দেবপ্রিয়া সরকার : করোনা ভাইরাসের ভয়ে যখন আতঙ্কিত গোটা দেশ, তখনই দেখা দিল স্বয়ং ‘যমরাজ’। হিন্দু সম্প্রদায়ে মৃত্যুর দেবতা হিসেবে আখ্যায়িত ‘যমরাজ’। মনে করা হয় মানুষের মৃত্যুর পর যমরাজের দরবারে তাঁর ঠাঁই হয়। বর্তমান পরিস্থিতি এমন জায়গায় গিয়ে পৌঁছেছে যাতে মানুষের জীবন বাঁচাতে ঘরবন্দি থাকা ছাড়া আর উপায় নেই। কিন্তু এই লকডাউন মানতে নারাজ বহু মানুষই। ইচ্ছামত যেখানে সেখানে পুলিশের নজর এড়িয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে তাঁরা। এই বিষয়টি লক্ষ্য করে মানুষকে সতর্কবার্তা দিতে রাস্তায় নামে ‘যমরাজ’।
উত্তরপ্রদেশের লখনউ থেকে প্রায় ১২০ কিলোমিটার দূরে বাহরাইচের রাস্তায় ঘোরাঘুরি করতে দেখা যায় তাঁকে। লকডাউনের সময় কোন মানুষ যাতে ঘরের বাইরের পা না দেয়, সেই নিয়ে সতর্কবার্তা দিচ্ছেন তিনি। তবে এই সতর্কবার্তা খুব সাধারন আর পাঁচজনের মতো ছিল না। তিনি রীতিমতো হুঁশিয়ার দিয়ে বলছিলেন, “যাঁরা সামাজিক দূরত্বের নিয়ম লঙ্ঘন করে রাস্তায় বের হবেন তাঁদের নরকে নিয়ে গিয়ে লকডাউন করে দেব”। যমরাজের পরনে ছিল সোনালী ও লাল রঙের পোশাক, মাথা সোনালী মুকুট। সবথেকে আকর্ষনীয় যেটা তা হল, যমরাজের মুখে ছিল ইয়াব্বড় মোটা গোঁফ। জানা গিয়েছে উত্তরপ্রদেশ পুলিশ সাধারণ মানুষদের সাবধানতা অবলম্বনে ব্যাপারটি বোঝাতে এই উদ্যোগ নিয়েছেন। যিনি যমরাজ হয়ে পথে পথে ঘুরছিলেন তিনি হলেন বাউন্ডি থানার পুলিশ কর্মী লভকুশ মিশ্র। যমরাজের বেশ ধারণ করে ওই পুলিশকর্মী রাস্তায় ঘুরে ঘুরে সাধারণ মানুষের উদ্দেশ্যে মাইকে বলছিলেন, “আমি যমরাজ।
করোনা ভাইরাসকে আটকাতে যে লকডাউন হয়েছে তার নিয়ম যদি আপনি না মেনে চলেন, তবে এই গ্রহে আর কোনও মানুষই বাঁচবে না। আমিই সকলের মৃত্যুর কারণ হয়ে উঠবো। আপনি যদি সামান্য অসতর্ক হন তবে আমি আপনাকে আমার সঙ্গে করে নিয়ে মৃত্যুপুরীতে চলে যাব।” এছাড়া তিনি আরো বলেন, ” দেশের স্বার্থের কারোরই লকডাউনের নিয়ম ভঙ্গ করে অহেতুক বাইরে বের হওয়া উচিত নয়। যদি একান্তই বাইরে বের হতে হয় তবে অবশ্যই মাস্ক ব্যবহার করুন। এক ঘন্টা পর পর নিজের হাত সাবান দিয়ে ধুয়ে স্যানিটাইজ করুন এবং অপরের থেকে অন্তত ১ মিটার দূরত্ব বজায় রাখুন।” যমরাজের এই বার্তা এলাকার মানুষ ভালোভাবে শুনেছে। অনেক মানুষ তাঁর ছবিও তুলেছেন। এই উদ্যোগে এলাকায় ভালো সাড়া মিলবে বলে মনে করছেন পুলিশ আধিকারিকরা। গত ২৪ ঘন্টায় দেশে আরও ৩৫ জনের মৃত্যু হয়েছে করোনায়। এই নিয়ে দেশে মোট মৃতের সংখ্যা ৩০৮। ভারতে মোট করোনায় আক্রান্ত ৯,১৫২ জন।