দিল্লির নির্ভয়া গণধর্ষণের স্মৃতি ফের একবার উস্কে দিল উত্তরপ্রদেশের হাথরস গণধর্ষণের ঘটনা। ১৫ দিন মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ে অবশেষে মৃত্যুর কাছে হার মানে গণধর্ষিতা তরুণী। যোগী রাজ্যে কেন হলো গণধর্ষণ সেই প্রশ্নে তোলপাড় রাজ্য রাজনীতি। এরই মাঝে শুক্রবার নির্যাতিতার পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে যান তৃণমূলের প্রতিনিধিরা। কিন্তু সেখানে গিয়ে পুলিশি বাধার মুখে পড়ে তারা। আর তারপরেই যোগী সরকারকে একহাত তৃণমূল সাংসদ নুসরত জাহানের।
হাথরস গণধর্ষণকাণ্ডে তোলপাড় দেশ থেকে রাজ্য। এমনকি প্রশ্ন উঠেছে পুলিশের ভূমিকা নিয়েও। এইসবের মাঝেই শুক্রবার হাথরসে নির্যাতিতার পরিবারের সঙ্গে দেখার করার উদ্দেশে রওনা দেন তৃণমূল সাংসদ ডেরেক ও’ব্রায়েন, কাকলি ঘোষ দস্তিদার, প্রতিমা মণ্ডল ও মমতা ঠাকুর। গ্রামে ঢোকার আগেই তাঁদের আটকে দেয় পুলিশ। তাঁদের সঙ্গে ধস্তাধস্তিও হয় পুলিশের। ধাক্কাধাক্কিতে পড়ে যান ডেরেক। পশ্চিমবঙ্গের শাসক দলকে ঢুকতে না দেওয়া একদম ভালোভাবে নেয়নি ঘাসফুল শিবির।
বাধা পাওয়ার পর উত্তরপ্রদেশের পুলিশকে ধীক্কার জানিয়ে নুসরত জাহান টুইট করে লেখেন, ‘এই ঘটনার পর এখনও কী লজ্জা করছে না। উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথকে প্রশ্ন আপনি কি এখনও গভীর নিদ্রায় ঘুমিয়ে’। উল্লেখ্য, হাথরস গণধর্ষণের ঘটনার প্রতিবাদে আজ শনিবার কলকাতার রাজপথে নামছেন খোদ তৃণমূল নেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
.@kakoligdastidar di putting up a strong fight along with other @AITCofficial leaders. @Uppolice, are you ashamed yet? @myogiadityanath ji, are you still in your deep slumber? pic.twitter.com/nlLZh4BQ7N
— Nusrat Jahan Ruhi (@nusratchirps) October 2, 2020
প্রসঙ্গত, গত ১৪ সেপ্টেম্বর হাথরস এলাকায় বাড়ির কাছেই একটি জমিতে নির্যাতিতা তার মায়ের সঙ্গে জমিতে ঘাস কাটতে গিয়েছিলেন। মায়ের থেকে কিছুটা দূরে ছিলেন সে এমনটাই নির্যাতিতার পরিবার সূত্রে খবর। সেই সময় পিছন থেকে তাঁকে আক্রমণ করে কয়েক জন দুষ্কৃতী। গলায় ওড়না পেঁচিয়ে টানতে টানতে একটি বাজরা খেতের মধ্যে নিয়ে গিয়ে নৃশংস অত্যাচার চালায় ও গণধর্ষণ করে। পরে তার মা তাকে খুঁজতে এলে উদ্ধার করেন অচৈতন্য অবস্থায়।
এরপর নির্যাতিতাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হলে জেএনএমসি হাসপাতালের চিকিৎসকরা জানান, ধর্ষণে বাধা দেওয়ায় নির্মম অত্যাচার চালানো হয়েছে তার উপর। প্রচণ্ড মারধর করা হয়েছে। শ্বাসরোধ করে খুনের চেষ্টাও করে দুষ্কৃতীরা। মুখের একাধিক জায়গা, জিভে কামড়ের গভীর ক্ষত। শিরদাঁড়া ও ঘাড় মারাত্মক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত। অসাড় ছিল দুই পা এবং একটি হাত। আইসিইউ-তে রেখে সব রকম চেষ্টা চালানো হচ্ছিল তাকে বাঁচানোর। কিন্তু অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় সিদ্ধান্ত হয় দিল্লির হাসাপাতালে পাঠানোর, পাঠানোও হয় সেখানে। কিন্তু শেষ রক্ষা হয় না। গত মঙ্গলবার সকালে হাসপাতালেই মৃত্যু হয় তার। যোগী রাজ্যে এই ঘটনায় ক্ষোভে ফুঁসছে গোটাদেশ।