দেবপ্রিয়া সরকার : দেশে জুড়ে প্রতিনিয়ত বেড়েই চলেছে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা। তার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে মৃত্যুও। দেশের এরকম দুর্যোগময় পরিস্থিতিতে দিল্লিতে ঘটে গেল গণপিটুনির ঘটনা। দিল্লির বাওয়ানার হরেবলি গ্রামে মধ্যপ্রদেশের রায়সেনে অবস্থিত মার্কাজের জামাত থেকে দেড় মাস পরে ফিরেছেন এক যুবক। গ্রামে ঢুকতে তাকে ধরে বেধড়ক মারধর শুরু করে একদল জনতা। জানা যায় গ্রামের এক ক্ষেতে নিয়ে গিয়ে সেই যুবককে প্রবল মারধর করা হয়। চড়, ঘুষি, লাথির সাথে লাঠি দিয়েও বেধড়ক প্রহার করা হয় সেই যুবক।
এরসাথে জীবন্ত পুড়িয়ে মারার হুমকিও দেওয়া হয়। আহত যুবকের নাম দিলশাদ, ওরফে মেহবুব আলি। পুলিশ এই ঘটনার কারণ জানতে চাইলে গ্রামের উন্মত্ত জনতা জানায়, ওই যুবক ইচ্ছাকৃত ভাবে করোনা সংক্রমণ ছড়াতে গ্রামে এসেছে। তাই তাঁকে মারধর করা হয়। এই বিষয়ে আহত যুবককে প্রশ্ন করায় যুবক বলেন যে, লকডাউনের মধ্যেই মধ্যপ্রদেশের এক সবজির ট্রাকে করে লুকিয়ে সে দিল্লি আসে। পুলিশ তাঁকে আজাদপুর মান্ডির নিকটবর্তী মহেন্দ্র পার্কের কাছে গ্রেফতার করে এবং চেক আপের পরে তাঁকে ছেড়ে দেয়। এরপর গ্রামে ঢুকতে গেলে সে গ্রামের বাসিন্দাদের সাথে তর্ক বিতর্কে জড়িয়ে পড়ে। পরক্ষণেই গ্রামের কয়েকজন তাকে টানতে টানতে পাশে এক চাষের ক্ষেত্রে নিয়ে প্রবল মারধর শুরু করে। এই পুরো মারধরের ঘটনাটি সেখানে লোকজনদের মধ্যে থাকা একজন ভিডিও করে।
ভিডিওটিতে দেখা যায় যুবক মার খেতে খেতে হাতজোড় করে তাদের কাছে মুক্তি ভিক্ষা চাইছিলেন। গুরুতর আহত অবস্থায় ওই যুবককে প্রথমে অ্যাম্বুলেন্সের মাধ্যমে বাবা আম্বেদকর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় এবং সেখান থেকে তাকে জিবি পান্ত হাসপাতালে রেফার করা হয়। দিল্লি পুলিশ জানাচ্ছে দিলশাদের বাবা শ্যামলালের বিবৃতি থেকে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩২৩, ৩৪১, ৫০৬ ও ৩৪ ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে। এর পাশাপাশি লকডাউনের সরকারি আদেশ লঙ্ঘনের জন্য দিলশাদ আলির বিরুদ্ধেও ভারতীয় দণ্ডবিধির ১৮৮ ধারায় মামলা করা হয়েছে। বর্তমানে দিলশাদের শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল পরিস্থিতিতে রয়েছে।