দেশনিউজ

পেটের দায়ে কাজে গেছিলেন উত্তরাখণ্ডে, বিপর্যয়ে নিখোঁজ ৬ বাঙালি শ্রমিক, উৎকণ্ঠায় পরিবার

Advertisement
Advertisement

কাজ নেই, অথচ টাকার প্রয়োজন সংসার চালানোর জন্য। তাই বাধ্য হয়েই পূর্ব মেদিনীপুরের মহিষাদলের লক্ষ্যা গ্রামের আট যুবক কাজের খোঁজে উত্তরাখণ্ডে পাড়ি দিয়েছিলেন। সদ্যই চারজন বাড়ি ফিরেছেন। তবে আরও চার যুবক নিখোঁজ বিপর্যয়ের পর থেকে। এখন গোটা গ্রাম তাঁদের ফেরার অপেক্ষায়।

রবিবার ছুটির দিনে মহিষাদলের লক্ষ্যা গ্রামের গুড়িয়া পরিবারে ধীরেসুস্থেই কাজ চলছিল, ঘরের টিভিতে খোলা ছিল খবরের চ্যানেল রাজ্য, দেশ, বিদেশে কী ঘটছে তা জানার জন্য। তাতে সেভাবে কারো মন না থাকলেও, আচমকা মনটা কু গেয়ে ওঠে উত্তরাখণ্ডে বিপর্যয়ের খবর আসতেই। আর মনে আশঙ্কার কারণ, চকদ্বাড়িবেড়িয়া গ্রামের ঘরের ছেলে সুদীপ গুড়িয়া এবং ট্যাংরাখালি গ্রামের লালু জানা, বুলা জানা-সহ চারজন উত্তরাখণ্ডের তপোবন জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রেই যে ওয়েল্ডিংয়ের কাজ করেন। তাঁরা টিভির পর্দায় দেখেন ধৌলিগঙ্গা, ঋষিগঙ্গা ও অলকানন্দার জলে সব তছনছ হয়ে গিয়েছে, সাথে ভেসে গিয়েছে তপোবন জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র। শতাধিক কর্মী নিখোঁজ সেখানে। প্রায় সঙ্গে সঙ্গে পরিজনদের চোখের কোণ ভিজে যায় আতঙ্কে, প্রতিবেশীদেরও মাথায় হাত পড়ে যায়।

সুদীপের পরিজন-প্রতিবেশীরা বিপর্যয়ের খবর পাওয়ামাত্রই তাঁর সঙ্গে ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করেন। তবে তাঁকে ফোনে পাওয়া যায়নি। সুদীপের গ্রামে ফেরার কথা ছিল ১২ ফেব্রুয়ারি। শনিবার রাতেই তাঁর পরিজনদের সঙ্গে কথা হয়। গোটা পরিবার আনন্দে মেতে ছিল ছেলে ঘরে ফেরার খবরে। কিন্তু হঠাৎ করেই যেন সবই বদলে গিয়েছে আচমকা এমন ঘটনায়।

একইরকম পরিবারের অবস্থা ট্যাংরাখালি গ্রামের নিখোঁজ শ্রমিক লালু জানা এবং বুলা জানার। দুর্ঘটনার দিন লালুর কথা হয় বাবা ধ্রুব জানার সঙ্গে সকাল আটটার সময়। তারপর জানা পরিবার দুর্ঘটনার খবর জানতে পারে। বহুবার ফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হয়েছে লালু ও বুলার সঙ্গে। তবে যোগাযোগ সম্ভব হয়নি। এদিকে, মহিষাদলের পাশাপাশি পুরুলিয়ার আড়শার সুমন্ত এবং অশ্বিনী তন্তুবায় নামে দুই যুবক উত্তরাখণ্ডের বিপর্যয়ের পর থেকে নিখোঁজ। তাঁরা কাজ করতে গিয়েছিলেন ঠিকাদার সংস্থার অধীনে। নাওয়া খাওয়াও যেন ভুলে গিয়েছেন পরিবারের প্রত্যেকে কারও কোনো খবর না মেলায়। আপাতত দুশ্চিন্তায় দিন কাটছে তাঁদের, ঘরের ছেলের ঘরে ফেরার অপেক্ষায়।

Related Articles