নিউজরাজ্য

পেটে খিদের জ্বালা, রাস্তায় ঘুরে চা বিক্রি করছে খুদে স্কুলপড়ুয়া

Advertisement
Advertisement

লকডাউনের জেরে থমকে গিয়েছে দেশ। বন্ধ হয়ে গিয়েছে সমস্ত গাড়ি ঘোড়া। এই পরিস্থিতিতে বাবার টোটোর চাকাও আর ঘুরছে না। এর ফলে থেমে গিয়েছে সংসারের চাকাও। তাই সংসারের সংকট কাটাতে এগিয়ে এসেছে খুদে স্কুলপড়ুয়া। সংসার টানতে ‌তাই ‘সবুজসাথী’ প্রকল্পে পাওয়া সাইকেলে শহরে ঘুরে ঘুরে চা বিক্রি করছে মালদহ জেলা স্কুলের নবম শ্রেণির পড়ুয়া দীপঙ্কর মণ্ডল। সেই পড়ুয়াকে জিজ্ঞাসাবাদ করায় সে বলে, ‘রেশনে চাল, গম মিলছে ঠিকঠাক ভাবেই। তবে ভাত রুটি খেতে দরকার আনাজও। সেই টাকা জোগাড় করতেই চা বিক্রি করছি’।

দীপঙ্কর ইংরেজবাজার শহরের ১২ নম্বর ওয়ার্ডের পুড়াটুলিতে থাকে বলে জানা গিয়েছে। চার ভাইবোন ও বাবা-মা কে নিয়ে বড় সংসার দীপঙ্করের। ভাই বোনদের মধ্যে দীপঙ্কর সব থেকে ছোট। দুই দিদির এক জনের বিয়ে হয়ে গিয়েছে এবং এক দিদি মালদহ মহিলা কলেজে পড়াশোনা করেন। দাদা সদ্য মাধ্যমিক পরীক্ষা দিয়েছে। দীপঙ্করের বাবা টোটো চালিয়ে সংসার চালানোর পাশাপাশি জোগাড় করে ছেলেমেয়েদের পড়াশোনার খরচও। অভাব থাকলেও কোনমতে টেনেটুনে চলছিল সংসার। কিন্তু করোনা ভাইরাসের কারণে এক নিমিষে বন্ধ হয়ে যায় সংসারের চাকা। এই পরিস্থিতিতে সংসারের হাল ফেরাতে এলাকায় ঘুরে ঘুরে চা বিক্রি করে দীপঙ্করের বাবা।

তবে তাতেও সমস্যার সমাধান না হলে দীপঙ্করও এগিয়ে আসে সাহায্যের জন্য। সাইকেল নিয়ে ইংরেজবাজার শহরের একপ্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে ঘুরে চা বিক্রি করে বেড়ায় সে। পরনে স্কুলের সাদা জামা, খাকি রঙের প্যান্ট এবং পিঠে চায়ের ফ্লাক্স। সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত শহরে ঘুরে ৩০-৩৫ কাপ চা বিক্রি করে দীপঙ্কর। চা বিক্রির সব টাকা তুলে দেয় সে মায়ের হাতে। এই ঘটনায় মালদহ জেলা স্কুলের শিক্ষক অমিত চক্রবতী বলেন, “আমাদের স্কুলে সাধারণ পরিবারের বহু ছেলেই পড়ে, যারা লকডাউনের জেরে চরম অসহায় হয়ে পড়েছে। আমরা যতটা সম্ভব তাদের পাশে থাকার চেষ্টা করছি।”

Web Desk

We belong to that group who are addicted to journalism. Behind us, there is no big business organization to support us. Our pens do not flow under any other’s commands.

Related Articles