ পরে শোনান একজন জেল কর্তা। এরপর সবার সঙ্গে মাথা পিছু ১২ জন করে সশস্ত্র পুলিশবাহিনী সমেত তাদের নিয়ে আসা হয় সেলের বাইরে। জানতে চাওয়া হয় তাদের শেষ ইচ্ছে। এরপর কালো কাপড় দিয়ে ঢেকে দেওয়া হয় তাদের মুখ। চার জনের একসঙ্গে ফাঁসির জন্য তৈরি হয়েছিল দুইটি ফাঁসির মঞ্চ। সেখানে চার অপরাধীর হাত পিছনে বেঁধে তোলা হয় ফাঁসির তকতায়। এক একটি মঞ্চে দাড় করানো হয় দুজনকে। এরপর গলায় পড়িয়ে দেওয়া হয় ফাঁসির দড়ি। ঠিক ভোর সাড়ে পাঁচটায় জেলার সাদা রুমাল মাটিতে ফেলতেই একসঙ্গে দুইটি লিভার টান দেন পবন জল্লাদ। সম্পন্ন হয় নির্ভয়ার ওপর অত্যাচার করা চার যুবকের ফাঁসি।