একদিকে যখন মানুষের অত্যাচারের কবলে পড়ে প্রাণীকুল বারবার বিপর্যস্ত হচ্ছে, বাজি খাইয়ে হত্যা করা হচ্ছে হাতি, শিয়াল, গরু যখন মানুষের বিবেক বুদ্ধি বিবেচনা তলানিতে এসে ঠেকছে তখন কিছু মানুষ প্রমান করে দিচ্ছে মানুষের মানবিকতা এখনো বেচে আছে। মুদ্রার উভয় পিঠের মতো ভালো খারাপ নিয়ে অবস্থান। যখন এরকম নৃশংসতার খবর শুনে আমরা আতঙ্কিত হচ্ছি তখন এই ঘটনা মনে কিছুটা শান্তি যোগায়।
কেরালার প্রদীপ যে ছোটবেলা থেকেই রাস্তার কুকুর বিড়াল দিয়ে ভালোবাসতেন। প্রথম একটি কুকুরকে নিজের বাড়িতে আশ্রয় দিয়ে তার যাত্রা শুরু হয়েছিল, বর্তমানে সেই সংখ্যাটা 15 কে দাঁড়িয়েছে। তিনি জানিয়েছেন কোন পশু তাদের বাড়িতে এলে তাড়িয়ে দেওয়া হয় না। 2010 সালে তার বাবার মৃত্যুর পর তিনি যেন আরো আঁকড়ে ধরেছিলেন নিরীহ এই পশুদের। বর্তমানে সবমিলিয়ে 43 টি প্রাণী তাদের বাড়িতে রয়েছে।
প্রদীপ কোয়েম্বাটুর একজন ওয়াশিং পাউডার কোম্পানিতে সাপ্লায়ার হিসেবে চাকরি করেন। ভোর সাড়ে চারটে সময় ঘুম থেকে উঠে প্রথমে তার প্রাণীদেরকে নিয়ে হাঁটতে বের হন, যাতে এতগুলো প্রাণী নিরাপদে থাকে, কোনো যানবাহনের দ্বারা আহত না হয়। সঙ্গে 64 বছরের বৃদ্ধা মা তাদের জন্য খাবার তৈরি করেন। আবার কোন পশু যদি আহত হয়ে যায় তার জন্য রয়েছে ব্যবস্থা, তাদের যাতায়াতের জন্য কিনেছেন ট্যাক্সি। এই ব্যক্তি নিজের রোজগার বেশি অংশই খরচ করেন এই নিরীহ প্রাণীগুলোর পিছনে। প্রতিমাসেই পশুদের যত্ন নেওয়ার জন্য তিনি কুড়ি হাজার টাকা ব্যয় করেন।
পশু দত্তক নিতে চাইলে তিনি প্রথমে তাদের থেকে ভোটার আই কার্ড ও জীবনযাত্রা সম্পর্কে জেনে নেন তবেই তাদের হাতে তুলে দেন। প্রদীপ প্রমাণ করে দিলেন যে তার মতো ভালো মানুষ পৃথিবীতে আছে বলেই এখনো পৃথিবীটা এত সুন্দর।