ভারত সরকারের একটি বড় আয়ের উৎস হল ভারতীয় রেল। এখান থেকে বছরে একটা বড় অঙ্কের অর্থ সরকারি কোষাগারে ঢোকে। এছাড়া ভারতে সবথেকে বেশি কর্মসংস্থানের সুযোগ এই রেল ব্যাবস্থার ওপরেই। অনেকদিন থেকে রেলকে বেসরকারিকরণের কথা উঠেছিল। করোনা মহামারীর জেরে দীর্ঘদিন ধরে লকডাউন চলেছে গোটা দেশে। লকডাউনের পর সরকারি কোষাগারে যে টান পড়েছে তার জেরেই যাত্রীবাহী ট্রেনকে বেসরকারিকরণের মতো বড় সিদ্ধান্ত নিতে চলেছে কেন্দ্র। এর জন্য কেন্দ্রের তরফ থেকে বেসরকারি সংস্থাগুলির কাছে প্রস্তাব চেয়ে চিঠিও পাঠানো হয়েছে। কদিন আগেই এই খবর ছড়িয়ে পড়তেই রেলকর্মীরা বিক্ষোভের কথা ভাবছে। আর এর মধ্যেই রেলবোর্ড একধাক্কায় ৫০% শূন্যপদ তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
সুরক্ষা সংক্রান্ত পদের সাথে আপোষ না করে রেলের অন্য পদে নতুন করে আর লোক নিয়োগ হবেনা বলে রেলবোর্ড থেকে প্রতিটি জোনাল ম্যানেজারকে চিঠি এর মাধ্যমে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এই খবর জোনাল অফিসে পৌঁছতেই শোরগোল পড়ে যায়। এর আগে রেল যে রেলের খরচ কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছিল তার জেরে শুরু হয়েছিল কর্মী ছাঁটাইয়ের আশঙ্কা। কিন্তু রেলবোর্ড থেকে জানানো হয়েছে যে কর্মী ছাঁটাই হবেনা। কিন্তু কাজের ধরন অনেকাংশে পরিবর্তন হবে। কোন কোন পদ বিলোপ করা যায়, কত শূন্যপদ রয়েছে, নতুন কত কর্মী নিয়োগ হয়েছে, এগুলো রেলবোর্ড এর তরফে প্রতিটি জোনের থেকে মতামত চাওয়া হয়েছে।
রেলবোর্ড থেকে পরিষ্কার জানানো হয়েছে, রেলের যুক্তি, সুরক্ষা বাদে নতুন পদ তৈরি করা যাবে না। বর্তমান যা পরিস্থিতি তার ওপর ভিত্তি করেই গার্ড, স্টেশন ম্যানেজার সহ বেশকিছু পদ যেগুলো সুরক্ষা ব্যাবস্থার সঙ্গে যুক্ত সেগুলোতেও নতুন করে নিয়োগ হবেনা বলেও জানানো হয়েছে। ইতিমধ্যেই দক্ষিণ পূর্ব রেল ৩৬৮১ পদ বিলোপ করা হয়েছে এবং সদর দফতরে প্রায় ৩৬৮১ পদে বিলোপের প্রক্রিয়াও শুরু করে দিয়েছে রেলবোর্ড।
দিন দিন দেশে বেকারত্বের হার বেড়েই চলেছে। তার মাঝে রেলের এই সিদ্ধান্ত বেকার সমাজের ওপর অনেকটাই প্রভাব ফেলবে বলে মনে করছে বিশেষজ্ঞরা। এর কারণ ৩৫ হাজার শূন্যপদে নিয়োগ রেলের, আটকে পড়ে আছে প্রায় ১.২৫ কোটি আবেদন। এইসমস্ত পদে নিয়োগ হবে তা নিয়ে খুবই চিন্তিত চাকরিপ্রার্থীদের একাংশ। যদি নিয়োগ না হয় তাহলে আবেদনকারীদের টাকা কি ফেরত দেবে রেল? সেই বিষয়েও চাকরিপ্রার্থীদের একাংশ প্রশ্ন তুলেছেন।