বাংলায় বাম সরকারের ৩৪ বছরের শাসনের অবসান ঘটিয়ে ২০১১ সালে ক্ষমতায় আসে তৃণমূল কংগ্রেস। তৃণমূল কংগ্রেসের সরকারে আসার পেছনে বড় ভূমিকা নিয়েছে জঙ্গলমহলের মানুষ। জঙ্গলমহলে নিজেদের শক্তি বাড়িয়ে ৩৪ বছর শাসন চালানো বাম সরকারকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছিল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দল তৃণমূল কংগ্রেস। এই জঙ্গলমহলে একসময় নায়ক ছিলেন ছত্রধর মাহাতো। বহু বছর কারাবাস কাটানোর পর তৃণমূল কংগ্রেসের রজ্যকমিটিতে জায়গা করে নিলেন তিনি।
২০১৯ শে লোকসভা নির্বাচনে খুব একটা ভালো ফল হয়নি তৃণমূলের। যে জঙ্গলমহলের ওপর ভর করে সরকার গঠন করেছিল তৃণমূল সেই জঙ্গলমহলের দুটি লোকসভা পুরুলিয়া এবং ঝাড়গ্রাম তৃণমূলের হাতছাড়া হয়। এককথায় জঙ্গলমহলের মানুষ তৃণমূল সরকারের দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছিল। কিন্তু সামনে ২০২১ বিধানসভা ভোট, যা তৃণমূলের কাছে এখন পাখির চোখ। তাই ২০২১ শে কোনো খামতি রাখতে চাইছেনা তৃণমূল। আগামী বিধানসভা ভোটকে লক্ষ্য করে দলীয় সংগঠনে বড়সড় পরিবর্তন করলেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানে যথেষ্ট গুরুত্ব পেয়েছে জঙ্গলমহল।
ঝাড়গ্রামে প্রায় ৩৪ শতাংশ কুর্মি সম্প্রদায়ের মানুষ রয়েছে। কিন্তু পরিসংখ্যান বলছে গত লোকসভা নির্বাচনে এই সম্প্রদায়ের মানুষ তৃণমূলের দিক থেকে মুখ সরিয়ে নিয়েছিল। যার ফলস্বরূপ ঝাড়গ্রাম লোকসভা তৃণমূলের হাত থেকে ফসকে গেছে। ছত্রধর মাহাতোকে নিজেদের দলে টেনে কুর্মি সম্প্রদায়ের মানুষকে তৃণমূলের দিকে টানার পরিকল্পনা করছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিশেষজ্ঞদের মতে, এটাই মমতার মাস্টারস্ট্রোক।
এছাড়া রবীন টুডুর গ্রহণযোগ্যতা দিন দিন জঙ্গলমহলে কমার কারণে এবং ভোটব্যাঙ্ককে আরও শক্ত করতে রবীন টুডুর স্ত্রী বিরবাহা সোরেনকে জেলা সভাপতি পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হল। ঝাড়গ্রামের জেলা সভাপতি পদে বসানো হল দুলাল মুর্মুকে। এদিকে অভ্যন্তরীণ গন্ডগোল মেটাতে না পারার পাশাপাশি দলীয় সংগঠনে খুব একটা নজর ফেলতে পারেনি পুরুলিয়া জেলার জেলা সভাপতি শান্তিরাম মাহাতো। এই কারণে তাকে জেলা সভাপতি পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হল এবং ওই পদে বসানো হল গুরুপদ টুডুকে।