ক্ষুদ্রাকার উজ্জ্বল মোহময়ী মুক্তের দেখা মেলে একমাত্র সমুদ্রের অয়েস্টারেই আর এই চিরাচরিত ধারনাকে নস্যাৎ করে দিলেন কেরলের এক কৃষক। নিজের বাড়িতে পুকুর তৈরি করে স্বচ্ছ জলে উৎপাদন করেছেন মুক্ত। আর সেগুলি বিদেশে রপ্তানি করে উপার্জন করেছেন লক্ষাধিক টাকা। এই অসাধ্য সাধনকারী ব্যক্তির নাম কে জে মাথাচান। কাসারগেদ অঞ্চলের বাসিন্দা তিনি।
তিনি ছিলেন সৌদি আরবের কিং ফাহাদ বিশ্ববিদ্যালয়ের টেলিকমিউনিকেশন ডিপার্টমেন্টের অধ্যাপক। হঠাৎ চীনের আরামকো অয়েল কোম্পানিতে ইংরেজি থেকে আরবিক অনুবাদকের কাজ করার জন্য সুযোগ আসে তার। চীনে পাড়ি দেওয়ার পর একদিন সেখানের উক্সিতে ধানসুই ফিসারিজ রিসার্চ সেন্টারে যান। সেখানে তিনি জানতে পারেন পুকুরেও মুক্ত চাষ করা যায় আর সেখানে এই বিষয়ক কোর্স করানো হয়।
কিছুদিন পর সৌদি আরব থেকে চাকরি ছেড়ে তিনি চিনে ওই রিসার্চ সেন্টারে ডিপ্লোমা কোর্স করতে চলে আসেন। এরপর 1999 সাল থেকেই নিজের বাড়িতে একটি পুকুরে শুরু করেন মুক্তোর চাষ। সুদূর মহারাষ্ট্র থেকে পরিষ্কার জল নিয়ে এসে বালতিতে করে সাজিয়ে পুকুরে ফেলে টেস্টিং শুরু করেন তিনি এভাবে 18 মাস রিসার্চ করার পর 50 বালতি মুক্ত ফলিয়ে ফেলেন। এই চাষের জন্য খরচ করে দেড় লক্ষ টাকা তারপর বছর ঘুরতে ঘুরতে সেখান থেকে 4.5 লক্ষ টাকা উপার্জন করেন তিনি।
কিন্তু কিভাবে এটা সম্ভব এর ব্যাখ্যা হিসেবে তিনি জানান যে মূলত তিন ধরনের মুক্ত রয়েছে প্রাকৃতিক, কৃত্রিম ও কর্ষিত। আর এই কর্ষিত মুক্ত তিনি বিগত 21 বছর ধরে পুকুরে ফলাচ্ছেন। এই মুক্তার চাহিদা কিভাবে বাড়ছে অস্ট্রেলিয়া কুয়েত বা আরবের মতো দেশে!! মাথাচান বলেন ভারতের বাজারে যে মুক্ত গুলি পাওয়া যায় সেগুলি সাধারণত কৃত্রিম হয় সত্যিকারের মুক্তর এক ক্যারেটের দাম 360 টাকা।
2018 সাল থেকে তিনি স্থানীয় কৃষকদের এই মুক্ত ফলানো বিষয়টি শিখিয়ে দিয়েছিলেন। এখন মাথাচানের সঙ্গে তারাও সেখানে মুক্ত ফলান। এই নতুন ধরনের কৃষি কাজের জন্য ক্লাস নেওয়া শুরু করে দিয়েছেন তিনি। দিনে দিনে তার প্রভাব বাড়ছে গোটা কেরালা জুড়ে।