দেবপ্রিয়া সরকার : খুন হওয়ার আশঙ্কায় প্রতিনিয়ত ভুগছেন গোসাবার তৃণমূল বিধায়ক জয়ন্ত নস্কর। বরাবরই তার মূলে রয়েছে মানুষের মনে অমর হয়ে থাকার ইচ্ছা। বড় বড় নেতা-মন্ত্রী বা সুপারস্টাররা মারা গেলে তাদের স্মরণে মূর্তি গড়া হয়। কিন্তু তিনি যখন থাকবেনা তখন কি তার স্মরণে মূর্তি গড়া হবে? সেই অনিশ্চয়তায় না গিয়ে তিনি নিজেই গড়ালেন তার তিনটে মূর্তি। সম্প্রতি তিনি কুমারটুলি থেকে ভাস্কর ভাড়া করে নিয়ে গিয়ে তাঁকে দিয়েই নিজের ৩টি মূর্তি (Statues and Busts) তৈরি করিয়েছেন।
আপাতত নিজের বাসভবনেই তিনি নিজের মূর্তিগুলি রেখেছেন। মূর্তিগুলোর একটি মাটির তৈরি এবং অন্য দুটি ফাইবার গ্লাসের পূর্ণাবয়ব মূর্তি। বিধায়ক জয়ন্ত নস্কর যেকোনো দিন খুন হয়ে যেতে পারে এমনটাই ভয় তাঁর। বিধায়কের এমন ভয়ের কারণ জানতে চাওয়ায় তিনি জানিয়েছেন, “৪ জন অপরাধী আলিপুর কেন্দ্রীয় সংশোধনগার থেকে পালিয়ে গেছে। তাদের ধরার পরে তারা স্বীকার করেছিল যে আমাকে হত্যা করার জন্যেই তাদের স্থানীয় কোনও রাজনীতিবিদ নিয়োগ করেছিল। সেই সময় জেলা পুলিশ সুপারের দায়িত্বে থাকা প্রবীন ত্রিপাঠি আমাকে কথাগুলো জানিয়ে সতর্ক করে দিয়েছিলেন। রাজ্য সরকারও আমার নিরাপত্তা ব্যবস্থা বাড়িয়ে ওয়াই ক্যাটাগরি করে দিয়েছে”,
বর্তমানে ১১ টি পুলিশ কর্মীর নিরাপত্তায় আছেন বিধায়ক জয়ন্ত নস্কর। সংবাদমাধ্যম বিধায়কের কাছে এখন মূর্তি তৈরির কারণ জানতে চাইলে তিনি তার প্রত্যুত্তরে জানান যে ‘বেঁচে থাকাকালীন শিল্পীর সামনে বসে মূর্তিগুলি যত নিখুঁতভাবে তৈরি করা যাবে মারা গেলে মূর্তিগুলো ততটা নিখুঁতভাবে তৈরি নাও হতে পারে’। বিধায়কের এমন সিদ্ধান্তে সাধারণ মানুষের উপকার অদ্ভুত চোখে দেখছেন তাকে। এ কথা জানত জানতে পেরে তিনি বলেন যে ‘মূর্তিগুলি নাকি আগে থেকেই তৈরী ছিল। তার বাড়ি নিজের ঘরে সেগুলি রাখা ছিল’। মূর্তিগুলি কোথায় বসানো হবে জানতে চাওয়ায় বিধায়ক জয়ন্ত নস্কর জানান, স্থানীয় একটি স্কুলের প্রধান শিক্ষক প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন যে মৃত্যুর পরে ওই স্কুলেই তাঁর আবক্ষ মূর্তিটি স্থাপন করা হবে। তবে অন্য দুটো কোথায় স্থাপন করা হবে সে বিষয়ে কোন ধারণা নেই জয়ন্ত বাবুর। তিনি বলেন স্থানীয় মানুষজন চাইলে নিজেদের পছন্দ মতো জায়গায় মূর্তিদুটো বসাতে পারে। এই ঘটনাটি বিস্তারিত শোনার পর দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি শওকত মোল্লা কটাক্ষ করে বলেন “আমি এই ধরণের ঘটনা কখনও শুনিনি। এটা এমন কোনও ব্যক্তির কাজ যাঁর কোনও বুদ্ধি নেই। এটা দারুণ মজার ব্যাপার”।