বাংলাদেশের একটি শিশু হাসপাতালের লাগোয়া ৬ ফুট বাই ১২ ফুট একটি ছোট ঘরে ১৯৮৩ সালে মাইক্রোবায়োলজি ডিপার্টমেন্ট তৈরি করেছিলেন সমীরকুমার সাহা। এরপর থেকে ওই ঘরেই বিভিন্ন রোগের প্রতিষেধক নিয়ে কাজ করেছেন তিনি। সাফল্যও পেয়েছেন প্রচুর। গবেষণায় সাফল্য লাভ করে ‘ইউনেস্কো’, ‘দ্য আমেরিকান সোসাইটি ফর মাইক্রোবায়োলজি’-র মতো সংস্থা থেকে একাধিক সম্মানও পেয়েছেন তিনি। এরপরে বহুদিন গবেষণার কাজ স্থগিত থাকার পর নতুন করে আবার চমক দিলেন সমির বাবু। সারা বিশ্বকে কুপোকাত করা করোনা ভাইরাসের জিনোম সিকোয়েন্স উদঘাটন করলেন সমির বাবু। সমীর বাবুর সঙ্গে এই কাজে সহযোদ্ধা হিসেবে কাজ করেছেন তাঁরই মেয়ে সেঁজুতি।
সমির বাবু বাংলাদেশের ‘চাইল্ড হেল্থ রিসার্চ ফাউন্ডেশন’-এর ৮ সদস্যের একটি গবেষক দল নিয়ে করোনা ভাইরাসের জিনোম সিকোয়েন্স ম্যাপিংয়ের কাজ করেছেন। তিনি সেই হাসপাতালেরই গবেষক। সম্প্রতি বাংলাদেশের এক সংবাদমাধ্যমকে সমীরবাবু ও সেঁজুতি তাঁদের এই সাফল্যের কথা জানিয়েছেন। এই খবরটি পেয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং ও বায়োটেকনোলজি বিভাগের অধ্যাপক শরিফ আক্তারুজ্জামান বলেন, “জিনোম সিকোয়েন্সিংয়ের সাহায্যে ভাইরাসটির জেনেটিক পরিবর্তন জানা সম্ভব হবে। রোগের মূল উৎপত্তি জানা গেলেই প্রতিষেধক সন্ধানের কাজ সহজ হয়ে যাবে।”
তাঁর কথায়, “এই মুহূর্তে ভাইরাস জিনোম সিকোয়েন্স সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য শনাক্তকারী দেশ হলো আমাদের দেশ। এই দেশে ছড়িয়ে পড়া নির্দিষ্ট ভাইরাস স্ট্রেনগুলো শনাক্ত করা, সংক্রমণের হটস্পট বা সুপার-স্প্রেডার শনাক্ত করা এবং জনস্বাস্থ্যের বিষয়ে হস্তক্ষেপের জন্য কৌশল প্রণয়ন করা এই মুহূর্তে সব থেকে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। সম্পূর্ণ তথ্য সনাক্তকরণ এর পর বাংলাদেশ এখানকার জনগোষ্ঠীর জন্য একটি প্রাথমিক ভ্যাকসিন তৈরি করতে সাফল্য লাভ করবে।