করোনা প্রতিরোধে বর্তমানে দেশজুড়ে চলছে লকডাউন। এই পরিস্থিতিতে সবথেকে বেশি সমস্যার সম্মুখীন হয়েছেন দেশের দরিদ্র দিন আনা দিন খাওয়া শ্রেণীর মানুষরা। বন্ধ রয়েছে সমস্ত কাজের বাজার। বৃহৎ, ক্ষুদ্র সব ধরনের শিল্প থেকে শুরু করে কলকারখানা সমস্ত কিছুই রয়েছে বন্ধ। আগামী ৩ রা মে পর্যন্ত চলবে এই লকডাউন। এই পরিস্থিতিতে এমন অনেক মানুষ আছে যাদের খাবারের অত্যন্ত প্রয়োজন অথচ লজ্জায় চাইতে পারছেন না। লকডাউন দীর্ঘমেয়াদি হওয়ার খাবারের টান পড়েছে তাদের বাড়িতে। এ পরিস্থিতি বুঝতে পেরে এক অভিনব পন্থা বেছে নিলেন বীরভূমের সমাজসেবী তৃণমূল নেতা। গরিব মানুষের লজ্জা নিবারণ ও যথেষ্ট খাবারের ব্যবস্থা এই দুটো দিকেই ভারসাম্য বজায় রেখে নয়া উদ্যোগ নিল সেই তৃণমূল নেতা। সম্পূর্ণ বিনামূল্যে ‘ফ্রি বাজার’ তৈরি করলেন তিনি।
এই বাজার থেকে সমাজের দরিদ্র শ্রেনীর মানুষ যাদের খাবারের অভাব তারা তাদের প্রয়োজন মতন খাদ্য সামগ্রী সংগ্রহ করে বাড়ি নিয়ে যেতে পারবে। এজন্য কোন টাকা পয়সা দিতে হবে না। তবে বাজারে প্রবেশের আগে কিছু নিয়ম মেনে চলতে হবে। বাজার করার আগে যথাযথভাবে স্যানিটাইজার দিয়ে হাত ধুয়ে নিতে হবে এবং বাজার করার সময় মুখে মাস্ক পড়তে হবে ও সামাজিক দূরত্বের নিয়ম বজায় রাখতে হবে। নানুরের সমাজসেবী তৃণমূল নেতা কাজল শেখের উদ্যোগে এই ব্যবস্থা করা হয়েছে। নানুরের পাপড়ি গ্রামের এক মাদ্রাসার মাঠে খোলা হয়েছে এই ‘ফ্রি বাজার’।
এই বাজার তৈরির আরো একটি মূল উদ্দেশ্য হলো যাতে ওই গ্রামে মানুষ প্রয়োজনের বাইরে যেতে না পারে। এতে গ্রামে করোনা ভাইরাস প্রতিরোধ সম্ভব হবে। এমন উদ্যোগ গ্রহণ করার পর কাজল শেখ জানান, “গ্রামের বিভিন্ন সমাজসেবী মানুষের সহযোগিতায় চালানো হচ্ছে এই বাজার। যতদিন লকডাউন থাকবে ততদিন পর্যন্ত এই বাজার থাকবে। প্রথমে আমরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে ত্রাণ সামগ্রী দিয়ে আসার সিদ্ধান্ত এবং সেই মতো কিছুদিন কাজও করেছিলাম। কিন্তু তাতে আমরা সবার সমস্যা সমাধান করতে সক্ষম হচ্ছিলাম না। এতে অনেক মানুষই ছিল যাদের বাড়িতে খাবার নেই অথচ তারা ত্রাণের খাদ্য সামগ্রী নিতে লজ্জা পাচ্ছিল। ব্যাপারটি লক্ষ্য করেই আমরা ফ্রী বাজার তৈরির পরিকল্পনা গ্রহণ করি। এর ফলে কোন মানুষকে লজ্জায় পড়তে হবে না এবং তাদের চাহিদাও যথাযথভাবে পূরণ হবে”। প্রথমে কিছুটা জায়গায় এই বাজার করা হয়েছিল। কিন্তু তাতে দেখা যাচ্ছে প্রচুর মানুষ সামাল দেওয়া সম্ভব হচ্ছিল না। এরপরেই বাজার সরিয়ে নিয়ে আসা হয় নানুরের ওই মাদ্রাসার মাঠে।