অনেক ছোটো থেকেই আমরা শুনেছি বিষে বিষে বিষক্ষয়। কিন্তু কে জানত এই বছর অর্থাৎ বিশ-বিশ (২০২০) গোটা পৃথিবী জুড়ে করোনা নামক ভয়ঙ্কর রোগ গোটা বিশ্বে আতঙ্ক সৃষ্টি করবে। সামাজিক মেলবন্ধন, উৎসব ভুলে মানুষ বাঁচার লড়াইতে নামবে সেটা কে জানত। অনেক ক্ষয়ক্ষতির মধ্য দিয়ে বিশ্বের মানুষের কাছে প্রাপ্তি প্রায় শূন্য।
চিন থেকে আগত করোনা ভাইরাসের জেরে গোটা বিশ্ব মৃত্যু মিছিলে স্তব্ধ। চারিদিকে বাতিল বিমান, ট্রেন,স্তব্ধ নাগরিক জীবন। রাস্তায় বেরোনো বন্ধ হল মানুষের, গৃহবন্দী থেকে গেলেন, সমস্ত অফিসের, ব্যবসার, কারখানার কর্মচারীরা। বাড়িতে বসেই অনলাইনে স্কুল-কলেজ, অফিস এর কাজ চলতে থাকল। মানুষের সর্ব-সাময়িক সঙ্গী হয়ে উঠল মাস্ক, স্যানিটাইজার। মানুষ পরিচয় করে ফেলল লকডাউন, কোয়ারেন্টাইন এবং আইসোলেশন, এই তিনটি শব্দের সাথে। কেউ চাকরি হারালো, কারোর জীবিকা উপার্জন শেষ হয়ে গেল, কেউ কেউ হারালো প্রিয়জন। প্রিয়জন হারানোর বেদনার সাথে সাথে, তাদের চোখের দেখা টুকু দেখতে না পাওয়া যেন বেদনা আরও বাড়িয়ে দিতে থাকল৷ পিপিই কিট এর অসহ্য গরম ও অস্বস্তি মেনে নিয়ে দুঃসাহসের সঙ্গে চলেছে লড়াই! বিনা চিকিৎসায় কত মানুষ মারা গেলেন তার হিসেব রাখা দুষ্কর।
প্রায় গোটা বছর জুড়ে ভার্চুয়াল কাজকর্মের উপর নির্ভর করে রয়েছে মানুষ। সোশ্যাল মিডিয়াতেই মানুষ সাময়িক আনন্দ খুঁজে নেওয়ার জন্য নিত্যনতুন রেসিপি, হাতের কাজ প্রভৃতি আপলোড করেছেন ফেসবুক, ট্যুইটার, ইনস্টাগ্রামে৷ বন্ধুদের সাথে আড্ডা ভিডিও কলের মাধ্যমেই মানুষ সম্পন্ন করেছে। গুগল মিট বা জুম কলের মাধ্যমে সকাল বিকেল অফিসের মিটিং, স্কুলের ক্লাস প্রভৃতি সম্পন্ন করেছে।
আজ ৩১ শে ডিসেম্বর ২০২০, বিষ-স্বাদযুক্ত এই বছর আজ শেষ হতে চলেছে। করোনার প্রকোপ থেকে সাময়িক প্রতিরোধ গড়ে তুললেও মানুষের আশা সারা বিশ্বের দেশগুলির চিকিৎসক মহল,প্যাথোলজিক্যাল রিসার্চাররা খুব শীঘ্রই তৈরি হওয়া ভ্যাক্সিন গুলি সহজেই মানুষের নিরাময় করতে পারবে। কাল থেকে আগত নতুন বছরের শুরু থেকেই বিশ্বজুড়ে উৎসবের সাথে প্রার্থনার প্রহর গোনাও শুরু সাধারণ মানুষের।