“চুরি হয়েছে ঘরের লক্ষ্মী”, আর চুরি করেছে তৃণমূল। বিস্ফোরক অভিযোগ বিষ্ণুপুরের বিজেপি সাংসদ সৌমিত্র খাঁ-এর। সোমবার সৌমিত্র বাবুর স্ত্রী সুজাতা দেবী যোগদান করলেন তৃণমূলে। আর তারপরেই সাংবাদিক সম্মেলনে কার্যত ভেঙে পড়লেন গেরুয়া শিবিরের সাংসদ।
স্বামী-স্ত্রীর রাজনৈতিক মতামতের পার্থক্যের কারণে দলত্যাগ নতুন নয়। এর আগে শোভনবাবু তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন, আর এবার সুজাতা দেবী বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দিলেন। এরপর সুজাতা দেবী সংবাদমাধ্যমকে বলেন, “বিজেপি যোগ্য লোককে সম্মান দিতে জানে না। সেখানে যাঁরা নিজের সুযোগ সন্ধানে ব্যস্ত তাঁরাই ক্ষমতা পাচ্ছেন। লড়াই করে যাঁরা সংগঠন দাঁড় করিয়েছিলেন আজ তাঁরা বঞ্চিত। এখন থেকে আমি দিদির নেতৃত্বে কাজ করবো”। বিজেপিতে পদ না পেয়ে গোঁসা হয়েই যে তিনি এবার ঘাস ফুল শিবিরে তা বুঝিয়ে দিয়েছেন সুজাতা খাঁ।
সৌমিত্র-সুজাতার রসায়ন বেশ ভালো। একাধিক বার সোশ্যাল মিডিয়ায় একসাথে দেখাও গেছে তাদের৷ এবার সেই রসায়নে বন্ধক সৃষ্টির জন্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দলকেই নিশানা করলেন সৌমিত্র। আক্ষেপের সুরে বললেন, “১০টা বছর তোমার নাম বলতে পাগল ছিলাম। আমার কথা না শুনেই এমন সিদ্ধান্ত নিলে। রাজনীতির মারপ্যাঁচে আটকে গেলে। কাদের কথা শুনে এমন ডিসিশন নিলে?” সৌগতবাবু হাত ধরে তৃণমুলে সুজাতা দেবী। সৌমিত্র বাবুর মতে, পরিবার ভাঙুক তাতে ক্ষতি নেই। ডিভোর্সের চিঠি পাঠাবেন উল্লেখ করে জানালেন, “সুজাতাকে খাঁ পদবী থেকে মুক্তি দিলাম। ও আমার দুর্বলতা ছিল। এরপর আর কোনো পিছুটান নেই। ফলে ভয়ডরহীন হয়ে ভারতীয় জনতা পার্টির হয়ে কাজ করতে পারবো, আত্ম বলিদান দিতে পারবো।”
স্ত্রীকে বিবাহবিচ্ছেদের নোটিশ পাঠাবেন। তার আগে বললেন, “রাজনীতি করতে করতে কখন যে নিজের ঘরের লক্ষ্মীটাই চুরি হয়ে গেল, বুঝতে পারলাম না। তবে ও ভালো করলো না।” রাজনৈতিক মতপার্থক্য থাকা সত্ত্বেও স্ত্রীর জন্য ভালোবাসাই ধরা পড়লো সৌমিত্র বাবুর কথায়। আবদার জানালেন, “দয়া করে সুজাতার নিরাপত্তার দায়িত্ব নেবেন আপনারা। তাঁকে যেন খুন না হতে হয় বা কোনো খারাপ কাজ না করতে হয়। দেশের স্বার্থে নিজের সংসারও ত্যাগ করলাম।”
সবমিলিয়ে একুশের বিধানসভা ভোটের আগে জমজমাট বাংলার রাজনৈতিক মহল। পারদ চড়ছে সবুজ-গেরুয়া-লাল সব মহলেই।