নিউজরাজ্য

বাবার কাজ নেই, ফুলুরি বিক্রি করে সংসার টানছে বছর তেরোর রিপন

অনেক বাবা-মা সংসার চালাতে না পেরে ছোট ছোট ছেলেমেয়েদের কাজে লাগিয়ে দিতে বাধ্য হয়েছে।

Advertisement
Advertisement

করোনা মহামারীর পর বহু মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা একেবারেই বদলে গেছে। বিশেষ করে গরীব, সাধারণ মানুষগুলোর কষ্টের শেষ নেই। কত মানুষ কাজ হারিয়ে একেবারে নিঃস্ব হয়ে পড়েছে। সামান্য আহারটুকুও তারা জোগাড় করতে পারছে না। অনেক বাবা-মা সংসার চালাতে না পেরে ছোট ছোট ছেলেমেয়েদের কাজে লাগিয়ে দিতে বাধ্য হয়েছে। এর ফলে যেই সময় তাদের পড়াশুনা শেখার কথা সেই সময় তারা রাস্তায় ঘুরে ঘুরে কাজ করছে।

এরকমই এক কষ্টের কথা আপনাদের সামনে তুলে ধরছি। ছোট ছেলেমেয়েরা যেই খাবার খেতে বেশি পছন্দ করে, সেই পছন্দের খাবার রাস্তায় ঘুরে ঘুরে বিক্রি করছে বছর তেরোর রিপন শাহ। সামান্য আহারের জোগাড় করার জন্য গ্রামে গ্রামে ফুলুরি, ঝুরিভাজা, ঝালবড়া, জিলিপি বিক্রি করছে এই ছোট্ট ছেলেটি। যে ক্লাস সিক্সে পড়ে। লকডাউনের জন্য স্কুল বন্ধ, আর স্মার্টফোনও নেই। তাই অনলাইন ক্লাসও সে করতে পারছে না।

হরিহরপাড়ার প্রতাপপুর গ্রামে থাকে রিপন। রুকুনপুর হাইস্কুলে পড়ে। তাঁর বাবা মোজাম্মেল শাহ কেরলে রাজমিস্ত্রির কাজ করতেন। লকডাউনে কাজ চলে যাওয়াতে ৫ মাস ধরে তিনি বাড়িতেই আছেন। এখানে কোনো কাজ না পাওয়াতে বাড়িতে বসে বসে ঋণের বোঝা বাড়ছিল। আর তাই মাস দুয়েক আগে বাড়িতেই ফুলুরি, ঝুরি, জিলিপি ভাজা শুরু করেন মোজাম্মেল। কিন্তু সেভাবে বিক্রি হচ্ছিল না। আর এই সময় এগিয়ে আসে ছোট্ট রিপন।

সে দাদার সবুজসাথী প্রকল্পে পাওয়া সাইকেলে চড়ে সারাদিন ধরে ভবানীপুর, পিরতলা, শীপুর, রুকুনপুর এলাকার ঘুরে ঘুরে সাত-আট কেজি ফুলুরি, জিলিপি বিক্রি করছে রিপন। সঙ্গে আবার পাট বিক্রিও চলছে। আর দিনে গড়ে দু – আড়াইশো টাকা রোজগার করছে সে। সংসার চলার পাশাপাশি পরিশোধ হচ্ছে ঋণও। রিপনের কাজে খুব খুশি বাবা-মা। কিন্তু রিপন পড়াশুনা করতে চায়। সে বলেছে, ‘‘এই তো ক’মাস, আব্বা কেরলে গেলে আর ফেরির কাজ করব না। পড়াশোনাটাই করব।’’

Related Articles