দেসরাজ বৃদ্ধ অটোচালক। অটো চালান দিনভর, রাতে শুয়ে পড়েন সেই অটোতেই। কারণ, কোনও বাড়ি নেই মহারাষ্ট্রের বাসিন্দা দেসরাজের। নিজের বসত বাড়িটা বেচে দিয়েছেন নাতনির স্বপ্ন পূরণ করতে! কিন্তু তারপরেও মুখে দরাজ হাসি দেসরাজের, নেই কোনও অভিযোগ, নালিশ। নেটিজেনরাও বিস্মিত তাঁর জীবনীশক্তিতে। অনেকেই বৃদ্ধ ও তাঁর পরিবারকে সাহায্য করতে চান সোশ্যাল মিডিয়ায় দেসরাজের কাহিনী সামনে আসার পর।
জীবন সদয় ছিল না দেসরাজের প্রতি। দুই ছেলের মৃত্যু হয় কয়েক বছরের ব্যবধানে। ৬ বছর কাজের জন্য বড় জন আগে বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলেন, কিন্তু ফেরেননি আর। পরে উদ্ধার হয় তাঁর দেহ। এই ঘটনার ২ বছর পর ছোট ছেলেও আত্মঘাতী হন। এরপর একা দেসরাজের ওপর দায়িত্ব এসে পড়ে দুই পুত্রবধূ এবং নাতি-নাতনিদের। অসুস্থ স্ত্রীর চিকিৎসার খরচ ছিল পাশাপাশি।
দেসরাজ মুম্বইয়ের খার এলাকায় অটো চালান। সব মিলিয়ে হাজার দশেক উপার্জন করেন মাস শেষে। এর মধ্যে নাতি-নাতনিদের পড়াশোনার খরচ চালাতেই ৬,০০০ টাকা চলে যায়। বাড়িতে ৭ জন সদস্য। কোনওক্রমে সংসার চলছিল বাকি ৪,০০০ টাকায়। কিন্তু সমস্যা হয় যখন দ্বাদশের পরীক্ষায় দারুণ ফল করার পর দেসরাজের বড় নাতনি বি.এড কোর্স করতে দিল্লিতে যেতে চায়। সাধ থাকলেও দেসরাজ জানতেন তাঁর সামর্থ্য নেই। তাই সাধ মেটাতে বাধ্য হয়ে মাথার উপরের ছাদটুকুও বিক্রি করে দিলেন।
বাড়ি বিক্রির টাকায় পড়তে পাঠালেন নাতনিকে আর গ্রামে এক আত্মীয়ের বাড়িতে পাঠিয়ে দিলেন পরিবারের বাকি সদস্যদের, সাথে নিজের অটো হল দেসরাজের নতুন ঠিকানা। বৃদ্ধ দেসরাজের কথায়, “সব কষ্ট নিমেষে মুছে যায় যখন ফোন করে নাতনি বলে ক্লাসে সে ফার্স্ট হয়েছে।” “পুরে হফতে সবকো ফ্রি রাইড দুঙ্গা”, বলেন দেসরাজ যখন নাতনির গ্র্যাজুয়েশন পাশ হয়ে যাবে।