আমফানের জেরে প্রচুর ক্ষতি হয়েছে সাধারণ মানুষের। বিশেষ করে যাদের কাঁচা বাড়ি, টালির চাল, তারা তাদের আশ্রয়টুকুও হারিয়েছে আমফানের কারণে। এই পরিস্থিতিতে সেসব মানুষের কথা মাথায় রেখে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে কুড়ি হাজার টাকা করে দেওয়ার কথা ঘোষণা করলেন। মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, “আমফানের দাপটে প্রচুর মানুষের বাড়ি ভেঙ্গে যাওয়ায় তারা তাদের শেষ আশ্রয়টুকুও হারিয়েছে। তাঁদের রাজ্য সরকার কুড়ি হাজার টাকা করে দেবে”। এরজন্য রাজ্য সরকারের তরফ থেকে একটি টাস্কফোর্স গঠন করা হয়েছে। এছাড়া ঝড়ের দাপটে উড়ে গিয়েছে বহু জায়গা টিউবওয়েল। সেগুলো পুনরায় ঠিক করার জন্য ১০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে।
রাজ্য সরকারের দেওয়া হিসাব অনুযায়ী আমফানের জেরে ৬ কোটি মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং রাজ্যের মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে ৮৭ টি। ক্ষতিগ্রস্ত ৮.১৩ লক্ষ লোককে এক স্থান থেকে অন্য স্থানে স্থানান্তরিত করা হয়েছে। আমফানের জেরে রাজ্যেরও ক্ষতি হয়েছে প্রচুর। সাড়ে চার লক্ষ বিদ্যুতের পোল ভেঙে গিয়েছে, ৩০০টি ব্রিজের কালভার্ট ভেঙে পড়েছে, এক লক্ষ পানের বরজ নষ্ট হয়েছে, কৃষি জমি সাড়ে দশ লক্ষ হেক্টর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, ১৬০ কিমি নদী বাঁধ ভেঙেছে, ৫৮ হাজার হেক্টর মাছ চাষের পুকুর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, ৪৭১০ কিলোমিটার গ্রামীণ রাস্তা ভেঙেছে, ২১টি জেটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, ১ লক্ষ ১০ হাজার স্কুল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
এছাড়া বিদ্যুৎ বিপর্যয়ের ঘটনাও ঘটেছে ব্যাপকভাবে। সিইএসসি এলাকায় ৩৩ লক্ষ গ্রাহকের মধ্যে বুধবার সন্ধ্যায় ৩২.৭ লক্ষ মানুষের বাড়িতে বিদ্যুৎ সংযোগ করে দেওয়া হচ্ছে এবং ৩০ হাজার গ্রাহকের বাড়িতে বিদ্যুৎ দেওয়া বাকি রয়েছে। রাজ্য বিদ্যুৎ বন্টন ব্যবস্থার হিসাব অনুযায়ী ১০৩ টা পুরসভার মধ্যে ১০১ টা পুরসভা এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ করা সম্ভব হয়েছে। তবে পূজালি ও গোবরডাঙা পুরসভায় এখনও একটু সমস্যা এখনো রয়েছে। কিন্তু দুই পুরসভা এলাকাতেই বিদ্যুৎ ফিরিয়ে দেওয়া সম্ভব হবে।