নদীয়া সংবাদনিউজরাজ্য

দীর্ঘ ৮০ বছর যাবৎ বন্ধ দুর্গাপুজো, কিন্তু এখনও অক্ষত নদীয়ার শান্তিপুরের দুর্গা প্রতিমার পাট

র্তমানে ওই বাড়ির বাসিন্দাদের সাথে কথোপকথন সূত্রে জানা যায় প্রায় আশি বছরের অধিক সময় ধরেই বাড়িটিতে বন্ধ রয়েছে দুর্গা পুজো।

Advertisement
Advertisement

মলয় দে নদীয়া:- নদিয়া জেলার শান্তিপুর শহর অন্তর্গত সূত্রাগড়ে  রামপদ স্ট্রীটে অবস্থিত শতাব্দী প্রাচীন ইন্দ্র বাড়িতে একসময় দুর্গাপূজা হতো যথেষ্ট আড়ম্বরের সাথেই । বর্তমানে ওই বাড়ির বাসিন্দাদের সাথে কথোপকথন সূত্রে জানা যায় প্রায় আশি বছরের অধিক সময় ধরেই বাড়িটিতে বন্ধ রয়েছে দুর্গা পুজো। কিন্তু এখনো যথেষ্ট কারুকার্য সহ বিদ্যমান রয়েছে ঠাকুর দালান সহ মাতৃ মন্দির।

সূত্র মারফত আরো জানা যায়, পাঁচু গোপাল ইন্দ্রের হাত ধরেই প্রথম সূচিত হয়েছিল এই বুনিয়াদি বাড়ির দুর্গোৎসব। এক সময় ইন্দ্র পরিবারের আদি বাসস্থান ছিল মাজদিয়ার অন্তর্গত ভজন ঘাটে । তৎকালীন সময়ে ওই অঞ্চলে চুরি , ডাকাতির প্রভাব বৃদ্ধি পাওয়ায় চাঁদ মোহন বাবু সপরিবারে চলে আসেন নদিয়ার শান্তিপুর শহরের সুত্রাগরে এবং সুত্রাগরের এই রামপদ সরণি স্ট্রীটে বসবাস শুরু করেন।

তবে সূত্র মারফত জানা যায় এই বাড়ির দুর্গাপুজোর অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা চাঁদ মোহন ইন্দ্রের পুত্র পাঁচু গোপাল ইন্দ্র ,পাঁচু গোপাল বাবু চিরকালই শিক্ষা সংস্কৃতি ও শিল্পকলার পৃষ্ঠপোষক এবং অত্যন্ত রুচিবান মানুষ ছিলেন বলেই শান্তিপুরের ইতিহাস সূত্রে  জানা যায়। শান্তিপুর সুত্রাগর গার্লস হাই স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা ও কর্মকর্তা এবং সম্পাদক ছিলেন পাঁচু গোপাল ইন্দ্র মহাশয় । এর পরবর্তীকালে তিনি শান্তিপুর অ্যান্টি মেলেরিয়া সোসাইটি র মেয়র এবং শান্তিপুর পৌরসভার কাউন্সিলর হিসাবে নির্বাচিত হয়ে ছিলেন।

বর্তমানে তাদের বাড়িতে নারায়ণ শিলা রয়েছেন, যিনি দৈনিক পূজিত হন, তবে সবচেয়ে আশ্চর্যজনক ঘটনা হলো তাদের বাড়িতে দুর্গা প্রতিমার দালানে ওই দুর্গা মায়ের পাট এবং ওই পাটের ওপর অবস্থিত মায়ের কাঠামো তৈরির বাঁশের কাঠ গুলো এখনও অক্ষত। তাতে পড়েনি কোনো প্রলেপ , ধরেনি ঘুন এবং সেগুলোকে নষ্ট করতে পারেনি কোনো পোকামাকড়, সে কারণেই বর্তমানে তাদের বাড়ির সদস্য দের ধারণা মা আছেন মন্দিরেই ।

কারণ পৃথিবীতে মনীষীদের ঈশ্বর প্রসঙ্গে বিভিন্ন উক্তি প্রসঙ্গেই জানা যায় প্রকৃত ঈশ্বরের অবস্থান নিরালায় । ঈশ্বর এত আলো , হইচই , কোলাহল ও উৎসবের সমারোহ থেকে নির্জনতাকেই নাকি বেশি পছন্দ করেন । আর সেই কথা স্মরণ করেই প্রতি বছর দুর্গা পূজা না হলেও মায়ের পাট পুজো হয় এই মন্দিরে দুর্গা পূজার দিন। তাহলে সত্যিই কি দুর্গতিনাশিনী কি এই মন্দিরেই অবস্থান করছেন ? এমনটাই বিশ্বাস করেন পরিবারবর্গ।

Related Articles