নিউজলাইফস্টাইল

আজ রাত ৯ টায় কেন জ্বালাবেন প্রদীপ? জেনে নিন আসল কারণ

Advertisement
Advertisement

দেবপ্রিয়া সরকার : চারিদিকে করোনা ভাইরাসের আতঙ্ক। এই ভাইরাস প্রতিরোধে আপ্রাণ চেষ্টা করে চলেছে দেশের সরকার। চারিদিকে চলছে সতর্কতামূলক প্রচার। গত শুক্রবার সকাল ন’টায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী করোনা ভাইরাসের জেরে দেশের পরিস্থিতি নিয়ে কথা বলতে বলতে সমস্ত দেশবাসীর উদ্দেশ্যে একটি ভাষণ দেন। এই ভাষণে তিনি বলেন আগামী ৫ ই এপ্রিল অর্থাৎ আজ রবিবার রাত ৯ টায় দেশের সমস্ত নাগরিক যেন তাদের বাড়ি আলো নিভিয়ে দিয়ে মোমবাতি বা প্রদীপ জ্বালিয়ে রাখে ৯ মিনিটের জন্য। প্রধানমন্ত্রীর এই বক্তব্যের পরে সেটিকে ঘিরে সমালোচনা শুরু হয়ে যায় রাজনৈতিক মহলে। অনেকে প্রধানমন্ত্রীর এই বক্তব্যকে সমালোচনা করে বলেছেন, আজ বিজ্ঞানের যুগে এরকম অতিপ্রাকৃতিক শক্তির উপর আস্থা রাখা একেবারেই ভিত্তিহীন।

আমাদের ভারত অবশ্য আধ্যাত্মিকতার দেশ। এই দেশের ধর্ম, শিক্ষা, সংস্কৃতি, সভ্যতা অন্যান্য দেশের তুলনায় একেবারেই পৃথক। এই সবকিছুর সঙ্গে আধ্যাত্মিক কথা একেবারে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। এখানে বিজ্ঞান ও আধ্যাত্মিকতা সম্পূর্ণ দুটি মেরু হিসেবে বিবেচনা করা হয়। এখানে বিজ্ঞান ভগবানের বিশ্বাসী নয়, কিন্তু এই মহাজাগতিক যা কিছু বর্তমান তা শক্তির আরেক রূপ যাকে আধ্যাত্মিকতা সাথে তুলনা করা হয়। একক শক্তি কে ভারতীয় আধ্যাত্মবাদ ‘পরাশক্তি’ বলে আখ্যায়িত করেছে। বিজ্ঞানের মতে শক্তির কোন সৃষ্টি বা ধ্বংস করা না। শক্তি বিভিন্ন মাধ্যম দ্বারা পরিবাহিত ও পরিবর্তিত হয়ে থাকে। আধ্যাত্মবাদ অনুযায়ী পৃথিবীতে শক্তি দু’ধরনের, যথা শুভ শক্তি ও অশুভ শক্তি। আধ্যাত্মিকতা অনুযায়ী পৃথিবীতে যা কিছু ভাল সব শুভশক্তি কারণে ও যা কিছু মন্দ তা সব অশুভ শক্তির কারণে ঘটে। আজ যে মানুষ ভাইরাস সারা বিশ্বজুড়ে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে মানব সভ্যতা কে ধ্বংস করার জন্য, আধ্যাত্মিকতা অনুযায়ী এটি অশুভ শক্তির কারণ। যার জন্য বিজ্ঞান এর কোনও সঠিক সমাধান করতে পারছে না। বিজ্ঞানের কাছে এই যুক্তি আবার একেবারেই ভ্রান্ত।

আধ্যাত্মিকতা অনুযায়ী আমাদের মধ্যে যে শক্তি থাকে তাকে আমরা পরমাত্মা বলে থাকি। পরমাত্মার সঙ্গে আত্মার যোগসূত্র স্থাপনে আমাদের মধ্যে দৈবজ্ঞানকে জাগরিত করে। এর ফলে ১৩০ কোটি মানুষ যখন একযোগে একই ভাবনায় মগ্ন হয়ে সংগ্রাম করবে একটি অশুভ শক্তির বিরুদ্ধে তখন নিশ্চই সেই সংকল্প বাস্তবে রূপ নেবে। প্রধানমন্ত্রী বক্তব্য অনুযায়ী অনেকেই পাল্টা প্রশ্ন তুলেছিল যে কেন ঘরের আলো নিভিয়ে মোমবাতি বা প্রদীপ জ্বালাতে বলছেন তিনি? এই প্রশ্নের উত্তরে আর্থিক নীতি অবলম্বন করে বলা হয় , প্রদীপ বা মোমবাতি হল শক্তির উৎস যার উল্লেখ্য রয়েছে ভারতীয় পঞ্চতত্ত্বে। এই সংকেত অশুভ শক্তিকে বিনাশ করতে সক্ষম। ১৩০ কোটি ভারতবাসী যখন একই প্রকল্পে অগ্রসর হবে তখন দেশজুড়ে একটি মহা শক্তি উৎপন্ন হবে। হয়তো এই শক্তি কোন বিশেষ দৈবশক্তি হবেনা যা করানো থেকে মুক্ত করবে কিন্তু এই অদৃশ্য শক্তি আমাদের মনোবল বাড়িয়ে তুলবে আরও কয়েকগুণ।

এই প্রকল্পে মানুষের মনে আত্মবিশ্বাস বাড়ার সাথে সাথে স্বাস্থ্য সচেতনতা বৃদ্ধি পাবে। আমাদের দ্বিতীয় বৃহৎ জনসংখ্যার এই‌দেশ এমন দুর্যোগে লড়াই করার আত্মশক্তি পাবে। তাই প্রধানমন্ত্রীর অনুরোধ সকল ভারতবাসী বৈদ্যুতিক শক্তি নিভিয়ে প্রদীপ বা মোমবাতি জ্বালিয়ে শুভ শক্তিকে আহ্বান জানান। তবে হাতের কাছে যদি প্রদীপ বা মোমবাতি না থাকে সে ক্ষেত্রে মোবাইলের ফ্ল্যাশ বা টর্চ লাইট জালানো যেতে পারে।

Web Desk

We belong to that group who are addicted to journalism. Behind us, there is no big business organization to support us. Our pens do not flow under any other’s commands.

Related Articles