নিউজরাজনীতিরাজ্য

কখন আমার ভাইপো মুখ্যমন্ত্রী হবে, এই একটাই অপেক্ষা মমতা দিদির, : অমিত শাহ

Advertisement
Advertisement

ভোটের মুখে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ ফের বাংলা সফরে। কোচবিহারে এসে মাল্যদান করেন রাসমেলা ময়দানের কাছেই পঞ্চানন বর্মার মূর্তিতে। সেখান থেকে রাজনৈতিক জনসভায় যোগ দেন। তিনি রথযাত্রার সূচনা করেন জনসভা শেষে। গ্রেটার কোচবিহার পিপল্‌স অ্যাসোসিয়েশনের নেতা অনন্ত রায়ের অমিতের এই সভায় থাকার কথা। তাঁর সভাস্থলে ভিড় জমিয়েছেন প্রচুর অনুগামী সমর্থক। অন্য দিকে কোচবিহার শহরের বিভিন্ন প্রান্তে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও অমিত শাহ বিরোধী ব্যানার ঘিরে চাঞ্চল্য ছড়ায় অমিতের সভার আগেই।

ওই মঞ্চ থেকে অমিত শাহের বক্তব্য, “একটা আর্জি নিয়ে এসেছি কোচ-রাজবংশী, গোর্খা ভাইদের কাছে। আপনারা শপথ নিন, এ বার পরিবর্তন আনতেই হবে। সবাই মিলে প্রতিজ্ঞা করুন, চলো পাল্টাই। ছুঁড়ে ফেলে দিন তৃণমূল সরকারকে। আমরা বাংলাকে পাঁচ বছরে সোনার বাংলা বানিয়ে দেব। পাঁচ বছরে মোদীজি প্রচুর টাকা দিয়েছেন। কিন্তু সেই সব টাকা আত্মসাৎ করে নিয়েছেন মমতা দিদি আর তাঁর ভাইপো। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সব সময় খালি ঝগড়া করেন মমতা দিদি। তাতে রাজ্যের উন্নতি হবে না। বাংলায় দুর্গাপুজো করতে গেলে কি হাইকোর্টে যেতে হবে? এখানে এটা চলবে না মমতা দিদি। এখানে সরস্বতী পুজোও হবে, রামনবমীও হবে। কখন আমার ভাইপো মুখ্যমন্ত্রী হবে, এই একটাই অপেক্ষা মমতা দিদির। এত দিন হয়তো ঘোষণাই করে দিতেন আমাদের রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ লড়াই না করলে। কিন্তু ভয় পেয়ে গিয়েছেন এখন। এ বার একটা বিকল্প বেছে নেওয়ার সময় এসেছে, মোদীজির বিকাশ আর মমতার বিনাশ-এর মধ্যে।

“আমাদের ১৩০ জনেরও বেশি কর্মীকে খুন করা হয়েছে। কিন্তু এখানে আমি ঘোষণা করছি, যারা খুন করেছে, তাদের বেছে বেছে জেলে পোরা হবে। আর ভোটের সময় এ বার আমরা দেখে নেব। কেউ আপনাদের ভোট দানে বাধা দিতে পারবে না। এখানে এসে আমি উত্তরবঙ্গে অনেক অভাবী মানুষ দেখেছি। মোদী সরকার আয়ুষ্মান ভারত যোজনা তৈরি করেছে। কিন্তু আপনি সেটা চালু করতে দেননি মমতা দিদি। আমরা ক্ষমতায় এলেই আয়ুষ্মান ভারত চালু হবে, আপনারা চিন্তা করবেন না। সম্প্রতি পশ্চিমবঙ্গে এসে প্রধানমন্ত্রী মোদী একটা বড় ঘোষণা করেছেন। বকেয়া টাকাও দিয়ে দেওয়া হবে কৃষকদের পিএম কিষান সম্মান নিধি প্রকল্পের। কিন্তু দেরি হয়ে গিয়েছে, পাওয়া উচিত ছিল আগেই। বিজেপি ক্ষমতায় এসে প্রথম মন্ত্রিসভাতেই ওই বকেয়া টাকা এবং কিষান সম্মান নিধির টাকা দেওয়া হবে। মমতা দিদি এমন করছেন, যেন এ রাজ্যে জয় শ্রীরাম বলা অপরাধ। কেন? জয় শ্রীরাম কি পাকিস্তানে বলা হবে? আপনি এমন করছেন, কারণ একটা বিশেষ সমাজের তোষণ করে তাঁদের ভোট পেতে চান। কেন? অন্য সম্প্রদায় কি ভোটার নন?”

“একটা টুরিস্ট সার্কিট গড়ে তোলা হবে মদনমোহন মন্দির ও কামতেশ্বরী মন্দির এবং পঞ্চানন বর্মার জন্মস্থল ঘিরে। এখানে সারা ভারত থেকে পর্যটকরা আসবেন। মোদী সরকার ‘সবকা সাথ, সবকা বিকাশ’ এই মন্ত্রে এগিয়ে যাচ্ছে। সব সমাজ, সব ধর্মের প্রতি সম্মান দিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে। এই পরিবর্তন যাত্রা বাংলায় পিসি-ভাইপোর দুর্নীতি অবসানের যাত্রা। সোনার বাংলা গড়ার পরিবর্তন যাত্রা। ৫ বছরে আমরা বাংলাকে সোনার বাংলা করে আপনাদের উপহার দেব। এই সেই ভূমি, যেখানে মুঘলদের বিজয়যাত্রা রুখে দিয়েছিল। নারায়ণী সেনা সেই সময় এই ভূমিকে রক্ষা করার জন্য যে সাহস দেখিয়েছিল, তাকে সম্মান জানাতে আধাসেনায় নারায়ণী ব্যাটেলিয়ন গঠন করবে। আজ শুরু হচ্ছে চতুর্থ পরিবর্তন যাত্রা। তৃণমূলের নেতারা বলছিলেন, পরিবর্তন যাত্রা কেন হবে। সব ঠিকই তো চলছে। কোচ-রাজবংশী সম্প্রদায়ের উদ্দেশে বলতে চাই, এটা কোনও মুখ্যমন্ত্রী পরিবর্তনের যাত্রা নয়, কোনও সরকার পাল্টানোর যাত্রা নয়। এটা বাংলার অবস্থা পরিবর্তনের যাত্রা। অনুপ্রবেশ রুখতে পারবেন না মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এটা অনুুপ্রবেশ বন্ধের পরিবর্তন যাত্রা। এটা সেই পরিবর্তনের যাত্রা যেখানে, মানুষ তো দূর, পাখিও ঢুকতে পারবে না।”

Related Articles