বুধবার বহু বছরের প্রতীক্ষা শেষে অযোধ্যার বিতর্কিত জমিতে সম্পন্ন হয় রাম মন্দিরের পুজো। কিন্তু বর্তমানে করোনা আতঙ্কে জর্জরিত দেশ তথা গোটা বিশ্ব। ইতিমধ্যেই এই পরিস্থিতিতে অর্থ টাকা ব্যয় করে রাম মন্দিরের ভূমিপুজোর প্রয়োজনীয়তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অনেকেই। এরই মাঝে শনিবার ‘দেশে হাসপাতালের সংস্কৃতির তুলনায় মন্দিরের সংস্কৃতি অনেক বেশি প্রয়োজনীয়’ সুর চড়ালেন রাজ্য বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষ। এই মন্তব্যে ফের বিতর্কে জড়ালেন রাজ্য বিজেপি সভাপতি।
রাম মন্দিরের ভূমি পুজো নিয়ে ইতিমধ্যেই নানান প্রশ্ন তুলেছে রাজ্যের শাসক দল। আর এবার নাম না করে শাসক দলকে একহাত দিলীপ ঘোষের। এই প্রসঙ্গে রাজ্য বিজেপি সভাপতি বলেন, ‘ যাঁরা নিজেদের ধর্মের কথা বুক ফুলিয়ে বলতে ভয় পান, তাঁরাই রাম মন্দিরের বিরোধিতা করছেন। যাঁরা গর্ব অনুভব করছেন, তাঁরা রাম মন্দিরের ভূমিপুজোকে সমর্থন করছেন।রাম মন্দির তুলনায় হাসপাতাল বেশি যারা এরকম দাবি করছে তারা তা সঠিকভাবে চিকিৎসা পরিষেবা দিতে পারেনা। হাসপাতালের বেড নেই’। এরপরই উত্তরপ্রদেশের প্রসঙ্গ টেনে দিলীপ ঘোষের তোপ, ‘কিন্তু অন্যদিকে উত্তরপ্রদেশে পর্যাপ্ত হাসপাতাল রয়েছে। হাসপাতালের সংখ্যাও যথেষ্ট বেশি করোনা রোগীর তুলনায়। সেখানে করোনা পরিস্থিতিও নিয়ন্ত্রণে রয়েছে’।
উল্লেখ্য কিছুদিন ঘাটালের তৃণমূল সাংসদ দেব প্রশ্ন তোলেন, ‘এই অতিমারীর সময়ে রাম মন্দির নিয়ে আড়ম্বরের যৌক্তিকতা কী? যে কোনও বাচ্চাকে যদি প্রশ্ন করা হয়, তোমার এখন কী চাই? করোনার ভ্যাকসিন না রামমন্দির, সেও বলে দেবে কোনটা প্রয়োজন’। এরপরেই রাম মন্দিরের ভূমি প্রসঙ্গ টেনে রাজ্য বিজেপির সভাপতির পাল্টা জবাব। তিনি বলেন, ‘ ভারতের ঐতিহ্য রাম মন্দির। অযোধ্যার কোনো মানুষজন রাম মন্দির ভূমিকা নিয়ে একবারও প্রশ্ন করেনি। এই দেশে হাসপাতালের সংস্কৃতির তুলনায় মন্দিরে প্রয়োজনীয়তা অনেক বেশি ‘।
প্রসঙ্গত,অযোধ্যায় বিতর্কিত জমিতে রাম মন্দির তৈরির পক্ষেই রায় দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। আর তাই ৫ অগাস্ট মন্দির নির্মাণের জন্য ভূমি পুজো সারেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ওই দিন ৪০ কেজির রুপোর ইট পুঁতে ভূমিপুজোর উদ্বোধন হয়। রাম মন্দির তৈরি নিয়ে বিতর্কের শেষ ছিলনা। অবশেষে ২০১৯ সালের নভেম্বরে সুপ্রিম কোর্টের পাঁচ বিচারপতির সাংবিধানিক বেঞ্চ রায় দেয়, অযোধ্যার বিতর্কিত জমিতেই হবে রামমন্দির। শুরু হয়ে গেল সে নির্মাণ কাজ। সেদিন পুজোয় প্রধানমন্ত্রী ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ, মোহন ভগবত। এছাড়াও ছিলেন সাধু-সন্তরা। মন্দিরের প্রথম ইট গেঁথেছেন স্বয়ং নরেন্দ্র মোদি। পরিকল্পনা অনুযায়ী এরপর সাড়ে তিন বছরে ‘মর্যদা পুরুষোত্তম শ্রীরামের মন্দির’ তৈরি করবে শ্রীরাম জন্মভূমি তীর্থক্ষেত্র ট্রাস্ট।