করোনা মহামারীর জেরে বন্ধ রাখা হয়েছে দেশের সমস্ত রকমের জমায়েত। এই করোনার কোপ পড়েছে ধর্মীয় অনুষ্ঠানগুলিতেও। বেশ কিছু অনুষ্ঠান বাতিল করা হয়েছে। এদিকে বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসব দুর্গাপূজার আর মাত্র ওইদিনের অপেক্ষা। কিন্তু এই করোনার জেরে আদৌ পুজো হবে কিনা তা নিয়ে চিন্তায় রয়েছে বাঙালি। তবে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অবশ্য পুজো হবার আশ্বাস দিয়েছেন। কিন্তু বিশেষ গাইডলাইন মেনে চলতে হবে সবাইকে।
নবান্নে বুধবার সাংবাদিক সম্মেলনে মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন যে সবাইকে আগামী কয়েকদিন সচেতন থাকতে হবে। সামনেই পুজো আসছে সেটা ভাল করে করতে হবে তাই সংক্রমণ কমাতে এখন থেকেই ক্লাবগুলিকে বিশেষ পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।
রাজ্য সরকারের তরফ থেকে দূর্গাপূজার জন্য যে যে গাইডলাইনগুলি দেওয়া হয়েছে, সেগুলি হল-
১) পুজো কমিটিগুলিকে বাজেট কমিয়ে আনতে হবে। সেই অর্থ জনসাধারণের কাজে ব্যবহার করতে পারে।
২) প্রশাসনকে নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে কুমোরটুলিকে সঠিক ভাবে স্যানিটাইজ করার। ঠাকুর আনতে যাওয়ার সময় একসঙ্গে অনেকে মিলে না যাওয়ার অনুরোধ জানিয়েছে ‘ফোরাম ফর দুর্গোৎসব’।
৩) প্যান্ডেল ও প্রতিমার উচ্চতা খুব বেশি নয়। প্রতিদিন অন্তত একবার পুরো প্যান্ডেল ও প্রতিমা স্যানিটাইজ করার ব্যবস্থা করতে হবে। প্রতিমার উচ্চতা বেশী হলে স্যানিটাইজ করতে সমস্যা হবে।
৪) পুজোতে যে সকল কর্মী কাজ করবেন তাদের প্রত্যেকের স্বাস্থ্য সঠিক রাখার দায়িত্ব পুজো কমিটিকে নিতে হবে। থার্মাল চেকিং থেকে বিভিন্ন প্রতিষেধক পুজো কমিটিকে সবকিছুই খেয়াল রাখতে হবে।
৫) স্বেচ্ছাসেবকদের বেশি নজর রাখতে হবে যাতে দর্শকদের সবার মুখে অবশ্যই মাস্ক থাকে। সম্ভব হলে প্রবেশ এবং প্রস্থানের পথে তাঁদের হাতে স্যানিটাইজার দিতে হবে। মূল প্রবেশ পথে একাধিক থার্মাল গান ব্যবহার করতে হবে। যাদের পক্ষে সম্ভব তারা অবশ্যই পুজোর দিনগুলিতে দর্শকদের লাইনের ওপর স্যানিটাইজার স্প্রে করতে পারেন ।
৬) কোনো প্রতিযোগিতার বিচারের সময় বিশেষ করে ফাইনাল রাউন্ডে ১৫ জনের বেশি বিচারক থাকবেন না। বিচারকদের ও থার্মাল স্ক্রিনিং করতে হবে। পুরস্কার যতটা স্বল্প বাজেটে নান্দনিক উৎকর্ষতার সাথে করা যায় তা খেয়াল রাখতে হবে।
৭) একবারে সর্বাধিক ২৫ জনকে প্যান্ডেলে প্রবেশ করানো যাবে। পুজোর আগে থেকে প্রচার করতে হবে যাতে দর্শকরা সারাদিন ধরে ঠাকুর দেখেন এবং শুধু রাতের কয়েকঘণ্টা ঠাকুর দেখার জন্যে বেছে না নেন তাহলে ভিড় অনেক কম হবে।
৮) সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে হবে।
৯) প্যান্ডেলের প্রবেশ পথ ব্যারিকেড দিয়ে যতটা সম্ভব দীর্ঘ করতে হবে।
১০) শিল্পী ও কর্মকর্তারা এমন ভাবে মণ্ডপ তৈরি করতে বলা হয়েছে, যেন দর্শক মণ্ডপে না প্রবেশ করে বাইরে থেকেই ভালভাবে প্রতিমা দর্শন করতে পারেন ।