যতদিন বলিউড মিউজিক জীবিত থাকবে মানুষের স্মৃতিতে, ততদিন তাঁর কণ্ঠের সুর হাজারো মানুষের কানে বাজবে। চিরজীবন বলিউড মিউজিকে তার নাম উজ্জ্বল হয়ে থাকবে। তাকে সুর সম্রাজ্ঞী বললেও কম বলা হয়। গলা থেকে যেন মধু ঝড়ে। এখানে কার কথা বলা হচ্ছে তা বুঝতে অসুবিধা নেই কারুর। কারণ বলিউড সুর সামগ্রী মানেই সে যে লতা মঙ্গেশকর সে কথা সবাই জানে। লতা ভারতীয় শ্রোতাদের মনে এক আলাদাই জায়গা। কিন্তু জানেন কি সুর সামগ্রী লতা মঙ্গেশকরকে কেউ বিষ খাইয়ে খুন করার চেষ্টা করেছিল। কিন্তু কে করেছিল এই সর্বনাশে কাজ?
আজকের লতা মঙ্গেশকরের জার্নিটা প্রথম থেকে কিন্তু একেবারে সুমধুর ছিল না। মাত্র ১৩ বছর বয়সে বলিউডের দরজায় উপস্থিত হন লতা। সেই সময় অভিনেত্রীদেরই গান গাইতে হতো। সেই সময়টা কে এল সায়গল, শামশাদ বেগম ও নুরজাহানদের যুগ। তাই প্রাথমিকভাবে লতা মঙ্গেশকরকে শুনতে হয়েছিল যে তাঁর কণ্ঠস্বর একটু বেশিই পাতলা। তাঁকে প্রথম সুযোগ দেন মাস্টার গুলাম হায়দার।
তার পরেই আসে ‘মহল’-এর সেই বিখ্যাত গান ‘আয়েগা আনেওয়ালা’। ওই ছবিটি ১৬ বছরের মধুবালা ও ২০ বছরের লতা, দুজনের কাছেই খুব গুরুত্বপূর্ণ। নায়িকা ও গায়িকার জনপ্রিয়তা বাড়তে থাকে ওই ছবি থেকে। যে কণ্ঠস্বরকে একদিন যথেষ্ট ভারী নয় বলে অভিহিত করেছিল বলিউড, পরবর্তীকাল সেই কণ্ঠস্বরই হয়ে ওঠে বলিউডের গোল্ডেন ভয়েস। তার জন্য কম হিংসাও করেনি লোকে তাকে।
ছয়ের দশকের হঠাৎই খুব অসুস্থ হয়ে পড়েন সেই সময়ের বিখ্যাত গায়িকা লতা মঙ্গেশকর। আর এতটাই অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন যে বিছানা থেকে কারও সাহায্য ছাড়া ওঠার ক্ষমতাটুকু ছিল না গায়িকার। একটানা তিন মাস শয্যাশায়ী থাকতে হয়েছিল সুরেলা লতাকে। কিন্তু সেই সময় রটে গিয়েছিল লতা মঙ্গেশকর নাকি স্বর হারিয়েছেন। যদিও সেটা একদমই ঠিক ছিল না। পরবর্তীকালে কঠিন পরিশ্রম করে সুস্থ হয়ে ফের ময়দানে নেমেছিলেন লতা।
লতা মঙ্গেশকর হঠাৎই অসুস্থ হয়ে পড়া নিয়ে এক সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমের দাবি, লতামঙ্গেসকার কে নাকি কেউ বিষ খাইয়ে হত্যার চেষ্টা করেছে। যাতে কেউ বুঝতে না পারে, তাই স্লো পয়জন দেওয়া হয়েছিল তাকে,যাতে তিনি ধীরে ধীরে মৃত্যুর দিকে এগিয়ে যান। যদিও কে এই বিষ দিয়েছিল তা জানা যায়নি। তবে,পরবর্তীকালে গায়িকা জানতে পেরেছিলেন তার পরিবারের কেউ তাকে বিষ দিয়েছিলেন। কিন্তু প্রমাণের অভাবে তিনি কিছুই করতে পারেননি।
তবে, লতা মঙ্গেশকর যখন অসুস্থ হয়ে পরেছিলেন সেই সময় গায়িকার পাশে দাঁড়িয়েছিলেন কবি গীতিকার মজরুহ সুলতানপুরী। তিনি গায়িকার মনোবল সঠিক রাখতে রোজ তাকে কবিতা শোনাতেন। আরেকজন যার হাত ধরে গায়িকা দ্বিতীয়বার সঙ্গীতজগতে ফিরতে পেরেছিলেন তিনি হলেন হেমন্ত মুখোপাধ্যায়।