এখনও পৃথিবীতে সৎ মানুষ আছেন। আর তার প্রমাণ বহুবার মিলেছে। হতদরিদ্র হওয়া সত্বেও তারা কখনও লোভের ফাঁদে পা দেননি। এবারও ঠিক এমন ঘটনাই ঘটল। রাস্তার ধারে ৫০০ টাকার নোটের বান্ডিলে মোট ২১ হাজার টাকা পেয়েও থানায় জমা দিয়ে এলেন এই ব্যক্তি। উত্তরপাড়ার ক্রাউন গেটের কাছে জিটি রোড লাগোয়া জে কে স্ট্রিটের একটা চার বাই আট ফুটের সেলুন রয়েছে এই ব্যক্তির। এনার নাম পিন্টু মান্না। বয়স ৪২।
উত্তরপাড়ার বাসিন্দা তিনি। মা, স্ত্রী ও সন্তানকে নিয়ে তাঁর ছোট্ট সংসার। দরিদ্রতার মধ্যে দিয়েই তাঁর সংসার চলছে। করোনা মহামারীর জেরে দীর্ঘদিন তাঁর সেলুন বন্ধ ছিল। বহু কষ্টে সেইসময় সংসার চালিয়েছেন তিনি। তবে এখন দোকান খুললেও খদ্দেরের সেভাবে দেখা নেই। একেকদিন কেউ আসেননি সেলুনে, সেদিন খালি হাতেই ঘরে ফিরতে হয়েছে তাঁকে। এইবছর উৎসবের মুখে বাঙালির সেই চেনা ‘পুজোর ছাঁট’ দেবারও ভিড় ছিল না সেলুনে।
তবে ষষ্ঠীর দিন সকালেও চুপচাপ দোকানের বাইরে বসেছিলেন পিন্টু। পুজো চলে আসলেও সেদিনও খদ্দের নেই। তাই মনমরা হয়ে সে দোকানের বাইরে বসেছিলেন। হঠাৎ তাঁর চোখে পড়ে, দোকান থেকে কিছুটা দূরেই রাস্তায় একটি ৫০০ টাকার বান্ডিল পড়ে আছে। আর সেটা দেখে পিন্টু এগিয়ে যান। তবে হঠাৎই একটা মাঝবয়সি লোক এসে পা দিয়ে চাপা দিয়ে দেন সেই বান্ডিল। আর সেই টাকা নিজের বলে দাবিও করেন।
তবে কত টাকা আছে তা জিজ্ঞাসা করাতে মানুষটি উত্তর দিতে পারেননি। এরপর পিন্টু আশপাশের দোকানদারদের সাক্ষী রেখে টাকা গুনে দেখেন যে মোট ২১ হাজার টাকা আছে। সবার কথামত সে সেই টাকা নিজের কাছেই কিছুদিন রেখে দেন। যদি কেউ চাইতে আসে। এমনকি ফেসবুকেও তিনি পোস্ট করেন। তবে শেষমেষ কোনো কিছু না পেয়ে গত শুক্রবার স্ত্রী রূপালিকে সঙ্গে নিয়ে থানায় যান। পুরো ঘটনাটা জানান আইসি সুপ্রকাশ পট্টনায়েককে। আর সেই টাকা থানায় জমা দিয়ে আসেন। তাঁর এই সততাকে কুর্নিশ জানিয়েছে পুলিশ।