এমবিএ করার আশায় জলাঞ্জলি পড়ার পর হয়ে গেলেন সফল ব্যবসায়ী। তবে যেমন-তেমন ব্যবসায়ী নয়, হয়ে গেলেন একজন সফল চাওয়ালা। তিনি প্রফুল্ল বিল্লোরে। প্রায় তিনবার CAT পরীক্ষায় বসেছিলেন। তিনি কিন্তু কোন বারই সফল হননি। শেষ পর্যন্ত হাল ছেড়ে দিয়েছিলেন। বাবার কাছ থেকে পাওয়া কিছু টাকা নিয়ে বিভিন্ন শহরে ঘুরে বেড়াচ্ছিলেন। মন থেকে মুছে ফেলেছিলেন এমবিএ করার ইচ্ছা। কিন্তু মানসিক শান্তি ছিল না।
এমতাবস্থায় চাকরি পান তিনি ম্যাকডোনাল্ডসে। হাতে উপার্জন এলেও হতাশা কুরে কুরে খাচ্ছিল তাকে। শেষ পর্যন্ত তাই স্বাধীন ব্যবসায়ী হওয়ার সিদ্ধান্ত নেন তিনি। বাবার কাছ থেকে আট হাজার টাকা চান প্রফুল্ল। তাঁর বাবা ভাবেন ছেলে এমবিএ করছে, কিন্তু তিনি সেই টাকায় কাপ কেটলি এবং চায়ের অন্যান্য সরঞ্জাম কেনেন। প্রথম দিন তার দোকানে কেউ আসেনি। দ্বিতীয় দিনও ক্রেতা না আসায় তিনি নিজেই চায়ের সরঞ্জাম নিয়ে ঘুরে ঘুরে পৌঁছে যান ক্রেতাদের কাছে। অর্ডার নিয়ে চা তৈরি করে তুলে দেন তাদের হাতে। সুদর্শন এবং সুশিক্ষিত চাওয়ালাকে দেখে মন গলছিল ক্রেতাদের।
ধীরে ধীরে তার পসার জমতে থাকে, কিন্তু সেই পর্যায়ে এসে আশেপাশে দোকানদাররা তাকে তুলে দেন নিজেদের ব্যবসার ক্ষতি হবে বলে। পরে ক্রেতারাই সোশ্যাল মিডিয়া থেকে তাকে খুঁজে তাকে আবার ব্যবসা শুরু করতে অনুরোধ করেন। আহমেদাবাদে এমবিএ পড়ার নাম করে মধ্যপ্রদেশের ওই যুবক চায়ের দোকান দেন। দোকানের নাম রাখেন ‘এমবিএ চাওয়ালা’।
প্রথম প্রথম অনেকেই ভাবেন তিনি হয়তো এম বি এ পাশ করে চাকরি না পেয়ে চা বিক্রি করছেন। কিন্তু পরে তিনি তাদেরকে নিজের জীবনের ঘটনা শোনান। এখন প্রফুল্লের দোকানে প্রায় কুড়ি জন কর্মচারী। তিনি ব্যবসায় সাফল্য অর্জন করার বক্তৃতা দিতে যান আইআইএম, হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে। ব্যবসা দাঁড় করানোর জন্য বাবার কাছ থেকে 50 হাজার টাকা চেয়েছিলেন প্রফুল্ল, যদিও তার বাবাকে তিনি বলেননি আসল কারণ। বাবা জানতেন ছেলে এমবিএ করার জন্যই টাকাটি চাইছে, কিন্তু তারপর তাঁর সব ক্ষোভ দূর হয়ে যায় ছেলেকে একজন সফল ব্যবসায়ী হিসেবে দেখতে পাওয়ার পর।