আন্তর্জাতিকনিউজ

আজ রাতেই ঘটবে এক মহাজাগতিক ঘটনা, যা জানালেন মহাকাশবিজ্ঞানীরা

Advertisement
Advertisement

আকাশ ভরা উল্কা। একটা আধটা নয়, অসংখ্য। যেন উল্কা বৃষ্টি। এই উল্কা বৃষ্টির ফলে ঘণ্টায় প্রায় ৬০টি উল্কা দেখা যাবে। অভাবনীয় এই উল্কাবৃষ্টির সাক্ষী হতে চাইলে এই রবি ও সোমবার মধ্যরাতের পরেই খেয়াল রাখতে হবে আকাশপানে। এই উল্কা বৃষ্টি প্রত্যক্ষ করা যাবে পরের দিনের ভোর পর্যন্ত। জানা গেছে এই উল্কাবৃষ্টি দেখা যাবে আকাশের পূর্ব থেকে উত্তর-পূর্ব অংশে। মোটামুটি ভাবে এই ডিসেম্বরের ৪ তারিখ থেকেই উল্কাবৃষ্টি শুরু হয়ে গিয়েছে উত্তর গোলার্ধে। এর পরিমাণ সবচেয়ে বেশি হবে আগামী ১৩ এবং ১৪ ডিসেম্বর। উত্তর গোলার্ধে তা দেখার সুযোগ রাত ২টোর পর থেকে ভোর পর্যন্ত পাওয়া গেলেও দক্ষিণ গোলার্ধে তা দৃশ্যমান হবে মধ্যরাতের পর। রাত গড়ালে দৃশ্যমানতা বাড়বে এই অভাবনীয় দৃশ্যের।

আকাশে মেঘ বা কুয়াশার কারণে কলকাতা বা শহরগুলি থেকে এই উল্কাবৃষ্টি দৃশ্যমান্তা নিয়ে কিছুটা সংশয়ে জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা। কলকাতার বিড়লা তারামণ্ডলের অধিকর্তা দেবীপ্রসাদ দুয়ারি জানিয়েছেন, জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা এই উল্কাবৃষ্টির নাম দিয়েছেন ‘জেমিনিড মেটিওর শাওয়ার’। জ্যোতির্বিজ্ঞানে যত রকমের উল্কাবৃষ্টির উল্লেখ রয়েছে এই জেমিনিড মেটিওর শাওয়ার তার মধ্যে উজ্জ্বলতম। তার মতে কলকাতা শহর থেকে অন্তত ৫০-৬০ কিলোমিটার এলাকাগুলি পর্যন্ত মধ্যরাতের পর আকাশের পূর্ব থেকে উত্তর-পূর্ব দিকে এই উল্কাবৃষ্টি দেখতে পাওয়া যেতে পারে। এক্ষেত্রে বড় নির্ধারক আকাশ মেঘে বা কুয়াশায় ঢাকা কিনা। এমনিতেই অমাবস্যা প্রায় এসে পড়ায় রাতের আকাশ অনেকটাই অন্ধকার থাকবে। আশা করা যায় এই উল্কাবৃষ্টি চাক্ষুষ করার ক্ষেত্রে চাঁদ তেমন প্রতিবন্ধক হয়ে উঠবে না।

পশ্চিমবঙ্গের কোথায় কোথায় এই উল্কাবৃষ্টি দেখতে পাওয়ার সম্ভাবনা প্রবল? জানা গেছে, দার্জিলিং, ডুয়ার্স-সহ উত্তরবঙ্গের কয়েকটি এলাকা, সুন্দরবন, ডায়মন্ডহারবার ও পুরুলিয়ার কয়েকটি প্রত্যন্ত অঞ্চলে উল্কাবৃষ্টি দেখতে পাওয়ার সম্ভাবনা প্রবল। সব কিছু ঠিকঠাক থাকলে আকাশে ঘণ্টায় ৬০ থেকে ৮০টি উল্কাখণ্ডকে এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে ছুটতে দেখা যাবে। উল্কাগুলি সেকেন্ডে প্রায় ৩৫ কিলোমিটার পাড়ি দিতে পারে। যা একটি চিতার সর্বাধিক গতিবেগের হাজার গুণ আর পৃথিবীর দ্রুততম গাড়ির গতিবেগের চেয়ে ২৫০ গুণ।

এই উল্কাগুলির উৎস ‘৩২০০ ফায়েথন’ নামক একটি গ্রহাণু যা আকারে মাত্র ৫ কিলোমিটার, পাথুর ও সামান্য বরফে ভর্তি। জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের মতে, সৌরমণ্ডলের জন্মের পর বিভিন্ন গ্রহ, উপগ্রহ তৈরির আগেই যাদের জন্ম হয়েছিল এবং কোনো কারণে কোনো গ্রহতে পরিণত হতে পারেনি সেগুলোই হল গ্রহাণু। তবে জ্যোতিবিজ্ঞানীদের একটি অংশের ধারণা ‘৩২০০ ফায়েথন’ কোনও গ্রহাণু নয়, বরং একটি বিলুপ্তপ্রায় ধূমকেতুর অংশ।

Related Articles