আধুনিক যুগে বসবাস করি আমরা। কোনো কিছু বিশ্বাস করার আগেই প্রমাণ চাই। কুসংস্কার থেকে শুরু করে অলোকিক ঘটনা সমস্ত কিছুর বৈজ্ঞানিক ব্যাখা না মিললে সেগুলো আমাদের বিশ্বাসযোগ্য মনে হয় না। কিন্তু প্রকৃতি হল এক রহস্যের ভান্ডার। এই রহস্য ভান্ডারে এমন কিছু ঘটনা রয়েছে যার ব্যাখা বিজ্ঞানও দিতে পারেনি। বিশেষজ্ঞদের মতে এইসব ঘটনা শুধুমাত্র রহস্যের জন্ম দিয়ে গেছে। এমন চারটি ঘটনা জেনে নিন যেগুলির রহস্যের সমাধান আজ পর্যন্ত মেলেনি।
১) দ্বাদশ শতাব্দীর ইংল্যান্ডের উলপিট এলাকার ঘটনা। সেখানে হটাৎ দুই ভাই বোনের উদয় ঘটে। এই ভাই বোন দেখতে হুবহু মানুষের মতো হলেও তাদের গায়ের রঙ ছিল সবুজ। এছাড়া এই ভাইবোনের কথা কেউ বুঝতে পারতো না। কেমন অদ্ভুত অজানা ভাষায় কথা বলতো এরা। এদের খাবার বলতে ছিল কেবল কাঁচা শিম। কিছুদিন পর ভাইটি মারা যায়। বোনটি থেকে যায়। তারপর বোনটিকে ইংরেজি ভাষা শেখানো হয়। তাকে অন্যান্য সব খাবার খাওয়ানো হয়। তারপর ধীরে ধীরে মেয়েটির সবুজ রঙ পরিবর্তন হয়। মেয়েটি জানায়, তারা সেন্ট মার্টিন্স ল্যান্ড থেকে এসেছে। এটি মাটির নিচের একটি রাজ্য। কিন্তু কেউ সেই কথা বিশ্বাস করেনি। অনেকে বলেছে এরা ভিন গ্রহের প্রাণী। বিশেষজ্ঞরা দীর্ঘদিন খোঁজ চালিয়েও কিছু সমাধান সূত্র খুঁজে পায়নি।
২) এটাও বহু আগের ঘটনা। ১৫১৮ সালের তখন জুলাই মাস। ফ্রান্সের স্ট্রসবার্গে মিসেস ত্রোফফেয়া নামের এক নারী হঠাৎ নাচতে শুরু করে। তার সাথে তাল মিলিয়ে সেখানে উপস্থিত সবাই নাচতে শুরু করে দেয়। তাদের নাচ থামছিল না। একনাগাড়ে তারা নেচে চলছিল। ১ মাস পর তাদের নাচের সাথে যোগ দিতে দেখা যায় শত শত মানুষকে। অবিরাম নাচের ফলে অনেকে অজ্ঞান হয়ে যায়, প্রাণ হারান। শহরের তৎকালীন শাসকরা ভাবলেন, যে না নাচতে নাচতে এরা ক্লান্ত হয়ে ঠিক থেমে যাবে। তাই শহরের টাউনহলে তাদের নাচের ব্যাবস্থা করা হয়। কিন্তু তাদের নৃত্য থামেনি। এত নাচের ফলে ক্লান্তি, হার্ট অ্যাটাক ও উচ্চ রক্তচাপে প্রায় ৪০০ জন মানুষ প্রাণ হারান। কিন্তু কেনো এমন তুমুল নাচে মেতেছিল তারা জানা যায়নি।
৩) এই ছবিটি দেখে আপনার সাধারণ ছবি বলে মনে হচ্ছে? কিন্তু একদমই নয়। ১৯৪১ সালে এই ছবিটি তোলা হয় কানাডার গোল্ড ব্রিজ থেকে। ছবিটিতে এই ব্যাক্তিটি ভালো করে লক্ষ্য করুন। ওই ব্যাক্তির পোশাক মোটেই ১৯৪১ সালের মতো নয়। ওই ব্যাক্তির পরনে ছিল হুডি, টিশার্ট এবং হাতে ছিল ডিএসএলআর ক্যামেরা। কিন্তু এটা কিভাবে সম্ভব? ১৯৪১ সালের মানুষের হাতে ডিএসএলআর ক্যামেরা দেখে সকলে চমকে গিয়েছেন। এরপর ওই ব্যাক্তিটিকে আর দেখা যায়নি। ওই ছবির সাথেই রয়ে গেছে রহস্য।
৪) ১৯৬০ সালের একটি ঘটনার এখনও পর্যন্ত সঠিক ব্যাখা মেলেনি। বিশেষত কানাডা, নিউ ম্যাক্সিকো, স্কটল্যান্ড, নিউ জিল্যান্ড-সহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের বহু মানুষ এক অদ্ভূত অজানা শব্দ শুনতে শুরু করেছিল। কেমন একটা গাড়ির ইঞ্জিন চলার মতো শব্দ। কানে তুলো গুঁজে রাখলেও এই শব্দ শোনা যেত। কিন্তু সব মানুষ এই আওয়াজ শুনতে পেত না। শব্দটির নামকরণ করা হয় দ্য হাম। জানা যায়, মাত্র ২% মানুষ এই শব্দটি শুনতে পেতেন। যারা হামের আওয়াজ শুনতে পেত সেইসব লোকজন জানিয়েছে, সাধারণত বাড়ির ভিতরে থাকার সময় ও গভীর রাতে হামের আওয়াজ আরও জোরে শোনা যেত। অনেকে বলেছিল হামের আওয়াজ পাথরে পরিণত হওয়া হিপ্পিদের কান্নার মতো। আরও অনেকে অনেক জিনিসের সাথে তুলনা করেছিল। কিন্তু কোনো সঠিক ব্যাখা খুঁজে পাওয়া যায়নি।