সিনেমার প্লটের সাথে মিশে গেল বাস্তব। এ যেন শাহিদ কাপুর-অমৃতা রাও অভিনীত ‘বিবাহ’ সিনেমার বাস্তব রূপ। পার্থক্য একটাই, সেখানে নায়িকা বিয়ের আগে আগুনে পুড়ে যান, আর বাস্তবে কনে হয়ে গিয়েছেন প্যারালাইজড। তবে সিনেমার মত হাসপাতালে গিয়েই তাঁকে বিয়ে করেছেন পাত্র। বাস্তবে এমন ঘটনা বিরল। আর এই বিরল ঘটনাই এবার শোরগোল ফেলেছে।
ঘটনাটি উত্তর প্রদেশের প্রতাপগড়ের। বিয়ের কয়েক ঘণ্টা আগে দুর্ঘটনার কবলে পড়ে পঙ্গু হয়ে যান কনে। সাধারণত এমন ক্ষেত্রে বিয়ে ভেঙ্গে যায়, পাত্র বেঁকে বসে, কিন্তু এক্ষেত্রে হল উলটপুরাণ। এমন এক ঘটনা ঘটল, যা সারা দেশের সামনে নজির হয়ে থাকবে। পাত্র নিজের সিদ্ধান্তে অনড় থেকে জীবনসঙ্গিনী হিসাবে সেই কনেকেই বেছে নিলেন। বিয়ের পর গুরুতর আহত স্ত্রীর সেবা করলেন হাসপাতালে থেকে।
জানা গেছে, পাত্রের নাম অবধেশ। পাশের গ্রাম কুন্ডার আরতি মৌর্যের সঙ্গে বিয়ে ঠিক হয় তাঁর। গত ৮ ই ডিসেম্বর ছিল বিয়ের দিন। বিয়ের দিন সকালে একটি বাচ্চাকে বাঁচাতে গিয়ে ছাদ থেকে পড়ে যান আরতি। কোমর, হাত, পায়ে চোট লাগে তাঁর। শিরদাঁড়া ভেঙ্গে দু’টুকরো হয়ে যায়। তড়িঘড়ি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকেরা জানান আগামী কয়েক মাস আরতিকে বিছানায় শুয়ে থাকতে হবে। এমনকী, তাঁর সম্পূর্ণ সুস্থ হওয়ার সম্ভাবনাও খুবই কম।
এর পর আরতির বাড়ির লোকজনের থেকে আরতির বোনকে বিয়ের প্রস্তাব পান অবধেশ। অদ্ভুত এই প্রস্তাব মেনে নেননি তিনি। ছুটে যান আরতির কাছে। আরতিক ছাড়া যে অন্য কাউকে বিয়ে করবেন না তা অবধেশ জানিয়ে দেন। বলেন দরকার পড়লে হাসপাতালেই বিয়ে করবেন আরতিকে।
সাধারণ পরিবারের ছেলে অবধেশের অসাধারণ এই কাজের প্রশংসায় পঞ্চমুখ তাঁর ও আরতির বাড়ির লোক, আত্মীয়-পরিজন এবং নেট দুনিয়া। অবধেশের অনুরোধে চিকিৎসকেরা ঘণ্টা দুয়েকের জন্য অ্যাম্বুল্যান্সে করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা সমেত আরতিকে বাড়ি পাঠান। সেখানে লগ্ন মেনে তাঁর ও অবধেশের বিয়ে হয়। আরতি আবার ফিরে আসেন হাসপাতালে। গত আটদিন ধরে অবধেশ স্ত্রীর পাশে থেকে তাঁর সেবা করে চলেছেন দিন-রাত। এই হয়তো সত্যিকারের ভালোবাসা।
