ফের গানের ভুবন মাত করল রানাঘাটের রানু মন্ডল, তুমুল ভাইরাল নতুন ভিডিও
একটা সময় সোশ্যাল মিডিয়া থেকে পুজো প্যান্ডেল সর্বত্রই একটা মানুষেরই গান ভেসে আসত। রেল স্টেশন থেকে উঠে রাতারাতি যেন সেলিব্রেটি হয়ে গিয়েছিলেন সে। কারুর বুঝতে অসুবিধা নেই এখানে রানাঘাটের রানু মন্ডলের কথা বলা হচ্ছে। রাণাঘাটের ভবঘুরে রানু মণ্ডল সোশ্যাল মিডিয়ার একসময়ের সেনসেশন ছিলেন। হিমেশ রেশমিয়া তাঁর কণ্ঠে মুগ্ধ হয়ে তাঁকে দিয়ে একটি ছবিতে গানও গাইয়েছিলেন। নেটিজেনদের দৌলতেই ‘লতাকণ্ঠী’ খেতাব জুটে যায় রানুর। কিন্তু সময়ের সাথে সাথে কোথাও যেন হারিয়ে গিয়েছিল সেই লতাকণ্ঠী রানু। তবে, সময় সবসময় এক থাকেনা সবার। সেই চলতি কথা উস্কে দিয়ে ফের লাইমলাইটে রানু মন্ডল।
রানাঘাট স্টেশন থেকে উত্থান রানাঘাটের রানুদির। এক রূপকথার গল্পের মতোই তার জীবন। স্টেশনে একদিন নিজের মনেই গান গাইছিলেন, এক প্যায়ার কা নাগমা হ্যায়। নিত্যযাত্রী অতীন্দ্র চক্রবর্তী মোবাইলে রেকর্ড করেন সেই গান। তারপর তা ফেসবুকে পোস্ট। সেই শুরু নেটিজেনরা রানুর কণ্ঠ শুনে আপ্লুত হয়ে যান। কোথাও যেন লতা মঙ্গেশকরের সঙ্গে তাঁর কণ্ঠের হুবহু মিল। তারপর থেকেই নেটিজেনদের দৌলতেই ‘লতাকণ্ঠী’ খেতাব জুটে যায় রানুর। তারপর বাংলার সীমা ছাড়িয়ে রানু পৌঁছে যান মুম্বইয়ে। এক রিয়্যালিটি শোয়ের আমন্ত্রণে গিয়েছিলেন তিনি। সেখান থেকেই ডাক পান বলিউডে গান গাওয়ার জন্য। খোদ হিমেশ রেশমিয়া তাঁর গানে মুগ্ধ।
তারপর থেকে রুপোলি দুনিয়া হয়ে ওঠে তাঁর সংসার। রানাঘাটের এক সময়ের ভবঘুরে রানু গলা মেলান হিমেশ রেশমিয়া, উদিত নারায়ণের মতো শিল্পীর সঙ্গে। হিমেশের সঙ্গে রেকর্ড করেন ‘তেরি মেরি কাহানি’। এরপর বেশ কয়েকদিন তিনি সেলিব্রিটি হয়ে থাকলেও কোথাও যেন তার অহংকারের জেরেই সবকিছু ভেঙে চুরমার হয়ে যায়।
রাতারাতি সেলিব্রিটি রানু মন্ডলের অহংকার বেড়ে গিয়েছিল সাংঘাতিক। কেউ তার সাথে সেলফি তুলতে চাইলে সে বলত সময় নেই। কারুর আবার গায়ের সঙ্গে তার ছোঁয়া লাগলে বলতেন সরে যান। তার অহংকারই পতনের মূল হয়েছিল। যে সোশ্যাল মিডিয়া তাকে শীর্ষতার শিখরে পৌঁছে দিয়েছিল সেই সোশ্যাল মিডিয়াই পরবর্তীকালে তাকে মাটিতে নামিয়ে আনে। যদিও ভাগ্যের চাকা সবসময় এক না এক সময় ঘোরে। রানু মন্ডলের ক্ষেত্রেও সেটাই হয়েছে। হিমেশের পর এবার কলকাতার মাটিতে বসে রূপঙ্কর বাগচীর সঙ্গে সুপারহিট গান ‘সাগর কিনারে’ গাইলেন রানু মন্ডল।
ইতিমধ্যেই গানটির টিজার প্রকাশ পেয়েছে ৷ তবে, পুরো গানটি ক্রমশ প্রকাশ্য। একটি ডিজিটাল কনসার্টে রূপঙ্করের সাথে সুর মিলিয়েছেন রানাঘাটের রাণু দি। কিন্তু এটা বলতেই হয় লকডাউনের সময় কিন্তু রানু মন্ডলের নুন আনতে পান্তে ফুরোয় দশা হয়েছিল। দু’বেলা দু’মুঠো খাবার জুটত না তার। এক প্রকার অর্ধাহারে দিন কেটেছিল তাঁর। মাঝেমধ্যে তো মুড়ি খেয়ে দিন কাঁটাতেন।