করোনা আবহের মধ্যে নিঃশব্দে হানা দিচ্ছে আরেক ঘাতক স্ক্রাব টাইফাস। একদিকে করোনা ভাইরাসের দাপটে গোটা বিশ্ব নাজেহাল। কিছুতেই মিলছে না রেহাই। ঠিক এই সময় থাবা বসিয়েছে স্ক্রাব টাইফাস। এখনও পর্যন্ত এই টাইফাসের কামড়ে অসুস্থ হয়েছেন রাজ্যের প্রায় ১৩ হাজার ৭০০ মানুষ। যদিও মৃত্যুর কোনো খবর এখনও পাওয়া যায়নি। স্বাস্থ্য দফতরের তথ্য অনুযায়ী, স্ক্রাব টাইফাসের আক্রমণে সবচেয়ে বেশি অসুস্থ হয়েছে মুর্শিদাবাদর লোকেরা।
এরপর পূর্ব মেদিনীপুর এবং তারপরেই আছে উত্তর চব্বিশ পরগনা। এমনকী শহরতলির ডানলপ, বরানগর থেকেও স্ক্রাব টাইফাসে অসুস্থ হয়ে রোগীরা আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন। সরকারি হাসপাতালের ফিভার ক্লিনিকে আসা প্রতি দশ রোগীর মধ্যে ২-৩ জন স্ক্রাবের কামড়ে অসুস্থ আছেন। এই রোগ ও অনেকটা ডেঙ্গুর মতোই। রক্তের এলাইজা টেস্ট করে বোঝা যায় স্ক্রাব টাইফাসের আক্রমণ। মাঠ বা বাগানের ইঁদুরের ঘাড়ে বা পিঠে বসে থাকা অতি ক্ষুদ্র এক ধরনের কীটের দংশনে এই রোগ হয়। কামড়ের তিন থেকে পাঁচ দিনের মধ্যে জ্বর, গা-ব্যথা, বমিভাব শুরু হয়।
তবে এই রোগের থেকে মুক্তির জন্য সব সরকারি-বেসরকারি হাসপাতাল বা ক্লিনিকে স্ক্রাবের তথ্য স্বাস্থ্য দপ্তরে পাওয়ার জন্য পৃথক ওয়েব পোর্টাল তৈরি করা হবে। স্বাস্থ্য দপ্তরের স্ক্রাব গাইডলাইনে বলা হয়েছে পাঁচ দিনের বেশি জ্বর হলে ওই রোগীকে ডেঙ্গুর মতো এলাইজা টেস্ট করতে হবে। তার সঙ্গে ডক্সিসাইক্লিন ট্যাবলেট বা ক্যাপসুল রোগীকে দিতে হবে। রোগীর ঘাড় থেকে পা পর্যন্ত কোনও অংশে ছোট-গভীর ক্ষত, সঙ্গে জ্বর, তীব্র যন্ত্রণা হলেই হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছে স্বাস্থ্য দফতর।
রাজ্যের স্বাস্থ্য অধিকর্তা ডা. অজয় চক্রবর্তীর বলেছেন যে গত দুমাসে মুর্শিদাবাদ, কলকাতা-সহ কমবেশি সব জেলায় স্ক্রাব টাইফাসের সংক্রমণ বেড়েছে। তবে চিকিৎসা চলছে। তিনি আরও বলেছেন যে এই রোগ ধরতে না পারলে মৃত্যু অবধারিত। রাজ্যের ৩০টি হাসপাতালকে স্ক্রাবের চিকিৎসার আওতায় আনা হয়েছে।