আন্তর্জাতিকনিউজ

মৌলবাদীদের তাণ্ডবে ভাঙচুর কালীমন্দিরে প্রতিমা

Advertisement
Advertisement

ফের মৌলবাদীদের তাণ্ডব বাংলাদেশে। এবার ঘটনাটি ঘটল ঠাকুরগাঁওয়ের একটি কালী মন্দিরে। যেখানেই হামলা চালাল কিছু দুষ্কৃতী। প্রতিমাও ভেঙে দিল তারা। এর আগেও কুষ্টিয়া জেলায়, বঙ্গবন্ধু মুজিবর রহমান ও বিপ্লবী বাঘাযতীনের প্রতিকৃতিতে হামলা চালানো হয়েছিল গত বছরই।

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, দেশের উত্তর জনপদ জেলা ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জে শ্মশানঘাটের কালী মন্দিরে প্রতিমা ভাঙচুর করেছে দুষ্কৃতীরা। ওই এলাকার বাসিন্দারা বলছেন, গতকাল রাতে কীর্তন গাইতে যাওয়ার আগে ওই কালী মন্দিরে প্রণাম জানাতে যান তাঁরা। তখনই দেখেন যে মন্দিরের কালী প্রতিমাটি মাথা ভাঙা অবস্থায় মাটিতে পড়ে আছে৷ পরে আরও স্থানীয় মানুষদের খবর দেন তাঁরা। মন্দিরের সভাপতি জিতেন চন্দ্র রায় অভিযোগ করছেন, মন্দিরের জমি দখল নেওয়ার জন্যই এই প্রচেষ্টা। এই ঘটনার পরই উপজেলা নির্বাহী অফিসার রেজাউল করিম ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) তরিকুল ইসলাম ঘটনাস্থলে গিয়ে ভালো করে পরিদর্শন করেন। এই প্রসঙ্গে পীরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত আধিকারিক প্রদীপ কুমার রায় জানান, ”আমরা বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখছি। এর আগেও, গত শুক্রবার বিকেলে এক পীরগঞ্জ পৌর শহরের পূর্ব চৌরাস্তায় নির্মিত বঙ্গবন্ধুর মূর্তি ভাঙার চেষ্টা করেন। এ সময় পুলিশ হাতেনাতে তাকে গ্রেপ্তার করে। তার বিরুদ্ধে বিশেষ আইনে পুলিশ বাদী হয়ে মামলা দায়ের করে।

প্রসঙ্গত, গত ডিসেম্বর মাসেই কুষ্টিয়ার শাপলা চত্বর নামক অঞ্চলে অবস্থিত বঙ্গবন্ধু মুজিবর রহমানের মূর্তি ভেঙে ফেলা হয়েছিল। এই নিয়ে গোটা বাংলাদেশ উত্তপ্ত হয়ে উঠেছিল। ওই ঘটনার পরই মুক্তমনারা অভিযুক্ত মৌলবাদী সংগঠন হেফাজত-এ-ইসলামের বিরুদ্ধে সরব হয়েছিলেন। এর আগেও ভাষ্কর্যবিরোধী বক্তব্য দেওয়ার জন্য দেশের তিন শীর্ষ মুসলিম ধর্মীয় নেতা ইসলাম বাংলাদেশের মহাসচিব মহম্মদ জোনায়েদ ওরফে জুনায়েদ বাবুনগরী ও সৈয়দ ফয়জুল করিম এবং বাংলাদেশের খেলাফত মজলিস নেতা মাওলানা মহম্মদ মামুনুল হক-দের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহিতার মামলাও করা হয়েছিল। শুধু তাই নয়, হামলা চালানো হয়েছিল বিপ্লবী বাঘাযতীন-এর মূর্তিতেও। দেশের শীর্ষস্থানীয় উলামা, মাশায়েখ ও মুফতিরা যৌথ সাংবাদিক সম্মেলন করে ফের ভাস্কর্য তৈরির বিরোধিতা করেছেন। ওই উগ্র মৌলবাদীরা জানিয়েছে, “মানুষ বা অন্য যে কোনও প্রাণীর ভাস্কর্য অথবা মূর্তি নির্মাণ, স্থাপন ও সংরক্ষণ পূজার উদ্দেশ্যে না হলেও সন্দেহাতীতভাবে কঠোরতম অপরাধ। আর যদি পূজার উদ্দেশ্যে হয়, তাহলে তা স্পষ্ট ধর্মবিরোধী আচরণ। এ ধরনের শরিয়ত বিরোধী কাজ মুসলমানদের জন্য অনুসরণযোগ্য নয়। যারা বলছেন মূর্তি ও ভাস্কর্য এক নয়, তারা ভুল বলছেন। সত্য গোপন করছেন।”

সব মিলিয়ে বর্তমানে বাংলাদেশে উগ্র ইসলাম প্রতিষ্ঠার চেষ্টা আরও জোরদার করে তুলতে চাইছে দেশের মুসলিম মৌলবাদী সংগঠন ও শক্তিগুলো।

Related Articles