পেরুর এক প্রত্যন্ত পাহাড়ি গ্রামে বসে বালক আন্দ্রেস রুজো তার ঠাকুরদার কাছে একটা গল্প শুনেছিল। এক রহস্যগাথা নদীর গল্প। আমাজন জঙ্গলের গভীরে বিষ্ময়কর অনেক কিছুর অস্তিত্ব রয়েছে তার মধ্যে অবাক করার মত একটি ফুটন্ত নদী রয়েছে। কিন্তু প্রথমেই সেটা নিছক গল্প বলে মনে হয়েছিল রুজোর। তার ধারণা একটি নদীকে ফোটানোর জন্য যে উত্তাপের প্রয়োজন তার জন্য আশেপাশে অনেকগুলো আগ্নেয়গিরি থাকা দরকার।
12 বছর আগে শোনা গল্প বিশ্বাস করতে পারেননি এই স্প্যানিশ জিওলজিস্ট। তার মনে হয়েছিল আমাজনের ধারের কাছেও এমন আগ্নেয়গিরি নেই সুতরাং এমন কিছু হওয়া সম্ভব না। তবুও সংশয় মেটাতে নিজের চোখে দেখে আসতে পারি দিলেন আমাজনের গভীর অরণ্যে পাড়ি দিলেন। আর সেখানে গিয়ে চক্ষু চড়কগাছ।
আমাজনের গভীরে পেরুতে আন্দ্রে রুজো দেখা পেলেন সেই আশ্চর্য নদীর। চারমাইল লম্বা এই নদী থেকে ধোঁয়া উঠছে যেমন ফুটন্ত জল থেকে উঠে। আর সেই নদীর জলে পড়ে রয়েছে নানা রকম পশু পাখিদের মৃতদেহ। জল খাওয়ার আশায় নদীতে নেমে তারা আর ফিরে আসতে পারেনি। কুড়ি ফুট গভীর এই নদীতে হাত দিতেই তিনি টের পেয়ে যান জলের উষ্ণতা। এই জলে একবার পড়লে মুহূর্তে গোটা মানুষ সেদ্ধ হয়ে যাবে।
এই নদীর জল টগবগ করে ফোটার আংশিক কারণ হলো উত্তর ঝর্ণাধারার জল নদীতে পতিত হচ্ছে। এই নদীর নিকটবর্তী এলাকায় বৃষ্টি হলে জল ছিদ্রবিশিষ্ট শিলাপলির ভেতরে প্রবেশ করে সেখানে জমা হয়। এই ঝরনার জল শিলার সাথে ঘর্ষণে উত্তপ্ত হয়ে নদীতে পড়ে। জল শিলার ভেতর দিয়ে যাওয়ার সময় পৃথিবীর আদি তাপমাত্রা থেকে তাপ শোষণ করে ওপরে শিলা বা পাথরের সাথে তীব্র ঘর্ষণে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে।