ক্রমশ রহস্য ঘনীভূত হচ্ছে সুশান্ত মৃত্যুকাণ্ডে। যত সময় এগোচ্ছে ততোই যেন নতুন নতুন রহস্য এসে কড়া নাড়ছে। অভিনেতা সুশান্ত সিং রাজপুতের মৃত্যু মানতে পারছিনা কেউ। ইতিমধ্যে তদন্ত শুরু করেছে সিবিআই, হদিস মিলেছে নতুন অনেক তথ্যের। কিন্তু এরই মাঝে রহস্য ঘনীভূত হচ্ছে সুশান্তর ফোন নিয়ে।
কিন্তু কী সেই রহস্য? সুশান্তের মৃত্যুর পর অভিনেতার বাবার দাবি ছিল তাদের সঙ্গে সম্প্রতি ছেলের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু তা কেন? পরে জানা গেল সুশান্ত বারবার তার নম্বর বদলাতেন। কিন্তু বলিউডের এক এরকম নামজাদার নায়ক বারবার তার নম্বর বদলানোতে পরিচালক, প্রযোজকদের সঙ্গে সুশান্তের যোগাযোগ করতেও তো সমস্যা হওয়ার কথা? তাহলে কেন বারবার নম্বর বদলাতেন তিনি? তিনি কি তাহলে অন্য কোনও কিছুর সঙ্গে জড়িয়ে গিয়েছিলেন? যা তিনি পরিবারকেও জানাতে পারছিলেন না? কিন্তু সেটা কী?
এরপরই নজর যাচ্ছে সুশান্তের ফোন কলে। সুশান্তের ফোন কলের ভিতর কি লুকিয়ে থাকতে পারে অভিনেতার মৃত্যুর রহস্য? যদিও তা তদন্ত সাপেক্ষ। মুম্বই পুলিশ সুশান্ত সিং রাজপুতের মৃত্যুর দিন জানায় অভিনেতার ফোন থেকে দুটি নম্বরে একাধিকবার ফোন করা হয়। এই দুটি ফোন নম্বর হল মহেশ শেঠি ও রিয়া চক্রবর্তীর। সাধারণত কেউ সমস্যায় পড়লে কাছের জনকেই ফোন করেন। কিন্তু এখন প্রশ্ন ঠিক কী সমস্যায় পড়েছিলেন সুশান্ত? যে কারণে রিয়া ও মহেশ শেঠিকে একাধিকবার ফোন করেছিলেন সুশান্ত। এমনকি ১৩ জুন রাতে সুশান্তের ফোনে একটি অজানা নম্বর থেকে ফোন এসেছিল। কিন্তু সেটা কার ফোন ছিল, কে সে? যদিও সেটা তদন্তই বলবে তবে ঘনাচ্ছে রহস্য।
অন্যদিকে সুশান্তের বাবা পাটনা একটি FIR দায়ের করে বলেছিলেন, বলিউডে সুশান্ত কিছুটা একঘরে হয়ে ব্যবসায় মন দিতে চেয়েছিলেন। যার মধ্যে কুর্গে গিয়ে তিনি অরগানিক চাষাবাদ করতে চেয়েছিলেন। পাশাপাশি, রিয়া ও শৌভিকের সঙ্গে সুশান্ত আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স নিয়ে একটি কোম্পানি খুলেছিলেন। রিয়াকে ভালোবেসে যার নাম দিয়েছিলেন ‘রিয়ালিটি’। রিয়ার কথায় ‘রিয়ালিটি’তে সুশান্ত-রিয়া-শৌভিক তিনজনেই ৩৩ হাজার টাকা করে দিয়েছিলেন। এক্ষেত্রে ভাইয়ের টাকাও তিনিই দিয়েছিলেন বলে জানিয়েছেন রিয়া। আরও একটি কোম্পানি সুশান্তের ছিল, যাতে নামমাত্র ১ শতাংশ শেয়ার ছিল শৌভিক চক্রবর্তীর। এখন প্রশ্ন উঠছে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স নিয়ে এই কোম্পানিতে কী হত? সূত্রের খবর, এই আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স-র কাজ কোডিং-র মাধ্যমে করতে হয়। যে কোডিং-কে আগামী দিনের ভাষা বলে দাবি করা হয়। কিন্তু এখন প্রশ্ন তবে কি সেই কোডিংয়ের মাধ্যমেই সুশান্ত কোনও গোপণ তথ্য জেনে গিয়েছিলেন? যদিও তা তদন্ত সাপেক্ষ।
উল্লেখ্য, গত ১৪ জুন বান্দ্রায় অভিনেতা সুশান্ত সিং রাজপুতের নিজের ফ্ল্যাট থেকে উদ্ধার হয়েছিল তার নিথর দেহ। পুলিশ ও ময়নাতদন্ত রিপোর্ট বলেছিল আত্মহত্যা করেছেন অভিনেতা। কিন্তু তা মানতে নারাজ তার বাবা। অভিনেতার মৃত্যুর জন্য অভিনেতার বাবা মূলত দায়ী করেছিলেন রিয়া চক্রবর্তীকে। তার ভিত্তিতে একাধিকবার জেরা করা হয়েছে অভিনেত্রীকে। ইতিমধ্যেই সুশান্ত মৃত্যু তদন্ত রহস্য ভেদ করতে ময়দানে নেমেছে সিবিআই। আশা করা যাচ্ছে অল্প সময়ের মধ্যেই জানা যাবে সুশান্ত মৃত্যু কাণ্ডের আসল রহস্য।