‘পাবলিক সব বোঝে, ভরসার লোক খোঁজে, আর রামের দলে লাভের লোভে গদ্দাররা গোঁজে, আরে লাভলি!’ – ভোটের ঠিক মুখেই দলত্যাগীদের নিশানা করে গান বাঁধলেন তৃণমূল নেতা মদন মিত্র, যার বক্তব্য কিছুটা এমনই। তাঁর ফেসবুক লাইভের জনপ্রিয়তার রেশ এখন গিয়ে পড়ল গানে, যার কথা ও সুর তাঁর নিজেরই। কুমড়ো হাতে সেই গানের ভিডিও শ্যুটও করা হল আলিপুর হর্টিকালচার গার্ডেনে। তৃণমূল নেতার বক্তব্য, বাংলার মানুষকে ভ্যালেন্টাইন্স ডে উপলক্ষে তিনি উৎসর্গ করলেন এই গান।
বিধানসভা নির্বাচনের আগেই এ রাজ্যের মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দলত্যাগীদের আক্রমণ করার পাশাপাশিও তৃণমূল সরকারের প্রশংসা করেছেন গানের কথার মাধ্যমে। অন্যদিকে তৃণমূল ব্যক্তিত্ব মদন মিত্র শুভেন্দু অধিকারী-রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতো তৃণমূল থেকে বিজেপিতে যাওয়া নেতাদের কুমড়ো, মূলো, ঢ্যাঁড়শের সঙ্গে তুলনা করছেন। একটি সভায় হাতে কুমড়ো নিয়ে মদন মিত্র বলেন, ‘ভিতরটা গেরুয়া, বাইরে সবুজ। তাঁর গাওয়া গানের লাইন এরকম — ‘কুমড়োগুলো ফুলো ফুলো, অনেক দামে বিক্রি হল।’ অন্যদিকে দলবদলের এই মরশুমে এই গান শুনে আপামরভাবে খুশি তৃণমূল সমর্থকরা।
জনপ্রিয় বাংলা গান ‘ফেঁসে গেল কালীরামের ঢোল’ গানটির সুরে মদন মিত্র লিখেছেন, ‘বাজার থেকে কুমড়ো কিনে জিতবি বলে ভাবলি, ওহ লাভলি।’ এই প্রসঙ্গে তিনি জানান, “কেন্দ্রের বিজেপি সরকার হঠাৎ করে কোটি কোটি টাকা দিয়ে কুমড়ো কিনছে! আমাদের কাছে সব খবর আছে, পশ্চিমবঙ্গ থেকে কত কোটি টাকা দিয়ে তাঁরা নেতাদের কিনছেন।” গানের লাইনের মাধ্যমে তৃণমূল নেতা কটাক্ষ করেছেন, ‘কোটি টাকার কুমড়োগুলো, সঙ্গে কিছু ঢ্যাঁড়শ মূলো, আরে বেচবি বলে ভাবলি? ওহ লাভলি!’
প্রসঙ্গত ক্রাউড নেক্সট মিডিয়া আর্টের ব্যবস্থাপনায় এই গানটি তৈরি হয়েছে। এমনকি এই গানে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকেও কটাক্ষ করেছেন মদন মিত্র। গানের কথায় রয়েছে — ‘মোদী, অমিত শাহ, কুমড়োর ঘ্যাঁট খা’। কিন্তু এমন কথা কেন? মদনের উত্তর, ‘নরেন্দ্র মোদী এবং অমিত শাহ সকলের বাড়ি যাচ্ছেন। ৫৫ রকমের খাবার খাচ্ছেন। অথচ পাতে কুমড়ো নেই। তাই আমি বলেছি, মোদী, অমিত শাহ, কুমড়োর ঘ্যাঁট খা।’ যদিও এর পাল্টা কটাক্ষ করতে ছাড়েনি গেরুয়া শিবির। এই গানের ব্যাপারে বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ জানান, ‘কাজ নেই, তাই এ সব করছেন।’
অন্যদিকে ভোটের মুখে নাচ-গানের মাধ্যমেই জনসংযোগে মাতছেন অন্যান্য রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বরা। সম্প্রতি বিজেপির কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক কৈলাস বিজয়বর্গীয়কে হাওড়ার বাগনানে এক গণবিবাহের অনুষ্ঠানে মহম্মদ রফির গান গাইতে শোনা গেছে। উল্লেখ্য, কিছুদিন আগে উত্তরবঙ্গ সফরে গিয়ে আলিপুরদুয়ারে এক গণবিবাহের অনুষ্ঠানে আদিবাসী মহিলাদের নাচের তালে পা মেলাতে দেখা গিয়েছে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। অন্যদিকে আবার উত্তর ২৪ পরগনার অশোকনগরে মতুয়াদের তালে তালে নাচে মেতেছেন তৃণমূল বিধায়ক ধীমান রায়। এই ভিডিওগুলিও ভাইরাল হয়েছে।