মাটির তলা থেকে বেরিয়ে এলো ৩ হাজার বছর আগের শহর, গুপ্তধনের সন্ধানে গবেষকরা
প্রাচীন কালে পৃথিবীর বিভিন্ন জায়গায় তৈরি হয়েছিল বিভিন্ন সভ্যতা। বিখ্যাত অনেক সভ্যতার ব্যাপারে জানলেও এমন অনেক সভ্যতা গড়ে উঠেছিল যে ব্যাপারে প্রত্নতত্ত্ববিদরা খুব বেশি জানতে পারেনি। গতবছর খননের সময় সেরকমই একটি শহরের খোঁজ পাওয়া গিয়েছে পূর্ব আফ্রিকায় ইথিওপিয়াতে। যে শহর টিকেছিল প্রায় চৌদ্দশ বছর। খ্রিস্টপূর্ব 80 থেকে 825 খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত।
পূর্ব আফ্রিকায় ছিল আকসুম সভ্যতা। শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে পূর্ব আফ্রিকাকে নিয়ন্ত্রণ করেছে এই সভ্যতা। রোমের মতো শক্তিশালী সভ্যতার সঙ্গে বাণিজ্য সম্পর্ক ছিল আকসুম সভ্যতার মানুষদের। চীন ও প্রাচীন পারস্যের সাথেও সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল। সভ্যতার প্রধান শহরের নাম ছিল আকসুম। মনে করা হয় প্রাক আকসুম কোন জনপদ থেকেই উত্তর ইথিওপিয়ায় গড়ে উঠেছিল আকসুম সভ্যতা। এর উৎস জানতে জন্স হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা উত্তর ইথিওপিয়ার ইহেনা অঞ্চলের কাছে খনন কাজ শুরু করেন। সেখানেই তারা যে শহরের খোঁজ পান তা প্রাক আকসুম যুগের।
সেই খনন কাজ চালানোর পর প্রত্নতত্ত্ববিদরা খুঁজে পেয়েছেন পাথরের দেওয়ালের সারি। জন্স হপকিন্সের গবেষক মাইকেল হ্যারোয়ার এ বিষয়ে বলেছেন- “পশ্চিমী দুনিয়া এই সভ্যতার ব্যাপারে জানেন না কিন্তু এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ সভ্যতা। ইথিওপিয়ার এই সভ্যতার ব্যাপারে অনেক কিছুই অজানা।” গবেষকরা এই প্রাচীন সভ্যতাকে বিটা সেমাতি বলে ডাকেন। এই বিটা সেমাতি আবিষ্কারকে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করেন লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক জ্যাক ফিলিপস। রেডিয়োকার্বন ডেটের মাধ্যমে জানা যায় এই বিটা সামাতির সময়কাল ছিল খ্রিস্টপূর্ব 771 থেকে 645 খ্রিষ্টাব্দ। অর্থাৎ আকসুম সভ্যতা গড়ে ওঠার পরও বিটা সামাতি ছিল।
গবেষকরা দেখেছেন বিটা সামাতিতে ছিল প্রচুর ছোট ছোট বাড়ি, কিছু আয়তকার বড় বাড়ি যাকে বলা হত বাসিলিকা। এগুলি আদালত বা অন্য প্রশাসনিক দপ্তর হিসেবে ব্যবহৃত হতো। এখন যেখানে ইয়েমেন সেখানে আগে ছিল সাবা সাম্রাজ্য । চতুর্থ শতাব্দীতে সেখানকার রাজা এজানা আকশুম সভ্যতাকে খ্রিস্টধর্মে দীক্ষিত করেন। তখন এই বাসিলিকা গুলি গির্জার রূপান্তরিত হয়েছিল। এই সভ্যতায় তামার তৈরি রিঙ এবং মদ সংরক্ষণের জন্য আমফোর খুঁজে পাওয়া গিয়েছে। আরো প্রচুর তথ্য পাওয়া যাবে বলে আশা করা হচ্ছে।