আগামী ৬ ঘণ্টার মধ্যে শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হতে চলেছে ‘আমফান’। ১৯৯৯ এর পর এত বড় সুপার সাইক্লোন আর হয়নি। দুই বাংলা মধ্যে দিয়ে ধেয়ে আসছে এই ঘূর্ণিঝড়। ঘূর্ণিঝড়টির বর্তমান অবস্থান বঙ্গোপসাগর। দিল্লির মৌসুমী ভবনের খবর অনুযায়ী আজ সারাদিন শক্তি সঞ্চয় করে গতকাল বিকেলের মধ্যে পশ্চিমবঙ্গের দিঘা এবং বাংলাদেশের মাঝ বরাবর আছড়ে পড়ার আশঙ্কা। রাজ্যের মোট ৭ টি জেলায় প্রভাব ফেলবে আমফান। এই সাইক্লোনের জরে ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা করছে বিশেষজ্ঞরা। উপকূলীয় এলাকাগুলোতে করা সতর্কবার্তা জারি করা হয়েছে। দীঘা থেকে ৬৭০ কিলোমিটার দূরে বঙ্গোপসাগরে শক্তি সঞ্চয় করে প্রবল শক্তিশালী হয়ে উঠছে আমফান।
আবহাওয়াবিদদের আশঙ্কা অনুযায়ী, এই ঘূর্ণিঝড় উপকূলে আছড়ে পড়ার সময় এর গতিবেগ হতে পারে প্রতিঘন্টায় ১৯৫ কিলোমিটার। বাংলা যে ৭ জেলায় আমফানের প্রভাব ব্যাপক ভাবে পড়বে, সেই জেলাগুলো হলো – কলকাতা, হাওড়া, হুগলি, পশ্চিম মেদিনীপুর, পূর্ব মেদিনীপুর, উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা। এই জেলাগুলিতে কড়া সতর্কবার্তা জারি করেছে আবহাওয়া দপ্তর। আজ বিকেল থেকেই উপকূলীয় জেলা অর্থাৎ পূর্ব মেদিনীপুর, দক্ষিণ ২৪ পরগনায় বইবে দমকা হাওয়া ও মাঝারি বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। বাকি ৪ জেলায় সন্ধ্যার পর থেকে আবহাওয়া পরিবর্তন হতে শুরু করবে। আজ ঝড়ের গতিবেগ ৬০-৭০ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টা হতে পারে। তবে কাল থেকে গতি বেগ বেড়ে ১০০ কিলোমিটার প্রতি ঘন্টা হবে। তবে উপকূলীয় জেলাগুলোতে কাল বিকেলের পর থেকে ঝড়ের গতিবেগ বেড়ে হবে ১৯৫ কিলোমিটার প্রতি ঘন্টা। কলকাতায় প্রতিঘণ্টায় ১০০ থেকে ১৩০ কিলোমিটার বেগে ঝড় বইবে।
ইতিমধ্যেই দীঘার উপকূলবর্তী অঞ্চলের নিচু জায়গা থেকে মানুষজনকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার কাজ শুরু হয়েছে। সামাজিক দূরত্বের নিয়ম মেনে জেলা প্রশাসন এবং জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা দলের সদস্যরা একসাথে কাজ করছেন। উপকূলবর্তী এলাকাগুলিতে প্রচুর কাঁচা বাড়ি ভেঙে পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। হলদিয়া বন্দরে জাহাজ প্রবেশ নিষিদ্ধ করে দেওয়া হয়েছে। অমাবস্যার মধ্যে এই ঘূর্ণিঝড় ধেয়ে আসায় সমুদ্র উত্তাল হবে বলে জানিয়েছে আবহাওয়াবিদরা। ঝড়ের তুলনায় জলোচ্ছ্বাসে বেশি ক্ষতি হবে বলে আশঙ্কা করা হয়েছে। ইতিমধ্যে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে বিপর্যয় মোকাবিলা দল পাঠানো হয়েছে। এরমধ্যে বাংলায় ১৩টি এবং ওড়িশায় ১৭ টি NDRF দল পাঠানো হয়েছে। এর আগে ১৯৯৯ সালে হওয়া সুপার সাইক্লোন ধ্বংস করে দিয়েছিল ওড়িশার পারাদ্বীপ। আমফানও ততটাই শক্তিশালী হয়ে ধেয়ে আসছে বলে জানিয়েছেন আবহাওয়াবিদরা। বৃহস্পতিবার পর্যন্ত জারি থাকবে ঝড়-বৃষ্টি। উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা, নদিয়া মুর্শিদাবাদ এবং উত্তরবঙ্গ জুড়ে মূলত ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা।