নিউজরাজ্য

মমতার হুঁশিয়ারিই সার! বৈধ স্বাস্থ‍্যসাথী কার্ড থাকা স্বত্ত্বেও মোটা অঙ্কের বিল দিয়েই চালাতে হচ্ছে চিকিৎসা

Advertisement
Advertisement

নাজেহাল শহরবাসী বৈধ স্বাস্থ্যসাথী কার্ড নিয়ে। এই কার্ড নিয়েই নাকাল রোগী, অনেকে ভোটের আগে মমতা সরকারের ‘মাস্টার স্ট্রোক’ বলে দাবি করছেন যেই কার্ড নিয়ে। বাঘাযতীন স্টেশনের একদম কাছে রেড প্লাস নার্সিংহোমে স্বাস্থ্যসাথী কার্ড জমা নিতে অস্বীকার করায় চিকিৎসা চলছে মোটা অঙ্কের বিল দিয়েই। রিসেপশনে যখন রোগীর পরিবার স্বাস্থ্যসাথী কার্ড জমা দেয়, তখন তাঁকে জানান হয় এই কার্ড জমা রাখা যাবে না তাই অপারেশন হবে না এবং বৈধ নয় এই কার্ড চিকিৎসার জন্য।

স্বাস্থ্যসাথী কার্ড রোগী শিখা রানি সেনের নামে। ১২ জানুয়ারি তাঁর ছেলে কানু সেন তাঁকে নিয়ে রেড প্লাস নার্সিংহোমে ভর্তি করান পেটে অসহ্য ব্যথা শুরু হওয়ায়। কানু সেন পাড়ায় ধোপার কাজ করেন, ভাল নয় পরিবারের আর্থিক অবস্থা। দ্রুত চিকিৎসার আশায় স্বাস্থ্যসাথী কার্ডের উপর ভরসা করেই বাড়ির নিকটের রেড প্লাস নার্সিংহোমে ভর্তি করেন। কিন্তু কোনও লাভ হয়নি হাতে বৈধ স্বাস্থ্যসাথী কার্ড থাকা সত্ত্বেও। কারণ, ওই স্বাস্থ্যসাথী কার্ড নিতে চায় না হাসপাতাল কানু সেনের কাছ থেকে। তাঁকে রিসেপশন থেকে জানানো হয়, অপারেশন হবে না তাঁর মা শিখা রানি সেনের, গ্ৰাহ্য হবে না এই কার্ড। চিকিৎসা করাতে হবে টাকা দিয়েই।

হাসপাতালের কাছে এই প্রসঙ্গে জিজ্ঞাসা করলে তাঁদের স্পষ্ট বক্তব্য, “অনুমোদন না পাওয়া পর্যন্ত আমি কিছু বলতে পারব না। স্বাস্থ্যভবন থেকে অনুমোদন না পেলে চিকিৎসা দেওয়া হবে কীভাবে?” কানু সেন জানিয়েছেন, তাঁর বিস্তারিত কোনও জ্ঞান নেই স্বাস্থ্যসাথী কার্ড সম্পর্কে, প্রথমবার এই কার্ড নিয়ে চিকিৎসা করাতে এসেছেন। সেই সুযোগেই রোগী ফেরানোর চেষ্টা করেছে হাসপাতাল স্বাস্থ্যসাথী কার্ড দেখে। তাই কোনও উপায় না দেখে মায়ের চটজলদি চিকিৎসার জন্য ভর্তি করেন কাছের নার্সিংহোমটিতে। তাঁর ২২,০০০ টাকা বিল হয়েছে এখনও পর্যন্ত। কানু সেন হাসপাতালের বিল মেটাচ্ছেন মহাজনের কাছ থেকে ১০% সুদে টাকা ঋণ নিয়ে। 

প্রসঙ্গত, রোগীকে ভর্তি করা হবে স্বাস্থ্যসাথী কার্ড থাকলে। অনলাইনে স্বাস্থ্য ভবনে পৌঁছে যাবে সেই কার্ড এবং পরিচয়পত্র সহ রোগী ও রোগ সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য। তখন অনুমোদন আসবে সেখান থেকে। তবে এর মাঝে বন্ধ থাকবে না রোগীর চিকিৎসা। স্বাস্থ্যসাথী কার্ডে কোনও ভাগ নেই অপারেশন বা অন্য কোনও চিকিৎসা সংক্রান্ত। যদি নার্সিংহোমের বিল পাঁচ লক্ষ টাকা পার করে যায়, সেক্ষেত্রে রোগীর পরিবারকে দিতে হবে বাকি টাকা। কিন্তু স্বাস্থ্যসাথী কার্ড জমা নেওয়া হয়নি শিখা রানির চিকিৎসায়। উল্লেখ্য, প্রতি হাসপাতাল ও নার্সিংহোমে হেল্প ডেক্স রাখা থাকবে স্বাস্থ্য সাথী কার্ড সম্পর্কে বুঝিয়ে দেওয়ার জন্য। কিন্তু রোগীর ছেলে কানু সেনের অভিযোগ, রেড প্লাস নার্সিংহোম মানেনি সেই নিয়ম। যে নার্সিংহোম স্বাস্থ্যসাথী কার্ড মানবে না, বাতিল করে দেওয়া হবে সেই হাসপাতালের লাইসেন্স বলে জানিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী।

Related Articles