দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ রয়েছে লোকাল ট্রেন পরিষেবা। যার ফলে মানুষের ভিড় নেই স্টেশনে স্টেশনে। ভিড় নেই সেই জনবহুল শিয়ালদহ স্টেশনে। শুনশান স্টেশন, নেই হকারদের ভিড়। নেই নিত্যযাত্রীদের ঠেলাঠেলি। তবে এবার সেই শিয়ালদহ স্টেশনের ভোল একেবারে বদলে যাচ্ছে। একেবারে বিমানবন্দরের মত তৈরী হচ্ছে শিয়ালদহ স্টেশন। শপিং মল থেকে রেস্তরাঁ। এগজিকিউটিভ লাউঞ্জ থেকে সুইট রুম- একেবারে হাইফাই ধাঁচের পরিষেবা পাওয়া যাবে স্টেশনে।
প্রতি দিন গড়ে ১২ লক্ষ যাত্রীর চাপ সামলাতে হত শিয়ালদহ স্টেশনকে। দৈনিক গড়ে ৯১৯টি ট্রেনের চাপ সামলাতে হত স্টেশনকে। চারিদিকে মানুষের ঠেলাঠেলি, কোনোদিনই ফাঁকা থাকতো না এই স্টেশন। হকারদের ভিড়, যেখানে সেখানে হকারদের দোকান। দেওয়ালে পানের পিকের দাগ। তবে এবার যাত্রীদের জন্য বিশেষ সুবিধার আয়োজন করছে কর্তৃপক্ষ। একপ্রকার ‘স্বচ্ছ ভারত’ মিশনের জন্য কিছুটা বদল এসেছে। কিন্তু প্রতিদিন এত ভিড় সামলে স্টেশনের ভোল বদলানো কার্যত অসম্ভব ছিল। তবে দীর্ঘদিন লকডাউনের জেরে পরিষেবা বন্ধ হতেই এই কাজ করতে সুবিধা হয়েছে।
এখন থেকে নিউ নর্মালে ট্রেন ধরতে এসে যাত্রীরা চাইনিজ থেকে তন্দুরি সব কিছুরই স্বাদ নিতে পারবেন। তার জন্য খুব বেশি টাকা খরচ করতে হবে না। কর্তৃপক্ষের দাবি, সাধারণের সাধ্যের মধ্যেই দাম রাখা হয়েছে। মাত্র ৫০ টাকায় বিলাসবহুল লাউঞ্জে এক ঘন্টা সময় কাটানো যাবে। এছাড়া যাত্রীরা ট্রেন আসতে দেরি হলে এসি ডরমেটরি, টু-বেড, ফোর-বেড অথবা এসি সুইটে সময় কাটাতে পারবেন। এক্ষেত্রে ১২ এবং ২৪ ঘন্টার জন্য ঘরগুলির ভাড়া ৫০০ থেকে ৩,০০০ টাকা।
এছাড়া কোথাও ঘুরতে যাবার সময় ট্রেন আসতে দেরি হলে ভারী ব্যাগ নিয়ে দৌড়ঝাঁপ করতে হবে না। স্টেশনের মূল গেট দিয়ে ঢুকেই দোতলায় পাঁচতারা বন্দোবস্ত করা হয়েছে। বদলে যাচ্ছে প্লাটফর্মের সংখ্যাও। উত্তর শাখায় আগে ১এ থেকে ৯ডি প্ল্যাটফর্ম ছিল। এ বার তা হচ্ছে ১ থেকে ১৪। একই ভাবে দক্ষিণ শাখায় প্ল্যাটফর্মের নম্বর ছিল ১০এ থেকে ১৪এ। তা পাল্টে এবার হয়েছে ১৫ থেকে ২১। এছাড়া দক্ষিণ শাখার প্ল্যাটফর্মের কাছে একটি শপিংমল তৈরি হচ্ছে।
স্টেশনের দেওয়ালে এখন থেকে আর পানের পিক দেখা যাবে না। এখন থেকে থাকবে শিল্পীদের আঁকা ছবি। এছাড়া সব টিকিট কাউন্টারকে একই জায়গায় আনারও চেষ্টা চলছে। নামী সংস্থার রেস্তোরাঁও আছে। বিভিন্ন ছোট ছোট দোকান ভাড়া দেওয়া হয়েছে। এবার ট্রেন চালু হলেই স্টেশনের ভোল দেখলে আপনি একেবারে চমকে যাবেন।