কলকাতায় চালু হয়ে যাচ্ছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘোষণা করা ‘মায়ের রান্নাঘর’ বাজেটে পাশ হওয়ার সাতদিনের মধ্যেই। ডিম-ভাতের থালি মাত্র পাঁচ টাকায় পাওয়া যাবে। সব্জি এবং ডালও থাকবে ২০০ গ্রাম চালের ভাতের সঙ্গে। আপাতত দুপুরে পুরসভা এই খাবারের জোগান দেবে কলকাতার ১৬টি বরোতেই। পরে পর্যায়ক্রমে এই ‘মায়ের রান্নাঘর’ চালু হবে মহানগরের ১৪৪টি ওয়ার্ডেই। পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম জানিয়েছেন, স্বাধীনতার পর এই প্রথম সরকারি পর্যায়ে কলকাতায় গরিবদের জন্য পাঁচ টাকায় পেটপুরে আমিষ খাবারের জোগান চালু হচ্ছে।
ভারচুয়ালি ১৬টি বরোতেই একসঙ্গে আগামী সোমবার বিকেল ৩টেয় স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী এই পরিষেবার সূচনা করবেন। তবে এই খাবার বণ্টন করা হবে মঙ্গলবার থেকে প্রতিদিন দুপুর ১টা থেকে ২টো পর্যন্ত। মুখ্যমন্ত্রী ৫ ফেব্রুয়ারি নিজের পেশ করা বাজেটে গরিবদের জন্য রান্না করা খাবার চালুর ঘোষণা করেন। পরে ৮ ফেব্রুয়ারি বাজেট পাশ হয়। এতদিন রাজ্য সরকার ছাত্র-ছাত্রীদের রান্না করা খাবার জোগান দিচ্ছিল স্কুলে-স্কুলে মিড-ডে মিল হিসেবে। করোনাকালে রাজ্য সরকার প্রতিমাসে প্যাকেট করে চাল-ডাল-আলু পড়ুয়াদের বাড়িতে পৌঁছে দিয়েছে স্কুল বন্ধ থাকলেও।
কিন্তু এবার মাত্র পাঁচ টাকায় রান্না করা খাবার আর্থিকভাবে পিছিয়ে পড়া প্রাপ্তবয়স্ক মানুষদের জন্য সরবরাহের সিদ্ধান্ত নিল রাজ্য সরকার। নবান্ন সূত্রে খবর, গরিব মানুষের জন্য চালু হওয়া প্রকল্পটি ভ্যালেন্টাইন্স ডে’র পরদিন থেকে কলকাতায় রাজ্যের সমস্ত জেলাতেই ভোটের আগে চালু হবে বলে। এদিকে, রাজ্য খাদ্য দপ্তর এই প্রকল্পের জন্য ইতিমধ্যে রেশন থেকে চালও বরাদ্দ করেছে।
প্রকল্পটির দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রশাসক দেবাশিস কুমার পুরসভার তরফে জানিয়েছেন, “রান্না করা খাবারের থালি বিলি করা হবে বরো এলাকার যে কোনো একটি পয়েন্ট থেকে। যে মরশুমে যেমন সবজি পাওয়া যাবে, সেটাই ডিমের সঙ্গে এই থালিতে সরবরাহ করা হবে।” উল্লেখ্য, দেবাশিস কুমারই বছরদুয়েক আগে মাত্র ছ’টাকায় দুপুরে নিরামিষ খাবারের থালি বণ্টনের কাজ শুরু করেছিলেন দক্ষিণ কলকাতার ৮৫ নম্বর ওয়ার্ডে শিশুমঙ্গল হাসপাতালের সামনে। এদিন তিনি স্বীকার করলেন, ত্রিধারা ক্লাবের উদ্যোগে সেই থালিটি ছিল নিরামিষ। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী আমজনতাকে ডিম-ভাত খাওয়াচ্ছেন মাত্র পাঁচ টাকার বিনিময়ে।